অনলাইন ডেস্ক,
কক্সবাজারের টেকনাফে অভিযান চালিয়ে হিরোইন, ইয়াবা, বিদেশী পিস্তল, তাজা কার্তুজ ও ম্যাগজিন উদ্ধারের ঘটনায় প্রধান দুই আসামিকে বাদ দিয়ে আদালতে চার্জশিট জমা দেওয়া হয়েছে। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর টেকনাফ বিশেষ জোনের উপ-পরিদর্শক তুপ্ত মনি চাকমার বিরুদ্ধে এ অভিযোগ উঠেছে।
অভিযোগ রয়েছে, প্রকাশ্য দিবালোকে মাদক- গোলাবারুদ উদ্ধারের মামলা থেকে চিহ্নিত দুই মাদক মাফিয়াকে বাদ দেয়ার নেপথ্যে কোটি টাকার অবৈধ লেনদেন হয়েছে। ওই মামলার ১ নং আসামী আবদুল্লাহ ও ২ নং আসামী মোহাম্মদ আবদুল কাদেরকে বাদ দিয়েই দ্রুত সময়ের মধ্যে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেছেন তদন্ত কর্মকর্তা। অথচ তারা দু’জনই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের তালিকাভুক্ত ইয়াবা কারবারি। এছাড়া আন্তর্জাতিক মাফিয়াদের সাথে তাদের গভীর সম্পর্ক রয়েছে বলে অভিযোগ দীর্ঘদিনের।
মামলা সূত্রে জানা গেছে, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের চট্টগ্রামের অতিরিক্ত পরিচালকে নেতৃত্বে কক্সবাজারের টেকনাফে গত ২৪ সেপ্টেম্বর এক অভিযানে উদ্ধার করা হয়েছিল হিরোইন, ইয়াবা, বিদেশী পিস্তল, তাজা কার্তুজ ও ম্যাগজিন। এ ঘটনায় সংস্থার টেকনাফ বিশেষ জোনের পরিদর্শক বিদ্যুৎ বিহারী নাথ বাদী হয়ে গত ২৫ সেপ্টেম্বরে টেকনাফ থানায় মাদক ও অস্ত্র আইনে ৭ জনকে আসামী করে ২টি মামলা দায়ের করেন। এর মধ্যে মাদক আইনের মামলাটি তদন্তকারি কর্মকর্তা নিয়োগ করা হয় সংস্থার টেকনাফ বিশেষ জোনের উপ-পরিদর্শক তুন্ত মনি চাকমাকে। অস্ত্র মামলাটি পুলিশ এখনও তদন্ত করছেন। দেড় মাসের মাথায় গত ১০ নভেম্বর মাদক মামলাটির অভিযোগপত্র আদালতে দাখিল করা হয়েছে। যেখানে এজাহারে অভিযুক্ত ১ এবং ২ নম্বর আসামিকে অব্যাহতি প্রদান করা হয়েছে।
টেকনাফের স্থানিয়াদের কাছ থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, মামলায় অভিযুক্ত ৭ জন টেকনাফ সদর ইউপির পাশাপাশি এলাকার বাসিন্দা। তারা ৭ জনের একটি সিন্ডিকেট দীর্ঘদিন ধরে ইয়াবা, হিরোইনসহ মাদক ও অস্ত্র কারবার করে আসছে। তারা সকলেই চিহ্নিত মাদক ও অস্ত্র কারবারী। তাদের বিরুদ্ধে বেশ কয়েকটি মামলাও রয়েছে। মাদক কারবার করে কোটি কোটি টাকার মালিক বনে গেছে এ সিন্ডিকেটের সদস্যরা। এদের মধ্যে আব্দুলাহ ও আবদুল কাদের ইয়াবা কারবারের মূল নিয়ন্ত্রক। অভিযানের সময় তারা ৭ জন পালিয়ে যাওয়ার সময় এলাকার সকলেই দেখেছেন। অথচ প্রধান দুই কারবারিকে মামলা থেকে বাদ দেওয়ার বিষয় মেনে সকলে হতবাক হয়েছেন।
বিষয়টি নিয়ে গত রবিবার (১০ ডিসেম্বর) কক্সবাজার জেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভায় ব্যাপক আলোচনা হয়েছে। কক্সবাজার জেলা দায়েরা ও জজ আদালতে পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) ফরিদুল আলম সভায় বিষয়টি উপস্থাপন করেন। যার সূত্র ধরে আদালত থেকে দাখিল করা অভিযোগ পত্র, এজাহার সহ মামলার সংশ্লিষ্ট নথিপত্র সংগ্রহ করা হয়েছে।
মামলারটির এজাহারে বলা হয়েছে, গত ২৪ সেপ্টেম্বর দুপুর থেকে বিকেল সাড়ে পাঁচটা পর্যন্ত টেকনাফ সদর ইউনিয়নের পশ্চিম গোদার বিলের মোহাম্মদ সাজেদের ভাড়া করা বসতঘরে এক অভিযান চালানো হয়। এতে নেতৃত্ব দেন মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের চট্টগ্রামের অতিরিক্ত পরিচালক মো জাফরুল্ল্যাহ কাল। এসময় ৭০০ গ্রাম হিরোইন, ৫৩ হাজার ইয়াবা, ৩ টি বিদেশি নাইন এমএম পিস্তল, একটি বিদেশী পিস্তল, ১৪১ রাউন্ড তাজা কার্তুজ, তিনটি ম্যাগজিন উদ্ধার করা হয়। অভিযানে কাউকে আটক করা সম্ভব না হলেও ৭ জন পালিয়ে যেতে দেখা গেছে।###
Leave a Reply