জুবাইরুল ইসলাম জুয়েল,টেকনাফ ৭১
চকরিয়ায় বাড়িতে আইসোলেশনে থেকে চিকিৎসা নিয়ে মাত্র ১০ দিনেই করোনাকে জয় করলেন মুয়াজ্জিনসহ তিন যুবক। তারা এখন পুরোপুরি সুস্থ হয়ে উঠেছেন। বৃহস্পতিবার তাদেরকে চকরিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের তত্ববধায় ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা.মোহাম্মদ শাহবাজ ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।
করোনা জয়ী তিনজন হলেন- চকরিয়া উপজেলা মসজিদের মুয়াজ্জিন মো.নোমান শিবলী (৪৫), চকরিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্টাফ দীপক কুমার মল্লিক( ২৫) ও সাহারবিল ইউনিয়নের তৌহিদুল ইসলাম রাকিব (২৩)।
চকরিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্মকর্তা আমির হামজা বলেন, চলতি মাসের ২ মে ওই তিন যুবকের করোনা পরীক্ষার জন্য নমুনা সংগ্রহ করা হয়। পরে ৪ মে তাদের করোনা পজিটিভ রিপোর্ট আসে। এরপর থেকে তারা হাসপাতালের পরিবর্তে বাড়িয়ে আইসোলেশনে চিকিৎসা নেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়।
করোনা জয়ী মসজিদের মুয়াজ্জিন মো.নোমান শিবলী বলেন, ৪ মে আমিসহ পরিবারের সবাই করোনার টেষ্ট করাই। তবে পরিবারের অন্য সদস্যদের নেগেটিভ আসলেও আমার পজিটিভ আসে। প্রথমে আমি খুব চিন্তিত হয়ে পড়ি। পরে ডাক্তারের সাথে কথা বলার পর মনে সাহস চলে। এই সাহসেই মুলত করোনা জয়ের হাতিয়ার। আক্রান্ত হয়ে মনোবল আরো শক্ত করতে হবে। আমি ডাক্তারকে বাড়িতে আইসোলেশনে থেকে চিকিৎসার কথা জানায়। ডাক্তার এতে সম্মতি দেন।
আইসোলেশনে চিকিৎসার বিষয়ে তিনি বলেন, পজিটিভ রেজাল্ট আসার পরও আমার কোন লক্ষণ ছিলোনা। তারপরও আমি কিছু নিয়ম মেনে চলেছি। এই ১০ দিনের মধ্যে আমি এক সেকেন্ডের জন্য রুম থেকে বের হয়নি। ওই রুমেই সব কিছু করেছি। সবসময় মুখে মাস্ক ও হাতে গ্লাভস পড়ে থেকেছি। সবসময় রুম পরিস্কার রেখেছি।
তিনি আরো বলেন, আমি প্রতিদিন অন্তত ১০-১৫ বার করে গরম পানির ভাপ নিতাম। গরম পানির মধ্যে লেবু কেটে টুকরা টুকরা করে দিতাম। এতে রসুনের খোয়া, আদা বাটা, দারচিনি, এলাচি, লবঙ্গ, তেজপাতা, সরিষার তেল দিতাম। এরপর সবগুলো একসাথে করে পানি গরম করতাম। পানি গরম হওয়ার পর নাক ও মুখ দিয়ে পানির বাপ নিতাম। যতক্ষণ পারা যায় ততক্ষণ পর্যন্ত। এরপর ওই পানি গড়াগড়া করে খেতাম। এভাবে দিনে অন্তত ১০-১২ বার করতাম। এছাড়া চিমটি পরিমাণ কালোজিয়া এবং এক চামুচ মধু খেতাম।
এছাড়া ডাক্তাররা আমাকে বেশ কয়েক প্রকারের ওষুধ দিয়েছিলো ওইসব খেয়েছি। ওই ওষুধগুলোর মধ্যে ছিলো- প্যারাসিটামল, ভিটামিন-সি, ভিটামিন-ডি,ভিটামিন-বি, জিং ট্যাবলেট, ডক্সাসাইকিèন, সিটিরাজিন ট্যাবলেট, হাইড্রোক্লোরোকুইন এবং গ্যাস্টিকের ট্যাবলেট।
আল্লাহের অশেষ মেহেরবানি এবং সকলের দোয়ায় আমি সুস্থ হয়ে উঠেছি। অপ্রয়োজনে বাড়ির বাইনে বের না হওয়ায় ভালো। এছাড়া ডাক্তারা আমাকে যেভাবে সহযোগিতা করেছেন তা ভুলবার নয়। আমি তাদের কাছে কৃতজ্ঞ। তাছাড়া আক্রান্ত দীপক ও রাকিব বাড়িতে একই উপায়ে চিকিৎসা নিয়েছেন বলেন জানিয়েছে।
চকরিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের প:প কর্মকর্তা ডা.মোহাম্মদ শাহবাজ বলেন, চকরিয়ায় ইতোমধ্যে ৩৬ জন করোনা আক্রান্ত রোগি পাওয়া গেছে। তাদের মধ্যে ৯ জন রোগি বাড়িতে চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হয়েছেন। এছাড়া বর্তমানে হাসপাতালে ১৩ জন এবং বাড়িতে ১৪ জন রোগি চিকিৎসা নিচ্ছেন। আগামী কয়েকদিনের মধ্যে বেশ কিছু রোগি সুস্থ হয়ে উঠবে বলে আশা করছি।
তিনি আরও বলেন, এই রোগের অন্যতম চিকিৎসা হচ্ছে সবসময় মুখে মাস্ক পড়তে হবে। সামাজিক দুরুত্ব অবশ্যই মেনে চলতে হবে। শরীরে যাতে রোগি প্রতিরোধ ক্ষমতা সেজন্য প্রচুর পরিমাণে জিং এবং ভিটামিন সি জাতীয় খাবার খেতে হবে।
উপদেষ্টা সম্পাদক : জহির আহমদ, টেকনাফ উপজেলা বীর মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার।
অফিস : আবু সিদ্দিক মার্কেট, টেকনাফ, কক্সবাজার।
মোবাইল : ০১৯০৭-৭৫৮২৫০, ০১৮৫১-৯২৯৬৫৮
Developed By : AzadWebIT.Com