আবুল কালাম আজাদ/মোঃ আরাফাত সানী ::টেকনাফ
সীমান্ত উপজেলা কক্সবাজার-টেকনাফ প্রধান সড়কের মরিচ্যার বিজিবি চেকপোস্টে স্বর্ণের বার নিয়ে দুই পাচারকারী আটক হলেও স্বর্ণের মূল মালিক টেকনাফ পৌর সভার লামার বাজারের রিপন স্টোরের মালিক মামলার পলাতক আসামি রিপন পাল গা ঢাকা দিলেও তার সহযোগী ও আপন ভগ্নিপতি আরেক রিপন কান্তি পাল ও সুজন কান্তি পাল বহাল তবিয়তে থেকে ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে।
গত (১৯ আগষ্ট) টেকনাফ থেকে কক্সবাজার গামী একটি সিএনজিতে বিজিবি’র জওয়ানেরা মরিচ্যা চেকপোস্ট তল্লাশি চালিয়ে ৬ টি স্বর্ণের বার প্রায় ১ কেজি, যার বাজার মূল্য প্রায় ৬০ লাখ টাকা বলে বিজিবি সুত্রে জানা যায়।
আটককৃতরা হলেন, কক্সবাজারের বালুখালী ঘুনার পাড়া ও স্থায়ী ঠিকানা ঢাকা সাভার থানার আশুলিয়া এলাকার মোঃ হাছনের ছেলে মোঃ নুরুল আবছার খোকন (৩২) ও সিএনজি চালক টেকনাফের বাহারছড়া জাহাজপুরা এলাকার কুতুব উদ্দিনের ছেলে মুহাম্মদ মাইন উদ্দিন (৩৪) কে স্বর্ণের বার সহ আটক করে বিজিবি।
আটককৃত আসামিদের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী স্বর্ণের বারের পৃথক মালিক টেকনাফ পৌর সভার চৌধুরী পাড়া প্রদুল পালের ছেলে রিপন পাল তার নিকট মালামালের বৈধ কাগজ পত্র আছে মর্মে পরবর্তীতে বিজিবি রিপন পালের মুঠোফোনে আটকৃত স্বর্ণের ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করা হলে সে মালিকানা প্রত্যাখ্যান করিলে প্রকৃত স্বর্ণের মালিক হিসেবে রিপন পালকে মামলার পলাতক আসামি করা হয়।
উল্লেখ যে, এই পলাতক আসামি রিপন পাল ১০/১৫ বছর পূর্বে তার পিতা প্রদুল পালের হাত ধরে চট্টগ্রাম জেলার সাতকানিয়া উপজেলার পদুয়া তেরির হাট এলাকা থেকে টেকনাফ পৌর সভার লামার বাজারের মৃত মোজাহার কোম্পানির মার্কেটে এসে একটি দোকান ভাড়া নেই। ঐ দোকানে বসে মিয়ানমারের ট্রানজিট হয়ে আসা বিভিন্ন বার্মিজ পণ্য বেচা-কেনা করতো এভাবে ৫/৬ বছর পর সু-চতুর রিপন পাল অপরাধ জগতে পা দিয়ে দিন দিন আঙুল ফুলে কলাগাছ হতে থাকে এ মধ্যেই সে ইয়াবা, স্বর্ণ, আইস সহ মাদক ব্যবসা চোরাচালান নিরাপদ ও নিবির্গ্নে চালানোর জন্য টেকনাফ পৌর সভার বিভিন্ন মার্কেটে দোকান নেন। এর মধ্যে রয়েছে লামার বাজার মোজাহের কোম্পানি মার্কেটে ৩ টি, নবনির্মিত বদি মার্কেটে ২ টি হোটেল দ্বী প্লাজায় ৪টি ও উখিয়া উপজেলার বালুখালীর রোহিঙ্গা শিবির এলাকায় ৩টি দোকান রয়েছে বলে তার নিকটতম আত্মীয় সূত্রে জানা যায়। তার মূল চেম্বার ছিল রিপন স্টোর লামার বাজার।
ও খানেই বসে সকল অপরাধ জগতের মোবাইল ফোনের মাধ্যমে ব্যবসা নিযন্ত্রণ করতো বলে স্থানীয় মার্কেটের লোকজন জানান। এ ইয়াবা, স্বর্ণ, আইস ব্যবসা আড়াল করার জন্য নামে মাত্র তার রিপন স্টোরে কয়েকটি মোবাইল, সিম, বিকাশ ও কিছু বার্মিজ পণ্য সাজিয়ে রাখতেন। এবং তার অবৈধ ব্যবস্যা আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর চোখ ফাঁকি দিয়ে দাপটের সাথে স্থানীয় কিছু প্রভাবশালী মহলকে মাসিক মাসোহারা দিত বলে উক্ত মার্কেটের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন ব্যবসায়ী জানান। ফলে অনেকেই তার কাছে ব্যবসায়িক লেনদেনের টাকা খুঁজতে গিয়ে ঐ প্রভাবশালী মহলের সাথে লাঞ্চিত হয়েছে বলে ব্যবসায়ীরা জানান। রিপন পাল মামলার আসামি হওয়ায় কিছু দোকানদার বন্ধ থাকলেও হোটেল দ্বীপ প্লাজার জি বি এল এন্টারপ্রাইজ নামক মোবাইলের দোকানটি তার নিকটতম আত্মীয় দোকানটি চালিয়ে যাচ্ছে তার ভঙ্গিপতি রিপন কান্তি পাল ও সুজন কান্তি পাল এদেরকে আইনের আওতায় আনা হলে রিপন পালের অপরাধ জগতের মূল রহস্য বেরিয়ে আসবে বলে স্থানীয় সচেতন দোকানদার গণ জানান। এ পাশাপাশি তার চোরাচালান ব্যবসা গণ্ডির ভিতরে রাখার জন্য তার নিকটতম আত্মীয় এনে বিভিন্ন দোকানে বসিয়ে দিয়েছেন। এর মধ্যে রয়েছে তার আপন ভগ্নিপতি চট্টগ্রাম জেলার কোতোয়ালি থানা গোয়াল পাড়া এলাকার বাসিন্দা সুজন কান্তি পালের ছেলে রিপন কান্তি পাল যার ভোটার আইডি নং ১৫৯৪১২২০৩৩৪৩৭।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত মামলার আসামি রিপন পালের তার মুঠোফোনে বারবার যোগাযোগ করলেও মোবাইল রিসিভ না করায় বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
Leave a Reply