টেকনাফ প্রতিনিধি।
কক্সবাজারের টেকনাফ সদরের নতুন পল্লান পাড়া এলাকায় বিরোধীয় জমি আপোষনামায় স্বাক্ষরের পরও ক্ষমতার অপব্যবহার করে প্রভাবশালী মহলের ইন্ধনে জোরপূর্বক জমি দখলে নেওয়ার অভিযোগ এনে সিরাজুল ইসলামের বিরুদ্ধে সংবাদ সন্মেলন করেছে জমির একাধিক মালিকগণ।
শুক্রবার (৪ আগষ্ট) বিকেলে সদরের ৪নং ওয়ার্ড নতুন পল্লান পাড়া এলাকায় এ সংবাদ সন্মেলন আয়োজন করেন।
এর আগে এই বিরোধীয় জমি উদ্ধার এবং ফিরে পেতে সাবরাং ইউনিয়নের শাহপরীর দ্বীপের এজহার মিয়ার ছেলে মো. সিরাজুল ইসলাম হালসাং নতুন পল্লান পাড়াকে আসামি করে টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী অফিসার, উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান, র্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন র্যাব-১৫, অফিসার ইনচার্জ টেকনাফ মডেল থানা, সদর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ও স্থানীয় ইউপি সদস্য আব্দুল ফারুক বরাবর এর যথাযথ প্রতিকার এবং উক্ত জমি উদ্ধার করে দেওয়ার জন্য অনুলিপি প্রদান করেছেন।
সংবাদ সন্মেলন ও দেওয়া অভিযোগ সূত্রে জমির মালিকেরা বলেন- আমরা পরস্পর টেকনাফ উপজেলার স্থায়ী বাসিন্দা হই। বিবাদী একজন শীর্ষ সন্ত্রাসী-ইয়াবা কারবারী লোক হই। বিধায় দেশের প্রচলিত আইন কানুন কিছুই মানে না। অবৈধ টাকায় লালিত-পালন করা একটি সন্ত্রাসী গ্রুপ রয়েছে তার। আমাদের এলাকা তথা ০৪ নং ওয়ার্ডের স্থানীয় ইউপি সদস্য ও সদর ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি আবদুল ফারুকের কার্যালয়ে কয়েকবার স্থানীয় শালিসে ডাকা হলেও বিবাদী উপস্থিত হননি। বিধায় আমরা বাদীগণ দেশের আইনী সংস্থার নিকট আশ্রয় প্রার্থনা করছি। আমারা বাদীগণ বিগত (১৯ মার্চ) ২০১৮ ইং তারিখে টেকনাফ সহকারী ভূমি অফিসের বরাবরে টেকনাফ মৌজার সৃজিত নামজারী ও জমাভাগ মামলা নং- ২৬২৬(৯) ১৭-১৮ মূলে সৃজিত ৪৩৮৬ নং খতিয়ান বাতিলের আবেদন করেছিলাম।
আমাদের আবেদন খানা টেকনাফ ভূমি অফিস গ্রহণ করে গত ০৯/০৫/২০১৮ ইং এবং ০৮/১০/২০১৮ইং তারিখ উভয়পক্ষকে স্ব-স্ব কাগজপত্র নিয়ে হাজির হওয়ার জন্য নোটিশ প্রদান করেন। ০৮/১০/২০১৮ইং তারিখ সকাল ১০ ঘটিকার সময় মামলার শুনানী শুরু করিলে আমরা বাদীপক্ষ শুনানীর শুরুতে দিয়ারা ২০৯৭ নং খতিয়ানের ২.৭০০ শতক জমি আছে মর্মে উল্লেখ করি। তাহার রেকর্ডীয় মালিক ৫ জন। ১। মকবুল আহাম্মদ, অলি আহম্মদ, জলাল আহাম্মদ, আবুল কাসেম, শহর বানু পিতা- মরহুম আজিজুর রহমান । ০১ নং দাতা মকবুল আহাম্মদ আনা অংশে জমি পাই ৪৫ শতক উক্ত মকবুল আহাম্মদ মরণে ০৬ পুত্র, ০১ স্ত্রী, ০৩ কন্যা ০১ পুত্র দলিল দাতা ছৈয়দ ওমর জমি পাই -০.