পর্ব-১
কক্সবাজার প্রতিনিধি।
কক্সবাজার টেকনাফ সদর ইউনিয়নের অপরাধ জগতের নতুন বাসিন্দা আবদুল হামিদ (৪৫)। আলোচিত আব্দুর রহমান বদির পরিচয় দিয়ে মানব পাচার, মাদক কারবার, চোরাচালান, কিশোর গ্যাং সহ এমন কোন অপরাধ নেই যেখানে তার সংশ্লিষ্টতা নেই। সম্প্রতি টেকনাফ উপজেলায় যে পাহাড় কেন্দ্রিক অপহরণ বাণিজ্যে সঙ্গে জড়িত রয়েছে তাদের মধ্যে রয়েছে শীর্ষ অবস্থানে।
সে টেকনাফ সদর ইউনিয়নের রাজার ছড়া মৌঃ কবির আহাম্মদ এর ছেলে ও আলোচিত ইয়াবা ডন ও অপরাধ জগতের ঘনিষ্ঠ সহযোগী।
মানবপাচার, ইয়াবা,অপহরণ ও জায়গায় দখলের তালিকায় তার নাম রয়েছে বলে জানিয়েছে গোয়েন্দা সূত্র।পুলিশ সূত্র জানায়, তার বিরুদ্ধে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড অপরণ ও দলিল জালিয়াতির অভিযোগে চারটি মামলা রয়েছে। টেকনাফ থানায় রয়েছে দুটি আর আদালতে করা হয়েছে দুইটি। টেকনাফ থানার মামলা নং - ৮২/৮২/২০২০।আর একটি মামলা নং- ৩৪/৪৮১/২০১৯ ।দুইটি মাদক মামলা।সিআর মামলা নং- ৬১২/২০২৪ দলিল জালিয়াতির মামলা ও মামলা নং- ৫৪২/২০২৪ অপহরণ মামলা। ওই চারটি মামলায় সে চার্জশিট ভুক্ত আসামি।
স্থানীয়রা জানায়, মিয়ানমারের সেনাবাহিনী ও আরাকান আর্মির মধ্যে চলমান সংঘাতে প্রতিদিন রাজারছড়া নৌ ঘাট থেকে তার নেতৃত্বে রোহিঙ্গা ও ইয়াবা আসতেছে। আর পাহাড় কেন্দ্রিক অপহরণ চক্রের সদস্যদের জন্য অত্যাধুনিক অস্ত্র মিয়ানমার থেকে সরবরাহ করে।এই কাজের জন্য উখিয়া ও টেকনাফ রোহিঙ্গা শিবির কেন্দ্রিক রয়েছে কয়েকটি দালাল চক্র।আরো অভিযোগ রয়েছে গরীব অসহায় মানুষের জমি অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে দখল করে। তারেককে রোহিঙ্গা সন্ত্রাসী দিয়ে এলাকা থেকে বিতাড়িত করার অভিযোগ উঠেছে। আলোচিত আব্দুর বদির কমাতে দেখিয়ে এলাকায় রাজত্ব কায়েম করেছিল। আব্দুর রহমান বদি কারাগারে থাকলেও আরো বেপরোয়া হয়ে উঠেছে হামিদ।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, আবদুল হামিদ আগে একটা ছোট্ট মুদির দোকান করত।২০১৭ সালে রোহিঙ্গা সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তুলে অপরাধ জগতে পা রাখে।এরপর থেকে স্থানীয় ও মিয়ানমার কেন্দ্রিক কয়েকটি মাদক সিন্ডিকেটের সাথে আঁতাত করে রাজার ছড়া ঘাট দিয়ে মাদকের চালান খালাস শুরু করে। এছাড়াও মিয়ানমার থেকে অস্ত্র ও গবাদি পশু এনে রাতের আধারে এই ঘাট দিয়ে উঠায়। বিনিময়ে ভোগ্য পণ্য পাঠায়। এসব নিয়ন্ত্রণ করতে এলাকার বিপথগামী উঠতি বয়সী কিশোরদের নিয়ে গড়ে তুলে কিশোর গ্যাং। নিজেকে আরো শক্তিশালী করতে অবৈধ অস্ত্র ব্যবহার করে।
