ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিম আনারকে হত্যার আগে মাস্টারমাইন্ড আক্তারুজ্জামান শাহীনের বান্ধবী শিলাস্তি রহমান ওরফে সেলেনিস্কির সঙ্গে আপত্তিকর ছবি তুলে রাখে খুনিরা। সেই ছবি ছড়িয়ে ঘটনাকে ভিন্ন খাতে নেওয়ার পরিকল্পনাও ছিল তাদের। এছাড়া হত্যার আগে সেই ফ্ল্যাটে ক্লোরোফর্ম (চেতনানাশক) ছড়িয়ে দিয়ে অচেতন করা হয় এমপি আনোয়ারুল আজিম আনারকে। তদন্ত সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য মিলেছে।
তবে এসব কিছুই বেমালুম অস্বীকার করেছেন অভিযুক্ত শিলাস্তি নামের শিলাস্তি রহমান। তিনি শুক্রবার (২৪ মে) আদালতেও বলেন, ‘আমি কিছুই জানি না।’
তদন্ত সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, এমপি আনার হত্যার সময় কলকাতার সেই ফ্ল্যাটে ছিলেন শিলাস্তি রহমান। হত্যা মিশন সফল হওয়ার পর ঢাকায় ফিরে শাহীনের ফ্ল্যাটে পার্টিতেও অংশ নেন তিনি।
তদন্ত সূত্র বলছে, এমপি আনার খুনের সময়ে শিলাস্তি কলকাতার নিউ টাউনে সঞ্জীবনী গার্ডেনে শাহীনের ভাড়া করা ফ্ল্যাটেই অবস্থান করছিলেন। ভবনে প্রবেশ করে তিনি অবস্থান নেন ফ্ল্যাটের তৃতীয় তলায়। পরে তাকে নিচে নামিয়ে আনা হয়। ততক্ষণে নিচতলায় আনারকে অচেতন করে ফেলে খুনি চক্র। এরপর শিলাস্তির সঙ্গে আনারের আপত্তিকর ছবি তোলা হয়। ফের তিনি ফ্ল্যাটের ওপরের তলায় চলে যান। ব্লিচিং পাউডারের গন্ধ পেয়ে নিচে নেমে আসেন। খুনের বিষয়টি বুঝতে পেরে ফ্ল্যাট থেকে বেরিয়ে কলকাতা বিমানবন্দর এলাকার একটি হোটেলে অবস্থান করেন। পরে সেখান থেকে প্রধান কিলার আমানুল্লাহর সঙ্গে দেশে ফেরেন তিনি।
এমপি আনারের মেয়ে মুমতারিন ফেরদৌস ডরিন রাজধানীর শেরেবাংলা নগর থানায় হত্যার উদ্দেশ্যে অপহরণের যে মামলা করেছেন, তাতে শিলাস্তি রহমানকে গ্রেপ্তার দেখিয়েছে ডিবি পুলিশ। শুক্রবার আদালতে হাজির করে তদন্ত কর্মকর্তা অন্য দুই আসামির সঙ্গে তারও ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করলেও আদালত তাদের ৮ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
ডিবি সূত্রে জানা যায়, ২২ বছর বয়সী এই শিলাস্তি মডেল হতে চেয়েছিলেন। কয়েক বছর আগে এক ক্লাব পার্টিতে শাহীনের নজর কাড়েন তিনি। এরপর তার বান্ধবী হয়ে যান। পুরান ঢাকার বাসা ছেড়ে ওঠেন উত্তরার মতো অভিজাত এলাকায়। আমেরিকা থেকে শাহীন দেশে এলে ঘুরে বেড়াতেন তার সঙ্গে। সবশেষ এমপি আনারকে হত্যার চূড়ান্ত প্রস্তুতিতে অংশ নিতে গত ৩০ এপ্রিল শাহীনের কলকাতা গমনেও সঙ্গে ছিলেন তার এই বান্ধবী। ১৩ মে এমপি খুন হওয়ার পর শিলাস্তি দেশে ফেরেন ১৫ মে।
শিলাস্তির গ্রামের বাড়ি টাঙ্গাইলের নাগরপুরে। তবে তিনি বড় হয়েছেন পুরান ঢাকায়। অবশ্য এখন থাকেন উত্তরা এলাকায়। তিনি ধনাঢ্য পরিবারের কেউ না হলেও তার চলনে-বলনে আভিজাত্য থাকে সবসময়।
উপদেষ্টা সম্পাদক : জহির আহমদ, টেকনাফ উপজেলা বীর মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার।
অফিস : আবু সিদ্দিক মার্কেট, টেকনাফ, কক্সবাজার।
মোবাইল : ০১৯০৭-৭৫৮২৫০, ০১৮৫১-৯২৯৬৫৮
Developed By : AzadWebIT.Com