সংবাদ বিজ্ঞপ্তি,
৪৮ ঘন্টার রুদ্ধশ্বাস অভিযানে চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার জেলার বাঁশখালী, পেকুয়া ও কুতুবদিয়া এলাকা হতে কুখ্যাত ও দুর্র্ধর্ষ জলদস্যূ আজিজ বাহিনীর প্রধান ডাকাত আজিজ, কালু বাহিনীর প্রধান গুরা কালু এবং সাহাব উদ্দিন বাহিনীর প্রধান ডাকাত সাহাবসহ ০৮ জন জলদস্যু বিপুল পরিমাণ আগ্নেয়াস্ত্র ও গোলাবারুদসহ র্যাবের হাতে আটক; লুন্ঠিত জাল ও ০১ টি ট্রলার উদ্ধার করা হয়েছে।
কিছুদিন যাবৎ র্যাব-৭, চট্টগ্রাম বরাবর অভিযোগ আসছিলো যে, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারের উপকূলীয় অঞ্চলের জলদস্যু বাহিনী কিছু দিন গা ঢাকা দিয়ে থাকার পর সম্প্রতি তারা আবার পূর্বের ন্যায় সকল অপকর্ম এবং উপকূলীয় এলসাকায় বসবাসকারী সাধারণ লবনচাষী ও সাগরে জেলেদের উপর অত্যাচার, জুলুম, চাঁদাবাজি এবং অপহরণসহ সকল প্রকার অন্যায় কাজ পরিচালনা করছে৷
ভুক্তভোগীদের এরুপ অভিযোগের বিষয়টি র্যাব-৭, চট্টগ্রাম অত্যান্ত মানবিকতায় সহিত চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়ে উল্লেখিত এলাকায় ব্যাপক গোয়েন্দা নজরদারি অব্যহত রাখে৷ এরই প্রেক্ষিতে গত ১৩ মে ২০২২ খ্রি. থেকে ১৪ মে ২০২২ খ্রি. তারিখ বাঁশখালী, পেকুয়া, ও কুতুবদিয়ার উপকূলীয় অঞ্চলের স্থল ও সাগর পথে র্যাব-৭, চট্টগ্রাম এর একটি চৌকস আভিযানিক দল বর্ণিত এলাকায় দীর্ঘ ৪৮ ঘন্টার রুদ্ধশ্বাস একটি বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে আসামী ১। মোঃ কালু প্রকাশ গুরা কালু (৪০), পিতা-নুর হোসেন, সাং-পেয়ারাকাটা, থানা-কুতুবদিয়া, জেলা- কক্সবাজার ২। মোঃ আজিজুল হক অংক (৪৬), পিতা-মৃত আনসার উল করিম, সাং-করিয়ারদিয়া, থানা-পেকুয়া, জেলা-কক্সবাজার, ৩। সাহাব উদ্দিন (৪৭), পিতা-ইবনে আমিন প্রকাশ ইন্নমিন, সাং-পূর্ব তাবলরচর, থানা-কুতুবদিয়া, জেলা- কক্সবাজার, ৪। নুরুল বশর (৩২), পিতা-শাহআলম, সাং-দক্ষিন ধুরুং, থানা-কুতুবদিয়া, জেলা- কক্সবাজার, ৫। শহিদুল ইসলাম (২৮), পিতা-মৃত আব্দুছ ছালাম, সাং-মাইজঘোনা, থানা-চকরিয়া, জেলা- কক্সবাজার, ৬। নেজাম উদ্দিন (২৯), পিতা-মৃত বখতিয়ার উদ্দিন, সাং-রামপুর, থানা-চকরিয়া, জেলা- কক্সবাজার, ৭। ছলিম উল্লাহ প্রকাশ বাবুল (৫৫), পিতা-মৃত ছদর আহাম্মদ, সাং-পূর্ব তাবলর চর, থানা-কুতুবদিয়া, জেলা- কক্সবাজার এবং ৮। জিয়াবুল হক জিকু (৫০), পিতা-মৃত আনছার উল করিম, সাং-ছৈনাম্মার ঘোনা, থানা-চকরিয়া, জেলা- কক্সবাজার’দেরকে আটক করতে সক্ষম হয়। পরবর্তীতে উপস্থিত সাক্ষীদের সম্মুখে আটককৃত সকল আসামীদের জ্ঞাতসারে তাদের নিজ হেফাজতে থাকা কোমড় এবং প্লাস্টিকের বস্তার ভিতর হতে ০৩টি ওয়ান শুটারগান, ০১টি দুনলা বন্দুক, ০৩টি একনলা বন্দুক, ১১ রাউন্ড গুলি এবং ০৫টি দেশীও ধাড়ালো ছুরা উদ্ধারসহ আসামীদের গ্রেফতার করা হয়।
