টেকনাফ উপজেলার শাহপরীরদ্বীপের নৌকার ত্যাগী কান্ডারী ছিলেন, যুবলীগের সাবেক সভাপতি আব্দুল হক। বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে বুকে ধারণ করে এক ত্যাগী নেতা হ্দরোগের মধ্য দিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছে বলা হচ্ছে, টেকনাফ উপজেলার অন্তর্গত শাহপরীরদ্বীপের এক সময়ের দুর্দিনে আওয়ামী যুবলীগ আব্দুল হকের কথা। শাহ পরীর দ্বীপ ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি ছিলেন তিনি। তাকে সকলে হক সাহেব নামে চিনে। পিতা মৃত হাজী আলী হোছাইন ও মাতা নাছিমা খাতুন। দলের দুঃসময়ে পার্শ্বে থাকা নৌকার এই ত্যাগী কান্ডারী বর্তমানে মানবেতর জীবনযাপন করছেন। সম্প্রতি তার সাথে কথা হয় সাংবাদিকদের। পাঠকের জন্য সাক্ষাৎকারটি হুবহু তুলে ধরা হল: আপনার পরিবারে কে কে আছে? আমার পরিবারের ৭ জন সদস্য আছে। আপনি কর্মজীবনে কি কি করতেন? আমার কর্মজীবনে ব্যবসা ছিল কিন্তু কিছু কুচক্রীমহলের কারণে আমি সফল হতে পারিনি উল্টো ব্যবসায় কোটি কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি সাধন হয়েছে। আর আমি ১৯৯৫ সালে কর্মজীবনে আসছি। শুরুতে বেকার ছিলাম। কুচক্রীমহলের চক্রান্তে পড়ে আমি জীবন যুদ্ধে নেমে গিয়েছিলাম। তাতে এক পর্যায়ে আমি অসহায় হয়ে পড়ি। আপনার আব্বা কি করতেন? আমার বাবা সততার সাথে ব্যবসা পরিচালনা করতেন। সাথে তার নিজস্ব বোট ছিল ২৪টি। কিন্তু দীর্ঘ ১৫ বছর আগে আব্বা মারা যায়। আপনি কত সালে রাজনীতি শুরু করেন? আমি ২০০০ সালে রাজনীতি শুরু করি। পরে ২০০১ সাল থেকে ২০০৩ সাল পর্যন্ত কেউ না থাকার কারণে আমি নিজের খরচে চা খরচ থেকে শুরু করে সবকিছু চালায়ছি। তখন আমি ষড়যন্ত্রমূলক মিথ্যা মামলা খেয়েছিলাম ৪টি। এ মামলা ২০০৪ সালে খালাস হয়ে যায়। এছাড়া রাজনীতি শুরুর আগে আমি ১৯৯১ সালে ৮/৯ টি মিথ্যা মামলায় আসামী হয়। পরে ১৯৯৪ সালে গিয়ে ওই মামলাগুলোও খালাস হয়ে যায়। পরে ২০০৭ সালে এসে যৌথবাহিনীর হাতে গ্রেফতার হয় আমি। পরে ৬ মাস কারাভোগের পর মহামান্য হাইকোর্ট থেকে জামিন পেয়ে আমি এ মামলা থেকেও অব্যাহতি পায়। আপনি দায়িত্ব পালনকালীন কিভাবে ষড়যন্ত্রের শিকার হন? আমি একটানা সুনাম ও সততার সহিত দায়িত্ব পালন করি ২০০০-২০১৩ সাল পর্যন্ত। পরে কেউ কেউ ষড়যন্ত্র করে আমাকে আমার অজান্তেই কমিটি থেকে বাদ দিয়ে দেয়। কারণ, আমার কারণে অনেকে অবৈধ সুযোগ নিতে না পারায় আমাকে নিয়ে এত ষড়যন্ত্র। আর আমি শাহ পরীর দ্বীপ ইউনিয়ন যুবলীগের দায়িত্বে থাকাকালীন অনেক পেপার ও ডকুমেন্টস আমার হাতে সংরক্ষিত আছে। আমি দলের সকল কর্মকাণ্ড গুরুত্ব দিয়ে সততার সহিত পালন করতাম। নিজের খরচে মিটিং মিছিল করার পাশাপাশি সকলের আপ্যায়ন খরচও চালাতাম। আপনি দলের জন্য অনেককিছু করার পরেও কি কারণে দল থেকে সরে গেলেন বা আরও গুরুত্বপূর্ণ কোন পদ পাননাই কেন? আমি হলাম একজন ত্যাগী আওয়ামী যুবলীগ নেতা। আমি ২০১১-১২ সালে ইয়াবা মানবপাচার প্রতিরোধ ও অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতাম যে ওই কার্যক্রমগুলো টেকনাফের সিনিয়র সাংবাদিকবৃন্দ অবগত ছিল। পরে আমি ২০১২ সালে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ইমেইলের মাধ্যমে ইয়াবা ও মানবপাচার বিষয়ে কিছু গুরুত্বপূর্ণ মেসেজ পাঠালে আমাকে ধন্যবাদ দেন। আমাকে বাদ দিয়ে শাহ পরীর দ্বীপে নতুন কমিটি ঘোষণা দেওয়ায় ১লা নভেম্বর’১৩ ইং শাহপরীরদ্বীপে নবগঠিত যুবলীগের কমিটি প্রত্যাখ্যান ও যুবলীগ নেতাদের পক্ষে বিবৃতি দেওয়ার উপরে একটি নিউজ কক্সবাজার থেকে প্রকাশিত দৈনিক দৈনন্দিন পেপারে বিশাল আকারে প্রকাশিত হয় যে পেপার ডকুমেন্টস আমার হাতে আছে। পরে ৩রা নভেম্বর’১৩ ইংরেজিতে আমার নিজের মতামতের উপরে আরো একটি নিউজ কক্সবাজার থেকে প্রকাশিত দৈনিক দৈনন্দিন পেপারে প্রকাশিত হয়। সেই শিরোনাম ছিল, শাহ পরীর দ্বীপের যুবলীগ কমিটির দীর্ঘ সময়ের সফল সভাপতি আব্দুল হকের কিছু কথা। দলের জন্য আপনি কি কি করেছেন? আমি দলের সকল কর্মসূচি আন্তরিকতার সহিত পালন করতাম। আমি দায়িত্বে থাকার সময় দলের জন্য যে ত্যাগ দিয়েছি তা তৎকালীন দায়িত্বে থাকা দলের লোকজনের সাথে কথা বললে সত্যতা মিলবে। এছাড়াও ২০০২ সালে বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ ২৩, বঙ্গবন্ধু এভিনিউ ঢাকা দলীয় কার্য্যালয় থেকে যুবলীগের সকলের জন্য ২টা করে ফরম পাঠায়। পরে সে ফরম র্পূরণ করে ঢাকা পাঠালে তৎকালীন বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক মির্জা আজম এমপির পক্ষ থেকে সদস্য পদ নবায়নের কার্ড চলে আসে। যা আমার কাছে প্রমাণস্বরূপ সংরক্ষিত আছে। এছাড়াও ২০০৪ সালে বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ যুবলীগ ছাত্রলীগ, অঙ্গসংগঠনের পক্ষ থেকে সাবেক এমপি অধ্যাপক মোহাম্মদ আলীর উপস্থিতিতে বিশাল আয়োজনে আমাকে বিশেষ সম্মানে সম্মাননা করেছিলেন। আপনার এখন কি অবস্থা? এক সময় দলের জন্য অনেক কিছু ত্যাগ করেও আমি এখন কষ্টে আছি। মানবেতর জীবনযাপন করছি। আমি এখন সীমাহীন অসুস্থ আছি। কখন যে মরে যায় তারও ঠিক ঠিকানা নাই। ডাক্তার বলছে আমার হার্টে জটিল সমস্যা। সকলে আমার জন্য দোয়া করবেন। আপনি দলীয় লোক হয়েও কোন সুযোগ সুবিধাদি পেয়েছেন কিনা? না, কোন সুবিধা পাচ্ছিনা। সুবিধা পাওয়া ত দূরের কথা। আমার আরো উল্টো কোটি কোটি টাকার ক্ষতি সাধন হয়েছে। যা আপনারা সাংবাদিকরা তদন্ত করলে সত্যতা পাওয়া যাবে। আসলে আপনার মূল চাওয়াটা কি? আমি জেলেদের জেলে কার্ড ও সুবিধাদি দেওয়ার দাবী নিয়ে, ইয়াবা ও মানবপাচার নির্মূলের দাবী নিয়ে, ত্যাগী নেতাদের মূল্যায়নের দাবী নিয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বরাবর সুদৃষ্টি দিতে জোর দাবী জানাচ্ছি। পাশাপাশি তিনি বলেন, আমি আজীবন ষড়যন্ত্রের শিকার। তারপরেও আমি মৃত্যুর আগপর্যন্ত অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করে যাব। এ ব্যাপারে আমি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীসহ পুরো প্রশাসনের সহযোগিতা কামনা করছি। পাশাপাশি দেশ ও দলের সেবা করাই হল আমার মূল কাজ। আপনি প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিকস মিডিয়ার মাধ্যমে কার সহযোগিতা কামনা করেন? আমি প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিকস মিডিয়ার মাধ্যমে বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের সম্মানিত সভাপতি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার জরুরী সহযোগিতা কামনা করে ওনার সাথে দেখা করতে অধীর আগ্রহে ইচ্ছুক হয়ে অপেক্ষায় আছি। কারণ যদি আল্লাহর হুকুমে দেখা করার সুযোগ হয় তখন আমি আওয়ামীলীগের স্বার্থে কয়েকটি বিষয়ে অবহিত করা হবে!
উপদেষ্টা সম্পাদক : জহির আহমদ, টেকনাফ উপজেলা বীর মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার।
অফিস : আবু সিদ্দিক মার্কেট, টেকনাফ, কক্সবাজার।
মোবাইল : ০১৯০৭-৭৫৮২৫০, ০১৮৫১-৯২৯৬৫৮
Developed By : AzadWebIT.Com