পরিচয় গোপন রাখার শর্তে রাজার ছড়ার এক যুবক বলেন, আব্দুর রহমান বদির পরিচয়ে কিশোর গ্যাং দিয়ে এলাকায় প্রভাব বিস্তার করত । বিগত উপজেলা নির্বাচনে সাবেক চেয়ারম্যান জাফরের পক্ষে নির্বাচনী প্রচারণায় প্রচুর অর্থ ব্যয় করে হামিদ। জাফর নির্বাচিত হওয়ার পর তার ছেলে শাহজাহানের নাম ভাঙ্গিয়ে অপরাধ জগতে আরো অপ্রতিরুদ্ধ হয়ে উঠেছিল এবং ২০ -৩০ জনের জায়গায় দখল করে রাখছে। এলাকার মানুষ সবাই তাকে ভয় করে কারণ তার অবৈধ অস্ত্র রয়েছে। টেকনাফ সদরের রাজার ছড়া এলাকা ও মেরিন ড্রাইভ কেন্দ্রিক অপরণ বাণিজ্যে আবদুল হামিদ এখন আলোচিত নাম।
নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা যায় , মেরিন ড্রাইভ রাজার ছড়া নৌ ঘাট থেকে অন্যান্য কারবারিদের মাদকের চালান খালাস করে দেয়াড় পর তার নিজস্ব সিন্ডিকেটের মাদক গুলো লবণ বোঝাই ট্রাক যোগে দেশের বিভিন্ন এলাকায় পাচার করে থাকে। তার বিরুদ্ধে এলাকায় কেউ মুখ খুললেই কিশোর গ্যাং এর সন্ত্রাসীদের দিয়ে হামলা চালায়। এভাবে সে এলাকার মুর্তিমান আতঙ্কে পরিণত হয়েছে।তার বিরুদ্ধে ইয়াবা ও অপরণ মামলা হয়েছে।
বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের একটি সুত্রের দাবি, বদির সহচর জাফর উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ার পরে, গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার উপর গুলি বর্ষণকারী উপজেলা শ্রমিক লীগের সভাপতি শাহজাহানের নাম ভাঙ্গিয়ে এলাকা এবং নৌ ঘাটে আবদুল হামিদ নরকে পরিণত করেছিলো।
এ বিষয়ে আবদুল হামিদের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমার বিরুদ্ধে মামলা আছে এটা সত্য তবে এ মামলাগুলো ষড়যন্ত্র বলে জানান। বাকি অভিযোগের বিষয়ে অস্বীকার করেন। আমার বিরুদ্ধে তথ্য থাকলে লিখেন এ বিষয়ে আমার আপত্তি নেই।
কক্সবাজার র্যাব -১৫ অধিনায়ক লে. কর্নেল মো. কামরুল হাসান বলেন, মাদক ও অপহরণস বিভিন্ন অপরাধে জড়িতদের আইনের আওতায় নিয়ে আসতে সার্বক্ষনিকভাবে র্যাবের গোয়েন্দা তৎপরতা ও নজরদারী অব্যাহত রয়েছে।
টেকনাফ মডেল থানার (ওসি) তদন্ত হিমেল বড়ুয়া জানান, তার বিরুদ্ধে মামলা রয়েছে কিন্তু ওয়ারেন্ট নেই।বিষয়টি খোঁজ নিয়ে তার বিরুদ্ধে দ্রুত আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে। অপরাধ করে কোনো অপরাধী পার পাওয়ার সুযোগ নেই।
দ্বিতীয় পর্বে আছে আরো বিস্তারিত তথ্য...
সুত্র- দৈনিক কক্সবাজার ৭১ পত্রিকা
উপদেষ্টা সম্পাদক : জহির আহমদ, টেকনাফ উপজেলা বীর মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার।
অফিস : আবু সিদ্দিক মার্কেট, টেকনাফ, কক্সবাজার।
মোবাইল : ০১৯০৭-৭৫৮২৫০, ০১৮৫১-৯২৯৬৫৮
Developed By : AzadWebIT.Com