বিশেষ প্রতিনিধি টেকনাফ।
কক্সবাজার টেকনাফ মডেল থানা পুলিশ অভিযান চালিয়ে গত আড়াই মাসে (১৮ /৯/২৪ হতে ৩০/১১/২৪ইং পর্যন্ত) ৩৩ মামলায় ৭৫ জন গ্রেফতার, ৫ অস্ত্র, ৫১ গুলি,৪০ হাজার পিচ ইয়াবা সহ ১০০ লিটার মদ উদ্ধার করেছে। যার মধ্যে মাদক মামলা সংক্রান্ত ৫টি মামলায় ৬ জন কে গ্রেফতার করে ৪০ হাজার পিচ ইয়াবা, ৩০ লিটার চোলাই মদ এবং ৭০ বোতল বিদেশী মদ উদ্ধার করা হয়। ৪টি অস্ত্র আইনের মামলায় ৫ জন প্রেফতারের পাশাপাশি ৩টি ওয়ান শুটার গান, ১টি একনলা বন্দুক, ১টি পিস্তল, ৪০ রাউন্ড কার্তুজ, ২টি কিরিচ, ১টি রামদা, ১টি কোড়াল, ৯ রাউন্ড গুলি, ২টি কার্তুজ, ১টি কিরিচ, ১টি দা রয়েছে।
নারী ও শিশু অপহরণ মামলা সংক্রান্ত ৫ মামলায় ৫ জন ভিকটিম উদ্ধার সহ ৬ জন আসামি আটকের পাশাপাশি ৩টি মানব পাচার মামলায় নারী, পুরুষ ও শিশু ৬৩ জন ভিকটিম। যাদের মধ্যে পুরুষ ২০জন, নারী ১০জন, শিশু ৩৩ জন এবং ১০ জন আসামি রয়েছে।
৭টি অপহরণ মামলায় ৭জন ভিকটিম উদ্ধারের এবং ৮জন আসামি কে গ্রেফতার সাথে দস্যুতার ১টি মামলায় ১জন আসামি কে গ্রেফতার করে ১টি ছিনতাই মামলায়ও ১ জন আসামি গ্রেফতার সহ ১০ হাজার টাকা উদ্ধার করি। ছাত্র জনতার গণ অদ্ভুত্থান পরবর্তী ৭টি মামলায় ৩৯ জন কে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়।
শনিবার (০১ ডিসেম্বর) টেকনাফ মডেল থানার ওসি মোহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন পাঠানো এক সংবাদ তথ্য তা নিশ্চিত করেন।
৫ আগস্টের ছাত্র জনতার গণঅভ্যুত্থানের পরে থেকে সীমান্ত উপজেলা টেকনাফের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির এমন অবনতি হয়েছিল যা বর্ণনা দেওয়া কঠিন। রাষ্ট্র কে প্রশ্নবিদ্ধ করতে অপহরণ বানিজ্য , মাদক ব্যবসা, মানব পাচার, হত্যা কান্ড, মারামারি, রাজনৈতিক অস্থিরতা, ছিনতায় সহ বিভিন্ন অপরাধ করতে কোন প্রকার তোয়াক্কাই করতনা স্বৈরাচারীদের দোষর সহ অপরাধ চক্রের সদস্যরা। মানুষের মধ্য এক ধরনের অস্থিরতা, ভয় ও আতঙ্ক কাজ করত দিন রাত। অপরাধী চক্রের আক্রান্ত হওয়ার ভয়ে সকলে ছিল তটস্থ। এমন পরিস্থিতিতে জনগণের জান মাল ও সরকারি সম্পদ রক্ষা, প্রতিদিনের অপহরণ বানিজ্য বন্ধ, মাদক ও মানব পাচার নিয়ন্ত্রণ এবং আইন শৃঙ্খলার উন্নতি ঘটাতে প্রতিটি ইউনিয়নে অপরাধ নিয়ন্ত্রণে পুলিশ ও এলাকা বাসীদের সাথে নিয়ে সাঁড়াশি অভিযান পরিচালনা করে আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি করেন টেকনাফ থানা পুলিশ। উদ্ধার করা হয় অস্ত্র,তাজা গুলি, বুলেট, দা, কিরিচ,অপহৃত ও মানব পাচারের ভিকটিম, সহ অসংখ্য অবৈধ সরমজান। পাশাপাশি দেশের স্বার্থে রাজনৈতিক বিশৃঙ্খলা এড়াতে সমস্ত দলের সিনিয়র নেতৃত্বের সাথে মতবিনিময় সহ বিভিন্ন কৌশলে অশান্ত টেকনাফ এখন শান্ত। অদ্যুত্থান পরবর্তী আতঙ্কিত পরিস্থিতি থেকে নিরাপদ ও সহনশীল পরিবেশ তৈরি করার জন্য সরকারের সুনাম কুড়াচ্ছেন ব্যবসায়ি,রাজনীতি বিদ,শিক্ষক, ছাত্র সমাজ সহ অনেকেই। এমন পরিস্থিতি বজায় রাখতে পারলে যেন সুনাম অর্জিত হবে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের , তেমনি ফিরে পাবে পুলিশ হারানো মনোবল এবং জনগণের আস্থা।