উল্লেখ্য যে, ধৃত ১নং আসামী মোঃ কালু প্রকাশ গুরা কাল এর বিরুদ্ধে কক্সবাজার জেলার কুতুবদিয়া থানায় অস্ত্র, ডাকাতি এবং মাদক সংক্রান্ত ১০ টি মামলা রয়েছে, ধৃত ২নং আসামী মোঃ আজিজুল হক অংক বিরুদ্ধে কক্সবাজার জেলার মহেশখালী এবং পেকুয়া থানায় অস্ত্র, ডাকাতি এবং মাদক সংক্রান্ত ০৩ টি রয়েছে, ধৃত ৩নং আসামী সাহাব উদ্দিনের বিরুদ্ধে কক্সবাজার জেলার কুতুবদিয়া থানায় অস্ত্র, ডাকাতি এবং মাদক সংক্রান্ত ০৬ টি মামলা রয়েছে, ধৃত ৪নং আসামী নুরুল বশর এর বিরুদ্ধে কক্সবাজার জেলার কুতুবদিয়া থানায় অস্ত্র, সংক্রান্ত ০১ টি মামলা রয়েছে, ধৃত ৫নং আসামী শহিদুল ইসলাম এর চট্টগ্রাম জেলার চকরিয়া থানায় অস্ত্র ও ডাকাতি সংক্রান্ত ০২ টি মামলা রয়েছে, ধৃত ৬নং আসামী নেজাম উদ্দিন এর বিরুদ্ধে চট্টগ্রাম জেলার চকরিয়া থানায় অস্ত্র ও ডাকাতি সংক্রান্ত ০৩ টি মামলা রয়েছে এবং ধৃত ৭ নং আসামী ছলিম উল্লাহ প্রকাশ বাবুল এর বিরুদ্ধে কক্সবাজার জেলার কুতুবদিয়া থানায় অস্ত্র, ডাকাতি এবং মাদক সংক্রান্ত ১৫ টি মামলা রয়েছে।
গ্রেপ্তারকৃত আসামীদের জিজ্ঞাসাবাদে অকপটে স্বীকার করে যে, তারা কয়েকটি সংঘবদ্ধ চিহিৃত শীর্ষ জলদস্যূ ও ডাকাত দলের সক্রিয় সদস্য এবং বিশেষ করে ধৃত আসামী আজিজ ডাকাত, গুরা কালু এবং ডাকাত সাহাব তিনজন মিলে তিনটি দল পরিচালনা করত। এই কুখ্যাত ও দুর্র্ধর্ষ জলদস্যূরা বাঁশখালী, চকরিয়া, পেকুয়া, কুতুবদিয়া ও মহেশখালী এলাকার সংঘবদ্ধ জলদস্যূ ও আন্তঃজেলা ডাকাত দলের সক্রিয় সদস্য। তারা বর্ণিত স্থানে সমবেত হয়ে ট্রলার যোগে সাগর পথে কুতুবদিয়া চ্যানেলে ডাকাতি করার উদ্দেশ্যে যাওয়ার জন্য সমবেত হয়ে প্রস্তুতি নিচ্ছিল। এছাড়াও এই দল গুলো দীর্ঘদিন যাবৎ চট্টগ্রামের বাঁশখালীসহ কক্সবাজার জেলার পেকুয়া, কুতুবদিয়া, মহেশখালী থানা এলাকাসহ সাগর পথে বিভিন্ন চ্যানেলে ডাকাতি করে আসছে। উল্লেখ্য যে, গ্রেপ্তারকৃত আসামীদের বিরুদ্ধে বিষয়োক্ত অপরাধের কারনে তাদের প্রত্যেকের নামে ৮/১০টি করে মামলা বিজ্ঞ আদালতে বিচারাধীন।
গ্রেফতারকৃত আসামী এবং উদ্ধারকৃত অস্ত্র ও গোলাবারুদ সংক্রান্তে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের নিমিত্তে সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।
Leave a Reply