ফারুকুর রাহমান, টেকনাফ
কক্সবাজারের টেকনাফে সমুদ্র পথে মালয়েশিয়া যাওয়ার পথে বারো জন রোহিঙ্গা সহ চার মানব পাচার চক্রের সক্রিয় সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে মডেল থানা পুলিশ।
গ্রেফতারকৃত আসামিরা হলেন; টেকনাফ সদরের দক্ষিণ লম্বরী এলাকার মো. কাশেম এর ছেলে নুরুল আমিন (২৫) কেফায়েত উল্লাহর ছেলে নুরুল আফসার (১৯) হাফেজ আহম্মদের ছেলে সাইফুল্লাহ (৪০) ও হৃীলা ইউপির জাদিমুড়া এলাকার আবু তাহেরের ছেলে মিনহাজ উদ্দিন (২০), হাতিয়া থানার জাহাজমারা এলাকার রফিক সরকারের ছেলে মো. আল আমিন (২৪), টেকনাফ সদর ইউপির লেঙ্গুরবিল এলাকার হাজী আমির আহম্মদের ছেলে ফয়সাল (২৫) ও একই এলাকার আজিমুল্লাহ (২৭) পিতা অজ্ঞাত, ইসমাইল (২৬) পিতা অজ্ঞাত, মোহাম্মদ কবিরের মেয়ে ফেরদৌস আক্তার (৩৮), টেকনাফ পৌরসভা পুরান পল্লান পাড়া এলাকার মো. আয়ুবের ছেলে মো. ইউনুছ (২১), মো. রফিক (১৯) ।
সোমবার (৪ নভেম্বর) রাতে টেকনাফ সদর ইউনিয়নের লম্বরী সাকিনস্থ পর্যটন বাজার হইতে ৫০০ গজ দূরে ফয়সালের লিজকৃত জায়গা সুপারি বাগান থেকে তাদের আটক করা হয় বলে নিশ্চিত করেন টেকনাফ থানার অফিসার্স ইনচার্জ মোহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন।
তিনি বলেন; গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানতে পারি টেকনাফ থানাধীন সদর ইউনিয়নের লম্বরী সাকিনস্থ পর্যটন বাজার হইতে ৫০০ গজ দূরে ফয়সালে লিজকৃত জায়গা সুপারি বাগানের ভিতর সংঘবদ্ধ মানব পাচারকারী চক্রের সদস্যরা জোরপূর্বক কিছু নারী ও শিশুদেরকে অবৈধভাবে সাগর পথে মালয়েশিয়ায় পাচারের উদ্দেশ্যে আটক করে রাখে।
এসময় উক্ত সুপারি বাগানে পৌঁছালে পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে অন্ধকারে দিগ্বিদিক দৌড়ে পালিয়ে যায়।
এসময় ০৩ জন নারী, ০৯ জন শিশুসহ মোট ১২ জন’কে উদ্ধারপূর্বক নিরাপদ হেফাজতে নেয়া হয়। উদ্ধারকৃত ভিকটিমদেরকে জিজ্ঞাসাবাদ করিলে তাদের মধ্যে ১২ জন ভিকটিম বাস্তুচ্যুত মায়ানমার রোহিঙ্গা নাগরিক এবং তারা উখিয়া-টেকনাফ থানাধীন বিভিন্ন রোহিঙ্গা শরণার্থী ক্যাম্পে বসবাস করে বলে জানান।
তিনি আরো বলেন; উল্লিখিত ভিকটিমদের আর্থ-সামাজিক অনগ্রসরতা ও পরিবেশগত অসহায়ত্বকে পুঁজি করে উন্নত জীবন-যাপন, অধিক বেতনে চাকুরি ও অবিবাহিত নারীদেরকে বিবাহের মিথ্যা প্রলোভন দেখিয়ে প্রতারণা পূর্বক ছল-চাতুরির আশ্রয় নিয়া যৌন নিপীড়ন, প্রতারণামূলক বিবাহ ও জবরদস্তিমূলক শ্রম সেবা আদায় এর অভিপ্রায়ে ৩/৪ দিন যাবৎ ধাপে ধাপে আসামীরা পরস্পর যোগসাজশে বর্ণিত ভিকটিমদের ঘটনাস্থলে এনে মালয়েশিয়া পাচারের জন্য জোরপূর্বক আটক রাখে।
পরে উদ্ধারকৃত ভিকটিম ও ধৃত আসামীদেরকে জিজ্ঞাসাবাদ এবং স্থানীয় লোকজনদের বরাতে পলাতক আসামিদের নাম-ঠিকানা সংগ্রহসহ সংঘবদ্ধ মানবপাচার চক্রের সদস্যদের বিষয়ে জানা যায়। ধৃত আসামি ও পলাতক সহ অজ্ঞাতনামা আসামিদের সংঘবদ্ধ মানবপাচার চক্রটি দীর্ঘদিন যাবত পরস্পর যোগসাজশে বাঙালি ও বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গা শরাণার্থী দের নিয়ে মানব পাচারের অপরাধ সংঘটিত করে আসতেছে বলে জানা যায়।
উক্ত ঘটনার বিষয়ে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন। ধৃত আসামীদেরকে বিজ্ঞ আদালতে সোপর্দ করা হইতেছে।
Leave a Reply