০৫৩১ একর। এব্যাপারে টেকনাফ ভূমি অফিসের তহসিলদারকে সৃজিত দিয়ারা ৪৩৮৬ নং খতিয়ানের ৫৫১৭ দাগ হইতে ১৯ শতক জমি নামজারীর বিষয়ে অবগত করিলে তহশীলদার আবদুল করিম এসময় বলেছিলেন যাচাই-বাছাই করিয়া সঠিক করে দেওয়ার কথা ব্যক্ত করেন। পরবর্তীতে বিগত ১২/০৭/২০১৮ ইং তারিখ ১৬৪ নং স্মারকমূলে সহকারী কমিশনার ভূমি টেকনাফ এর বরাবরে একখানা প্রতিবেদন দাখিল করেন। উক্ত প্রতিবেদনে উল্লেখ করেন যে, আমাদের ভূলের কারণে অতিরিক্ত জমি নামজারী হইয়াছে। বিধায় সৃজিত দিয়ারা ৪৩৮৬ নং খতিয়ানের ৫৫১৭ দাগের ১৯ শতক জমি হইতে ০.৯৫৪ একর জমি মূল দিয়ারা ২০৯৭ নং খতিয়ানে ফেরত প্রদান করার জন্য প্রতিবেদনে উল্লেখ করিলে টেকনাফ সহকারী কমিশনার ভূমি কাগজপত্র বাছাইক্রমে রিভিউ মামলা নং-৪৬/১৮-১৯ মূলে সহকারী কমিশনার ভূমি ১৩/০২/১৯ইং তারিখের আদেশমতে সৃজিত ৪৩৮৬ নং খতিয়ানের ৫৫১৭ দাগের ০.০৯৫৪ একর জমি কর্তনক্রমে মূল দিয়ারা ২০৯৭ নং খতিয়ানে পূর্ণ বহাল করার আদেশ হলো রিভিউ মিচ মামলা নং-৪৬/১৮-১৯ ইং সহকারী কমিশনার ভূমি টেকনাফ মহোদয়ের ১৩/০২/২০১৯ ইং তারিখের আদেশমতে সৃজিত ৪৩৮৬ নং খতিয়ানভূক্ত দিয়ারা ৫৫১৭ দাগের ০.৯৫৪ একর জমি কর্তনক্রমে মূল দিয়ারা ২০৯৭ নং খতিয়ানে পূর্নবহাল করা হলো। তারিখ ১৮/০২/২০১৯ ইং। এরপর তহশিলদার আবদুল করিম ৪৩৮৬ নং খতিয়ানের ৫৫১৭ দাগের জমি পূর্ণ বহাল করার জন্য বিকল্প ব্যবস্থা করিলেন যে, বি, এস ১১৪৭ নং খতিয়ানের রেকর্ডীয় মালিক অলি আহাম্মদ এর ওয়ারিশ হইতে ২২/০২/২০০৪ইং ১৯৬ নং দলিলমূলে খরিদা জমি ০৪ শতক দিয়ারা ২০৯৭ খতিয়ানের ৫৫১৭ দাগের জমি দেখিয়ে ৪৩৮৬ নং খতিয়ানে অন্তর্ভূক্ত করিয়াছে। তাহা আমরা বাদীগণ জানিতে পারিয়া বিগত ১৬/০১/২০২০ ইং তারিখ টেকনাফ সহকারী কমিশনার বরাবর ০৪ শতক জমি ৪৩৮৬ নং খতিয়ান হইতে বাতিলের আবেদন করিলে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মহোদয় কানুন গো মোঃ আবুল আলমকে তদন্ত রিপোর্ট প্রদান করার জন্য আদেশ প্রদান করেন। কানুন গো মহোদয় বিগত ১৬/০১/২০২০ইং তারিখের আদেশমতে সরজমিন তদন্ত করে দেখিতে পাইলেন যে, বি,এস ৬৬৫৭ দাগের ০৪ শতক জমি দিয়ারা ৫৫১৭ দাগের সাথে কোন ধরণের মিল না থাকায় বিবাদীকে ০৪ শতক জমি মূল দিয়ারা ৫৫১৭ দাগে ফেরত প্রদান করার জন্য বলেন। তখন বিবাদী মোঃ সিরাজুল ইসলাম বুঝিতে পারিয়া বিজ্ঞ টেকনাফ সহকারী জজ আদালতে অপর ৫৮/২০২০ ইং তারিখ দিয়ারা ২০৯৫ নং খতিয়ানের মালিকদের বিরুদ্ধে একখানা মামলা দায়ের করেন এবং উভয়পক্ষ আপোষ করার জন্য একমত পোষণ করিলে ৩.