শেখ মোঃ রাসেল টেকনাফ
লেখক, হাবিবুল কবির।
আজকাল কেমন যেন হয়ে গেছে আমেনা। সারাদিন অন্যমনস্ক হয়ে বসে থাকে আর ভাবে। এদিকে রুবেল আর নিয়মিত আসে না,লাল মিয়ার আনাগোনাও কমে গেছে। তাই " অন্ধকার বিদিশার দিশা" আজ তার নিত্যসঙ্গী।
প্রায় পাঁচ বছর আগের কথা, আশরাফ আলি নামক একজন সমাজ সেবক ' মোহমুক্তি ' নামে একটি সামাজিক প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলে তুলেন। রহমান মির্জা শুরু থেকেই অত্যন্ত নিষ্ঠার সাথে প্রতিষ্ঠান প্রধান হিসেবে কাজ কর্ম সুষ্ঠু ভাবে সম্পাদন করেন। কিন্তু তার কর্মদক্ষতা ও সুনাম অধঃস্তন কর্মচারী বিশেষত রুবেল মন্ডল ও লাল মিয়ার কাছে বিষফোঁড়ার মত। আমেনা প্রথমে 'বাফার স্টেট' ছিল, পরে আষাঢ়ের আকাশের মত নিমেষেই বদলে গেল। রুবেল মন্ডল মহাবশীকরণ বীণ বাজিয়ে তাকে কুপোকাত করে দিল। লাল মিয়া, রুবেল মন্ডল ও আমেনা বিবি পরস্পর সমবাহু ত্রিভুজের মত নিরপরাধ রহমান মির্জার বিপক্ষে অভেদ্য পিরামিড রূপে দাঁড়াল। এ যেন নবাবের বিরুদ্ধে মিরজাফরের ষড়যন্ত্র...।
রহমান মির্জার আপ্রাণ চেষ্টায় ' মোহমুক্তি ' একটি ব্যতিক্রমধর্মী প্রতিষ্ঠান হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। সুশীল মানুষের কাছে তিনি হয়ে ওঠেন অনুসরণীয় আদর্শ।
আমেনা বিবি, রুবেল মন্ডল ও লাল মিয়া স্বার্থের কারণে আজ অন্ধ হয়ে গেছে। আসলে তারা পরশ্রীকাতর তাই রহমান সাহেবর সুনাম তারা সহ্য করতে পারে না কিছুতেই। প্রথম প্রথম লাল মিয়ার বাংলোতে গোপন বৈঠক বসলেও, এখন বীজ গণিতের দ্বিঘাত সমীকরণের মত 'অঙ্কদ্বয় স্থান পরিবর্তন করিল'। এখন রুবেল মন্ডলের তিনতলার ব্যাচেলর বাসাতেই ষড়যন্ত্রের কঠিন সমীকরণ অনায়াসে মিলে যায়। তাছাড়া নিচতলার আমেনা বিবিও নিয়মিত যোগদেন বিশেষ অতিথি হিসেবে। কারণ আমেনা বিবি ' হাজার বছর ধরে পথ হাঁটিতেছেন' রুবেল মন্ডল নির্দেশিত পথে...
অবশেষে "সব পাখি ঘরে আসে, সব নদী ফুরোয় , এ জীবনের সব লেনদেন "। আশরাফ সাহেব তিন নিন্দুকের কথা অমোঘ সত্য মেনে নিয়ে রহমান মির্জাকে অব্যাহতি দিলেন ( চলে যায় যদি কেউ বাঁধন ছিঁড়ে...)
হাতে গড়া প্রতিষ্ঠানের সকল মায়া ছিন্ন করে রহমান সাহেব ঢাকা চলে গেলেন। মোহমুক্তিতে এখন শুধু লালমিয়ার দৌরাত্ম্য, রুবেল মন্ডলের রাজত্ব এবং সর্বোপরি আমেনা বিবির কর্তৃত্ব। আশরাফ সাহেবের প্রতিষ্ঠিত সামাজিক প্রতিষ্ঠানে এখন রুবেল মন্ডল অসামাজিক কাজ করে নিঃসঙ্কোচে, আর লাল মিয়া ঢোল তবলা বাজায়। রুবেল গান গায় আর আমেনা তন্ময় হয়ে শুনে...( তুমি ফুল আমি অলি/ অলি চিনে ফুলের কলি.... মাটির বুকে বৃক্ষ থাকে/ তেমনি তুমি আমার বুকে গো.../ নিশি নির্জনে / বসে দুজনে.....)
গান শুনে আমেনা বিবির সরল মন মুহূর্তেই তরল রূপ ধারণ করে। তাছাড়া আগের " incoming & outgoing" এর কারণে দুজনেই সমান্তরাল বাহুর মত ছিল অনেকদিন।
রুবেলকে নিয়ে হাজারো স্বপ্ন দেখে আমেনা,দুজন পাশাপাশি বসে.... কাছাকাছি থাকে। রুবেল নিজের পশুত্বকে আড়াল করে মহত্ত্ব ই প্রকাশ করেছে তার কাছে। আর তাই চতুর্বিংশতি আমেনা পঞ্চত্রিংশোত্তর রুবেলের পাণিপ্রার্থী।
উপদেষ্টা সম্পাদক : জহির আহমদ, টেকনাফ উপজেলা বীর মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার।
অফিস : আবু সিদ্দিক মার্কেট, টেকনাফ, কক্সবাজার।
মোবাইল : ০১৯০৭-৭৫৮২৫০, ০১৮৫১-৯২৯৬৫৮
Developed By : AzadWebIT.Com