কক্সবাজার টেকনাফ বাহারছড়া ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হতে মরিয়া হয়ে উঠেছে আওয়ামী লীগের নেতা ও মানবপাচার-অপহরণকারীদের আশ্রয়দাতা। এই নিয়ে এলাকায় চলছে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা। অপরাধ জগতের লিডার হিসেবে আখ্যা দেওয়া সেই বাহারছড়া ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ডের মেম্বার নুরুল ইসলাম। গত ৫ আগষ্টের পর বিগত সকল অপকর্মের খোলস পাল্টিয়ে সেই ইউনিয়নে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের দায়িত্ব নিতে মরিয়া হয়ে উঠেছে ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের কৃষি ও সমবায় বিষয়ক সম্পাদক।
আওয়ামী লীগ সরকার আমলের ইউপি মেম্বার এখন ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হওয়ার স্বপ্ন দেখছেন ! গত ২৫ ফেব্রুয়ারি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন টেকনাফ উপজেলার প্রতিনিধিরা কোনো স্বৈরশাসকের দোসর যেন ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হতে না পারে এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ এহসান উদ্দিনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।আওয়ামী লীগের দোসরদের পুনর্বাসন করার সুযোগ দেওয়া হবে না, কঠোর হুঁশিয়ারি দেন ছাত্ররা।
এলকাবাসী ও বিভিন্ন সূত্রে থেকে জানা গেছে, বাহারছড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আমজাদ হোসেন খোকন গ্রেপ্তার হওয়ার পর থেকে আরেক দোসর বহু অপকর্মের মুলহোতা উক্ত পরিষদের ৮ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য নুরুল ইসলাম ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হতে বেশ তৎপর হয়ে উঠেছে। এলাকাবাসী ক্ষোভ প্রকাশ করে জানান, ফ্যাসিবাদ শাসন আমলে গরিব দুঃখী মানুষের জায়গায় জমি দখল করা থেকে শুরু করে তিনি সব অপরাধের মূল নায়ক হিসেবে এলাকায় রাজত্ব কায়েম করেছেন নুরুল ইসলাম।
আইনশৃংখলা বাহিনীর তালিকায় থাকা কচ্ছপিয়া এলাকার শীর্ষ মানবপাচারকারী ও অপহরণের সিন্ডিকেটের প্রধান জসীম, কেফায়েত, আহমদ কবীরদের অন্যান্যদের ক্ষমতা প্রভাব বিস্তার করে নিয়ন্ত্রণ করেন এই ইউপি সদস্য। তাঁকে ম্যানেজ করে চলে রমরমা এই অবৈধ কর্মকাণ্ড।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ইউপি সদস্য বলেন, বাহারছড়া ইউনিয়নে যুবলীগের সেক্রেটারি ও চেয়ারম্যানের ঘনিষ্ঠ লোক ছিলেন নুরুল ইসলাম মেম্বার। দীর্ঘদিন ধরে রোহিঙ্গাদের জম্ম নিবন্ধন ও আইডি কার্ড বানিয়ে দিয়ে কোটি টাকার মালিক বনে যান নুরুল ইসলাম মেম্বার ও চেয়ারম্যান আমজাদ হোসেন। পাহাড়ি অপহরণকারীদের থেকে মাসিক মাসোহারা আসতো তার পকেটে।তার নেতৃত্বে বাহারছড়া ইউনিয়নে প্রতিনিয়ত মানবপাচার হলেও তিনি এখনো ধরাছোঁয়ার বাইরে রয়ে গেছে।বাহারছড়া পাহাড় কেন্দ্রিক গড়ে তুলছে তার নিজস্ব অস্ত্রধারী বাহিনী। আরো গড়ে তুলেছে মানবপাচার সিন্ডিকেট। তার দুইটা ছেলে ইয়াবা নিয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে আটক হয়েছিল।তার বিরুদ্ধে এতো অপরাধ এবং অভিযোগ থাকায় কখনো ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হতে পারে না।
এ বিষয় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র প্রতিনিধি আতাউল্লাহ বলেন, ‘আমরা জুলাই-আগস্ট বিপ্লবে এ জন্য রক্ত এবং জীবন দিয়েছি। যাদের হাতে ছাত্র-জনতা নির্যাতিত হয়েছে তারাই আবার চেয়ারে বসবে। টেকনাফে কোন আওয়ামীলীগ আমলে ইউপি সদস্য ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হতে দেয়া হবে না। জেলার প্রশাসন ও উপজেলা প্রশাসন আশা করি এরকম সিদ্ধান্ত নিবে না। আমাদের পক্ষে থেকে সবসময় বলা আছে আওয়ামী দোসরদের পুনর্বাসন করার সুযোগ দেওয়া যাবে না।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত নুরুল ইসলাম মেম্বার বলেন, চেয়ারম্যান এবং প্যানেল চেয়ারম্যান উপস্থিত না থাকায় প্যানেল চেয়ারম্যান-২ হিসেবে আমি চেষ্টা করেছিলাম, মাদক এবং মানবপাচারের সাথে আমি জড়িত না, আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অপপ্রচার চালাচ্ছে। আমার ছেলেরা কয়েকবছর আগে ইয়াবা নিয়ে আটক হয়েছিলো তা সত্যি বর্তমানে জামিনে রয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী অফিসার শেখ এহসান উদ্দিন জানান, টেকনাফ বাহারছড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জামিন পেয়েছেন। ওনি নিয়মানুযায়ী আগের মতো দায়িত্ব পালন করে যাবেন। এমতাবস্থায় কেউ ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হওয়ার সুযোগ নেই।
Leave a Reply