ডেস্ক টেকনাফ ৭১
টেকনাফে ঈদুল আজহা সামনে রেখে আলোর পাঠশালার ২০৪ জন শিক্ষক-কর্মচারী ও শিক্ষার্থীর মধ্যে খাদ্যপণ্য ও ঈদ উপহার সামগ্রী বিতরণ করা হয়েছে। আজ শনিবার বেলা একটার দিকে প্রথম আলো ট্রাস্টের উদ্যোগে ও সামিট গ্রুপের সহযোগিতায় এসব উপহার সামগ্রী দেওয়া হয়। ইপহার সামগ্রী নিতে সকাল থেকে উপজেলার হ্নীলা ইউনিয়নের দমদমিয়া বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় আলোর পাঠশালা মাঠে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে এবং মাস্ক পরিধান করে শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকেরা জড়ো হন। খাদ্যসামগ্রী নিতে এ সময় উপস্থিত হয়েছিলেন পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী হামিদ হোসেনের পক্ষে তার মা লায়লা বেগম। উপহার সামগ্রীর প্যাকেট হাতে পেয়ে লায়লা বেগম বলেন, ছেলেকে স্কুলে ভর্তি করানোর পর এখন পর্যন্ত পঞ্চম শ্রেণিতে কোনো ক্লাস করতে পারেনি। তবে শিক্ষকেরা বাড়িতে গিয়ে প্রতি সপ্তাহে খোঁজখবর নিচ্ছেন, নির্দেশনা দিচ্ছেন। টেকনাফের কোনো স্কুল এখন খোলা নেই। শিক্ষার্থীদের লেখাপড়া বন্ধ। এর মধ্যে কিছুটা হলেও আলোর পাঠশালার শিক্ষার্থীরা ঘরে বসে লেখাপড়া করছে। তার জন্য বাড়তি কোনো টাকাও দিতে হচ্ছে না। এর মাঝে কয়েক দফায় খাদ্যসামগ্রী দিয়ে শিক্ষার্থীদের পরিবারের পাশে দাঁড়িয়েছে প্রথম আলো। তিনি বলেন, ‘খবর কেউ রাখুক না রাখুক, তবে আপনারা ঠিকই রাখছেন। প্রথম আলো ট্রাস্টের উদ্যোগে ও সামিট গ্রুপের সহযোগিতায় কক্সবাজারের টেকনাফে আলোর পাঠশালায় বিতরণের জন্য রাখা হয় খাদ্যপণ্য ও ঈদ উপহারসামগ্রী। তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী জুলেখা খাতুনের বাবা আমির হোসেন উপহার পেয়ে বলেন, এ মহামারিতে যখন মানুষ বিপর্যস্ত এবং কর্মহীন হয়ে পড়েছেন, ঠিক তখনই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের পেটের খবর রাখল প্রথম আলো ট্রাস্ট। এ করোনাকালে তারা দফায় দফায় খাদ্যসামগ্রী ও ঈদের উপহারসামগ্রী দিয়ে বিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মচারী ও শিক্ষার্থীদের পাশে দাঁড়াচ্ছি। শিক্ষক কর্মচারী শিক্ষার্থীসহ ২০৪ জনের মাঝে আতপ চাল, সেমাই, চিনি ও দুধের প্যাকেটসহ জনপ্রতি একটি প্যাকেটে কোরবানির ঈদ উপলক্ষে উপহার সামগ্রী দেওয়া হয়েছে। এ সময় উপস্থিত ছিলেন প্রথম আলোর টেকনাফ প্রতিনিধি গিয়াস উদ্দিন, বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক বাবুল ইসলাম, শিক্ষক মিলাদুন্নবী, রবিউল আলম, অভিভাবক আমির হোসেন, আজিজুর রহমান প্রমুখ।
প্রথম শ্রেণির শিক্ষার্থী শাহেদুল আলম এসেছিল তার মা রোকিয়া বেগমের হাত ধরে। এর মধ্যে খাদ্যসামগ্রী নিতে আসার বাইরে আর কখনো বিদ্যালয়ে আসা হয়নি তার। রোকিয়া বেগম বলেন, তাঁর স্বামী রহিম উল্লাহ বেকার জীবন যাপন করছেন। মাঝেমধ্যে জাল নিয়ে নাফ নদীর খালে মাছ ধরতে যান। যে কটা মাছ পান, তা দিয়ে কোনোরকমে সংসার চলে। এর মধ্যে প্রথম আলো ট্রাস্টের দেওয়া খাদ্যসামগ্রী পেয়ে পরিবারের সবাই খুবই আনন্দিত বলে জানান।
তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী রিয়াজ মাহমুদ এসেছিল মা ফরিদা বেগমের সঙ্গে। রিয়াজের বাবা আজিজুর রহমান দিনমজুর। করোনা পরিস্থিতির কারণে পরিবারটির আয়-রোজগার থেমে গেছে। ছেলেমেয়েসহ সাতজনের সংসার চালাতে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছেন। চক্ষুলজ্জায় কারও কাছে কিছু বলতেও পারেন না। এমন সময় ঈদের খাদ্যসামগ্রী পেলেন। এ দিয়ে অন্তত এক সপ্তাহ দুমুঠো ভাত খেতে পারবেন বলে জানালেন ফরিদা বেগম। আলোর পাঠশালাটির ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক বাবুল ইসলাম বলেন, প্রথম আলো ট্রাস্ট এ অবহেলিত গ্রামের বিদ্যালয়টির দায়িত্বভার নেওয়ার পর থেকে শিক্ষার্থী ও শিক্ষকেরা দফায় দফায় খাদ্য সামগ্রী পাচ্ছেন। অন্ধকার এলাকায় আলো ছড়াচ্ছে প্রথম আলো বলে তিনি জানান।
উপদেষ্টা সম্পাদক : জহির আহমদ, টেকনাফ উপজেলা বীর মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার।
অফিস : আবু সিদ্দিক মার্কেট, টেকনাফ, কক্সবাজার।
মোবাইল : ০১৯০৭-৭৫৮২৫০, ০১৮৫১-৯২৯৬৫৮
Developed By : AzadWebIT.Com