আব্দুর রশিদ মানিক: টিটিএন
মিয়ানমারের ওপার থেকে বারবার গুলি ছুঁড়া হচ্ছে টেকনাফ-সেন্টমার্টিন নৌরুটে চলাচল করা ট্রলার এবং স্পিডবোট লক্ষ্য করে। একারণে এই নৌরুটে তিনদিন ধরে সকল ধরনের নৌযান চলাচল বন্ধ রয়েছে। সেন্টমার্টিনের একমাত্র যাতায়াত ব্যবস্থা একমাত্র নৌপথে হওয়ায় সেন্টমার্টিনের সাথে এখন যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে।
রোববার (০৯ জুন) সন্ধ্যায় বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সেন্টমার্টিন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান।
দেশের একমাত্র প্রবাল দ্বীপের এই চেয়ারম্যান বলেন, ৩ দিন ধরে ট্রলার চলাচল বন্ধ রয়েছে। স্পিডবোট চলাচলও বন্ধ রয়েছে। তবে এখনো পর্যন্ত কোন সংকট হয়নি। যাতায়াত নিয়ে সমস্যা হচ্ছে অনেক। অনেকেই সেন্টমার্টিনে আসতে পারছে না। অনেকেই সেন্টমার্টিন থেকে যেতেও পারছে না। কিছুটা খাবার নিয়ে কষ্টে আছে। তবে এখনো খাবার সংকট তৈরি হয়নি। সংকট হতে পারে সবজি এবং নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের। আর কয়েকদিন বন্ধ থাকলে খাবার সংকটও তৈরি হতে পারে।
টেকনাফ-সেন্টমার্টিন নৌরুটের চলাচলকারী বোট মালিক সমিতির সভাপতি আব্দুর রশিদ বলেন, তিনদিন ধরে বোট চলাচল বন্ধ রয়েছে। আমার বোটেও গুলি করা হয়েছে মিয়ানমার থেকে। এর আগেরদিনও গুলি করেছে আরেকটি ট্রলারে। লোকজন পারাপার করতে পারছে না। সেন্টমার্টিন থেকে টেকনাফে খাদ্য মালামাল এবং মানুষ পারাপারের জন্য ৩ টা আসে এবং ৩ টা চলে যায়। আর অন্যান্য মালামাল আনা-নেয়া করার জন্য কিছু ট্রলার চলাচল করে। কালকেও দুইটা ট্রলার যাওয়ার চেষ্টা করেছিলো তবে টেকনাফ মোহনায় গুলি করলে আবারও সেন্টমার্টিনে ফেরত আসে ট্রলারগুলো।
সেন্টমার্টিনের বাসিন্দা জয়নাল আবেদীন বলেন, মিয়ানমারের গোলাগুলির কারণে সেন্টমার্টিন টু টেকনাফ যাতায়াত বন্ধ রয়েছে। যার ফলে সেন্টমার্টিনের লোকগুলি অনেক কষ্টে আছে। সেন্টমার্টিনের জনগণকে সমস্ত কিছু টেকনাফ থেকে এনে খেতে হয়। আমরা এখন কি করবো বুঝতে পারছি না।
এদিকে বুধবার (০৫ জুন) সন্ধ্যার দিকে নাফ নদীর মোহনায় সেন্টমার্টিন থেকে ফেরার পথে বাংলাদেশী নির্বাচনী কর্মকর্তাদের লক্ষ্য করে মিয়ানমার থেকে গুলিবর্ষণ করা হয়।
এছাড়া এর আগেও ট্রলার লক্ষ্য করে বারবার গুলি ছুঁড়ে মিয়ানমারের ওপার থেকে। বারবার এসব ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটার কারণে ভয়ে আতঙ্কিত হয়ে ট্রলার এবং স্পিডবোট চলাচল বন্ধ রেখেছে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
এসব বিষয় নিয়ে কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) ইয়ামিন হোসেন বলেন, সেন্টমার্টিনে প্রায় ১০ হাজার মানুষের বসবাস। তাদের নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য আনা-নেওয়া এপার থেকে করতে হয়। যেহেতু মিয়ানমার থেকে বারবার গুলি করা হচ্ছে একারণে আমরা সেন্টমার্টিন যাওয়ার বিকল্প নিয়ে ভাবছি। নাফ নদীর মোহনায় যেহেতু এঘটনা ঘটছে তাই নাফকে এভয়েড করে আমরা বিকল্প কিভাবে তাদের খাদ্যসামগ্রী এবং যাতায়াতের ব্যবস্থা করা যায় এসব নিয়ে চিন্তাভাবনা করা হচ্ছে।
গুলি করা করছে সেটি বুঝা যাচ্ছে না জানিয়ে তিনি বলেন, গুলি ছুঁড়া হচ্ছে। কিন্তু করা গুলি করছে আমরা বুঝতে পারছি না। যেহেতু ওপারে যুদ্ধ চলছে। আমরা এসব বিষয় নিয়ে সরকারকে জানিয়েছি। স্থানীয়ভাবেও সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করছি।
Leave a Reply