বিশেষ প্রতিনিধি::
সীমান্ত জেলার কক্সবাজারের ৮ থানার একটি হচ্ছে টেকনাফ মডেল থানা। সাধারনত সবাই জানি প্রশাসনিক থানার বাহিরে আর কোন থানা বা ফাঁড়ি নেই। আইনশৃংখলা বাহিনীর একান্ত প্রয়োজনে সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের অনুমতি সাপেক্ষে পুলিশ ফাঁড়ির ব্যবস্থা থাকতে পারে। কিন্তু টেকনাফ থানা ছিল এর উল্টো। প্রশাসনিক থানা ও ফাঁড়ির বাহিরে ছিল কারাবন্ধী ওসি প্রদীপের টর্সাল সেল, যাকে ওই এলাকার মানুষ প্রদীপ থানা হিসাবে বলে। এমন একটি টর্চাল সেলের সন্ধান পাওয়া যায়। যে টি টেকনাফ সদর ইউনয়নের নাজির পাড়া গ্রামের নুর মোহাম্মদের বাড়ী। ওই বাড়ীর মালিক নুর মোহাম্মদও পুলিশের কথিত বন্দুক যুদ্ধে নিহত হয়েছিল। পুলিশ বাড়ীটি আটক আসামীদের টর্সাল সেল ও মুক্তিপণ আদায়ের নিরাপদ আস্তানা হিসাবে ব্যবহার করতো বলে স্থানীয়দের ধারনা।
সেনা বাহিনীর মেজর (অবঃ) সিন্হা মোহাম্মদ রাশেদ খাঁন পুলিশের গুলিতে নিহতের পর এসব তথ্য বেরিয়ে আসছে।
এমন একটি টর্চাল সেলের খবর পেয়ে ১০ আগষ্ট (সোমবার) বিকালে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বাড়িটি একদম ফাঁকা পরিত্যাক্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছে। সেখানে পুলিশের পুরাতন পোষাক, পুলিশের জুতা, থানার ডায়েরী খাতা ও অলিখিত চেক, মদের বোতল এলোমেলো ভাবে পড়ে থাকতে দেখা যায়।
পরে স্থানীয়দের মাধ্যমে খোঁজ করে নুর মোহাম্মদের মায়ের কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে বলেন, কয়েক মাস পূর্বে পুলিশ তাদের মারধর করে বাড়ী হতে এক কাপড়ে বের করে দেয়। এর পর হতে বাড়ীটি পুলিশের দখলে ছিল। প্রায় সময় পুলিশ সেখানে এসে আড্ডা দিত। অপরিচিত সুন্দরী নারীদের আনাগুনা দেখা যেত প্রায় সময়। এর পরও পুলিশের নির্যাতনের ভয়ে কেই মুখ খোলত না।
বাড়ীর মালিক নিহত নুর মোহাম্মদ এর স্ত্রী লায়লা বেগম সাংবাদিকদের বলেন, আমার স্বামী একজন মুদির দোকানদার ছিল। হঠাৎ একদিন পুলিশ এসে আমার স্বামীকে দোকান হতে তুলে নিয়ে যায়। তাকে ছেড়ে দেওয়ার কথা বলে ৪০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবী করে। নিরুপায় হয়ে স্বামীর জীবন বাঁচাতে স্বর্ণের গহনা বিক্রি ও আত্বীয় স্বজনের নিকট হতে কর্জ করে ৩ লাখ টাকা পুলিশের হাতে প্রদান করি। এর পর দাবীকৃত সর্ম্পুর্ন টাকা দিতে ব্যার্থ হওয়ায় ওসি প্রদিীপ এর নির্দেশে আমার স্বামীকে গুলি করে হত্যা করে । আমি অবুঝ ৩ কন্যা সন্তানদের নিয়ে বসত বাড়ী ছেড়ে অন্যের বাড়ীতে অবস্থান করতে হচ্ছে। আমার নিরপরাধ স্বামী হত্যা ও বাড়ীটি ফেরত পেতে উর্ধত্বনমহলের দৃষ্টি কামনা করছি।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক ব্যক্তি জানান, গভীর রাতে পুলিশের দখলে নেওয়া ওই বাড়ী হতে মানুষের আর্ত্মচিৎকারের আওয়াজ ভেসে আসত। মানুষের চিৎকারের আওয়াজ শুনে মানুষ ভয়ে নির্ঘুম রাত কাটাতো।
টেকনাফ মডেল থানার অপারেশন অফিসার রাকিবুল ইসলাম জানান, এটি মাদক কারবারীর বাড়ী। আদালতের নির্দেশে বাড়ীটি খালি করে রাখা হয়েছে।
এ বিষয়ে টেকনাফ মডেল থানার নবাগত অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ আবুল ফয়সল কে এ বিষয়ে অবগত করা হলে বলেন, আমি মাত্র জয়েন্ট করেছি। এটিই খুবই দুঃখজনক। বিষয়টি খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
টেকনাফ মডেল থানার অপারেশন অফিসার রাকিবুল ইসলাম জানান, এটি মাদক কারবারীর বাড়ী। আদালতের নির্দেশনায় সেখানে পুলিশ নিরাপত্তার জন্য অবস্থান করছিল।
উপদেষ্টা সম্পাদক : জহির আহমদ, টেকনাফ উপজেলা বীর মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার।
অফিস : আবু সিদ্দিক মার্কেট, টেকনাফ, কক্সবাজার।
মোবাইল : ০১৯০৭-৭৫৮২৫০, ০১৮৫১-৯২৯৬৫৮
Developed By : AzadWebIT.Com