এ বিষয়ে হ্নীলা ৯ নং ওয়ার্ডের মেম্বার মোহাম্মদ আলী জানান, টেকনাফ একটি সীমান্ত ও রোহিঙ্গা রোহিঙ্গা উদ্বোষিত এলাকা। হাসিনা সরকার পতনের পরে টেকনাফের যে উশৃংখলা , অবৈধ অস্ত্রের ঝনঝনানি, অপহরণ, মানব পাচার, মাদক কারবারিদের অনিয়ন্ত্রিত চলাফেরা ও রাজনৈতিক অস্থিরতা যেভাবে বৃদ্ধি পেয়েছি মনে করছিল তা নিয়ন্ত্রণ করা যাবেনা। আমরা জনসাধারণ সব সময় অনিরাপত্তাই থাকব বল মনে করছিলাম। কিন্তুু টেকনাফ পুলিশের অভিযান ও কর্মকর্তাদের বিচক্ষণতাই এখন টেকনাফের আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি শান্ত দেখে আমি জনগণের পক্ষ থেকে পুলিশ ও সরকার পক্ষকে ধন্যবাদ জানাই।
অপহরণ চক্রের কবল থেকে ফিরে আসা ভিকটিম দক্ষিণ শিলখালী চৌকিদার পাড়ার বেলাল জানান, ৫ আগস্টের পরে আমাকে অপহরণ করেছিল। খবর পেয়ে পুলিশ গহীন পাহাড়ে অভিযান চালিয়ে আমাকে উদ্ধার করছে। পাশাপাশি চক্রের সদস্যদের আটক করেছেন। তাই আমি পুলিশের কারণে জীবন নিয়ে ফিরে আসতে পেরে সরকার প্রধান ও আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।
টেকনাফ উপজেলা বিএনপির সভাপতি এডঃ হাসান সিদ্দিকী বলেন, জুলাই আগষ্টের গণঅভ্যুত্থানের আগে সাবেক সংসদ সদস্য আব্দুর রহমান বদির নেতৃত্বে টেকনাফে এক নীতির অনুসরণ করে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে দমন পিড়ন করে মানুষ কে অশান্ত করে টেকনাফের আইনশৃঙ্খলার বিগ্ন করে নিজে লাভবান হওয়ার চেষ্টা করতেন । কিন্তুু ৫ আগস্টের পরে পুলিশ বর্তমান সরকারের ভাবমূর্তি রক্ষায় শৃঙ্খলা ফিরাতে কাজ করছে যা আমরা কাজে অনুভব করছি। তবে আমি মনে করি টেকনাফের পূর্ণাঙ্গ শৃঙ্খলা ফেরাতে তাদেরকে আরো কিছু সময় দেওয়া উচিত যেহেতু তারা নতুন এসেছে। আমাদের বিএনপি'র পক্ষ থেকে সব সময় সহযোগিতা থাকবে।
টেকনাফ মডেল থানার ওসি মোহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন জানান, আমি আসার পর থেকে দায়িত্ব রত এলাকায় শৃঙ্খলা ফিরে আনা, অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার, অপহরণ কারি, মাদক কারবারি ও মানব পাচার কারিকে আইনের আওতায় আনা ও জন নিরাপত্তা বিষয় বিবেচনা সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে অভিযান চলমান রেখেছি। সরকারের অর্পিত দায়িত্ব পালন করতে আমরা বদ্ধপরিকর । তাই অপরাধীদের কোন বিবেচনায় বা আর্শিবাদে ছাড় দেওয়া হবে না।
উপদেষ্টা সম্পাদক : জহির আহমদ, টেকনাফ উপজেলা বীর মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার।
অফিস : আবু সিদ্দিক মার্কেট, টেকনাফ, কক্সবাজার।
মোবাইল : ০১৯০৭-৭৫৮২৫০, ০১৮৫১-৯২৯৬৫৮
Developed By : AzadWebIT.Com