নাছির উদ্দীন রাজ, টেকনাফ
কক্সবাজার টেকনাফের সেন্টমার্টিনে পর্যটকদের জন্য বেওয়ারিশ কুকুর গুলো নতুন আতংকে পরিনত হয়েছে । জাহাজ থেকে নেমে পর্যটকরা তাদের নিদিষ্ট গন্তব্য বা সৈকতে ভ্রমনের জন্য গেলেই পড়তে হচ্ছে শত শত কুকুরের রোষানলে। ঝঁকে ঝঁকে দলবদ্ধ হয়ে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কুকুর গুলো যেন এখন দ্বীব থেকে পর্যটক তাড়ানোর মূল কর্মী। পর্যটকেরা ভ্রমনের জন্য সী বিচ এ নামলে ৬/৭ টি কুকুর দল বেধে তাদের চারদিক হতে ঘিরে রাখেন। ফলে পর্যটকেরা নড়াচড়া করতে চাইলে তাদের আক্রমন করেন বলে জানিয়েছেন আগত পর্যটকেরা।
এমনকি সরজমিনে গিয়ে দেখা যায় শনিবার (৪ফেরুয়ারি) বিকালে দ্বীপে স্বপরিবারে বেড়ানোর সময় দুই শিশু পর্যটক কে কামড় দিতে দেখে অন্যান্য পর্যটকেরা দৌড়ে এসে তাদের উদ্ধার করেন বলে জানাগেছে। তবে তারা সেন্টমার্টিনের বিভিন্ন চিকিৎসক থেকে প্রাথমিক ভাবে চিকিৎসা নিয়েছেন বলে নিশ্চিত করেছেন খুলনা থেকে আসা পর্যটক রহিম । তাই স্থানীয় ও পর্যটকদের নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে বেওয়ারিশ কুকুর গুলো কে দ্বীপ হতে অন্যত্রে সরানো বা কোন নিদিষ্ট স্থানে রাখার দাবি জানিয়েছেন পর্যটকসহ এলাকাবাসী।
দ্বীপের স্থানিয় বাসীন্দা রাসেল জানান, সেন্টমার্টিনে অসংখ্য জায়গায় জোড়ে
বেওয়ারিশ কুকুরের অবাধ বিচরণ। ফলে দ্বীপে ভ্রমনে আসা পর্যটকেরা অনিরাপদের পাশাপাশি সবসময় আতংক থাকে।
দ্বীপের স্থানীয় মাছ ব্যবসায়ী হাছন আলী জানান, সেন্টমার্টিনে ছোট বড় মিলিয়ে ৫ হাজারের অধিক কুকুর রয়েছে। প্রতি বছর কুকুরের জন্ম হলেও তা নিয়ন্ত্রণের কোন ব্যবস্থা না থাকায় বছর বছর বেড়ে যায়। আগে সকল কুকুর গুলো জীবিকার তাগিদে মাছ শিকার করতে সাগর পাড়ে একত্রে আসলেও এখন দ্বীপে হোটেল বেশি হওয়ায় পর্যটকদের উচ্ছিষ্ট বা হোটেলের ফেলে দেওয়া খাবর খেতে বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকে। তাই কুকুরের দল বেশি হওয়ায় পর্যটক বা স্থানীয়দের আক্রমন করতে সাহস করে বেশি।
টেকনাফ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ মোঃ আলী এহসান জানান, কুকুর কামড় দিলে আক্রান্ত স্থানে যদি কুকুরের লালা লাগে তাহলে জলাতঙ্ক রোগ হয়। যা চিকিৎসা না নিলে ১০০% মৃত্যু হবে। তবে কাউকে যদি কামড় দেয় সাথে সাথে ওই ক্ষতস্থানে ১৫ মিনিট পর্যন্ত ঠান্ডা পানি ডালতে হবে, সাবান দিয়ে ভাল ভাবে ধুয়ে নিতে হবে জলাতঙ্ক রোগ সৃষ্টির আগে অবশ্যই টিকা নিতে হবে।
টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ কামরুজ্জামান জানান, আমি নিজেও দেখেছি সেন্টমার্টিনে কুকুরের উপদ্রব বেড়ে গেছে । এক সময়ে ওই কুকুর গুলো কে টেকনাফের সমতলে এনে পূনর্বাসন করার চেষ্টা করা হয়ে ছিল, কিন্তুু পরিবেশ বাদিদের আন্দোলন বা বাঁধা দেওয়ার কারণে আর সম্ভব হয়নি। আর এদিকে কুকুর গুলো কে মারাও যাচ্ছেনা। তবে আমাদের উপজেলা সমন্বয় সভায় সিদ্ধান্ত হয়েছে আপাতত তাদের বন্ধাকরন ইন ইঞ্জেকশন দিতে। যা উপজেলা প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা কে বলা হয়েছে তারা ওই বিষয়ে আমাদের জানাবেন।
Leave a Reply