৩৩ একর জমি দিয়ারা ২০৯৭ নং খতিয়ানে পূর্ন বহাল করিতে কোন ধরণের আপত্তি না থাকায় ১৫/০৩/২০২১ ইং আপোষ নামায় দস্তখত করেন।রিভিউ মিচ মামলা নং-১৬/২০২০-২১ ইং তারিখ সহকারী কমিশনার ভুমি টেকনাফ মহোদয়ের ২৯/০৬/২১ ইং এর আদেশমতে সৃজিত ৪৩৮৬ নং খতিয়ানভুক্ত ৫৫১৭ দাগের ০.০৩৩৩ একর জমি কর্তনক্রমে দিয়ারা ২০৯৭ নং খতিয়ানে পুর্ণ বহাল করা হইল। রিভিউ ও মিচ মামলা নং-১৬/২০২০ইং ও সহকারী কমিশনার ভূমি টেকনাফকে ১৯/০৬/২০২১ ইং তারিখের আদেশমতে সৃজিত ৪৩৮৬ নং খতিয়ানভূক্ত ৫৫১৭ দাগের ০.০৩৩৩ একর জমি কর্তনক্রমে অত্র খতিয়ান পূর্ণ বহল করা হলো।
যাহার তারিখ-২৭/০৯/২০১৮ইং এবং বিগত ২০/০৬/১৭ইং তারিখে ১৫৩৫ নং দলিলমূলে আমরা বাদীগণ দিয়ারা ২০৯৭ নং খতিয়ানের রেকর্ডীয় মালিক আবুল কাসেম মরণে তৎ ওয়ারিশ ১। ছফুরা খাতুন ২। কালা বানু হইতে ৫৫১৭ দাগের আন্দর ০.০৮৩৩ একর জমি খরিদ করিয়া নামজারী খতিয়ান সৃজন করি যাহার জমাভাগ মামলা নং- ১৬৮৩ (৯)/১৭-১৮ খতিয়ান নং-৪০০৫। জমির চৌহদ্দি উত্তরে মৌলভী সিরাজুল ইসলাম, দক্ষিণে-নুরুচ্ছফা, পূর্বে-জাফর মিয়া ও পশ্চিমে মৌলভী সিরাজুল ইসলাম এর জমি এই চকবন্দে ০.০৮৩৩ একর জমি।
এরপর মৌলভী সিরাজুল ইসলাম বিবাদী তহশিলদার আব্দুল করিমের কু-পরামর্শে লোভের বশিভূত হইয়া দিয়ারা ২০৯৭ নং খতিয়ানের ৫৫১৭ দাগের বিরুদ্ধে রিভিউ মিচ মামলা চলাকালীন সময় দিয়ারা ২০৯৭ নং খতিয়ানের অপর মালিক হইতে বিগত ১৮/০৪/২০১৮ইং তারিখ একখানা দলিল সৃজন করেন। যাহার নং-১৯৫৩, জমি পরিমাণ-০.০৮৩৩ একর জমি। যাহার চৌহদ্দি উত্তরে-গ্রহিতা, পশ্চিমে গ্রহিতা বনাম মৌলভী সিরাজ, দক্ষিণে নুরুচ্ছফা ওপূর্বে জাফর মিয়া। বিবাদীর কোন ধরণের আর সুযোগ না থাকায় বাদীগণের চৌহদ্দির উপর চৌহদ্দি দিয়া একখানা বানোয়াট দলিল সৃজন করেন। বাদীগণের বৈধ দলিল এর জমি অবৈধ টাকা ও ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে বাদীদেরকে আপোষ ছেড়ে দেওয়ার জমি দখলে যেতে দিচ্ছে না এবং বিবাদী সন্ত্রাস বাহিনী দিয়ে বাদীদেরকে হত্যা করিবেন করিবেন এবং বিভিন্ন মামলা মোকদ্দমায় ঢুকিয়ে দিবেন বলে হুমকি দিতে থাকে।
অতএব, আকুল আবেদন কাগজপত্র যাচাই করে উক্ত মাদক কারবারি -সন্ত্রাসীর কবল থেকে আমাদের জমিখানা উদ্ধার করে দেওয়ার জন্য অনুরোধ জানাচ্ছি। অন্যথায় এলাকায় রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ হতে পারে।###
Leave a Reply