প্রেস বিজ্ঞপ্তি:
কক্সবাজারের সীমান্ত উপজেলা শহর টেকনাফ উপজেলার অর্ধশত কবি, ঔপন্যাসিক, গল্পকার, শিশুসাহিত্যিক, প্রাবন্ধিক, অনুবাদকসহ সাহিত্যিকদের একটি বৃত্তের বন্ধন বসেছিল সোমবার বিকালে। যেখানে অর্ধশত লেখক তাঁর প্রকাশিত গ্রন্থ নিয়ে হাজির হয়েছিলেন টেকনাফ সদর সাগর উপকূলের লেংগুর বিল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে। অনুষ্ঠিত হয়েছে মনোমুগ্ধকর বই আলোচনা, সাহিত্য আড্ডা ও সম্মাননা অনুষ্ঠান। একাডেমির সভাপতি আলী প্রয়াসের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত অনুষ্ঠানে টেকনাফ উপজেলার নবীন-প্রবীণ ৩০ জন লেখকের বই নিয়ে আলোচনা করেন ৩০জন আলোচক।
‘সীমান্তের সাহিত্য, সীমাহীন ভাবনা’ শিরোনামকে প্রতিপাদ্য করে অনুষ্ঠিত এই আয়োজনের শুরুতেই পরিচয়পর্ব সম্পন্ন করার পর আমন্ত্রিত লেখক ও আলোচকদের উত্তরীয় পরিধান করিয়ে দেন কবি আলী প্রয়াস, লেখক রফিক উল্লাহ ও শিক্ষক নুরুল ইসলাম মাহমুদ।
এরপর শুরু হয় অনুষ্ঠানের সবচেয়ে আকর্ষণীয় পর্ব ‘বই আলোচনা’। বই আলোচনায় যথাক্রমে আবুল কালাম আজাদের ‘সাত তরী স্বপ্ন পরি’ নিয়ে কবি এম এরশাদুর রহমান, লেখক ও চিন্তক রফিক উল্লাহর ‘বৈষম্য ও সুষম বণ্টন’ নিয়ে কবি আলী প্রয়াস, কবি ও শিক্ষক মুহাম্মদ আমির হোসাইনের ‘নাফের জলে ছন্দ গা়ঁথা’ নিয়ে কবি নুরুল ইসলাম মাহমুদ, নুরুল ইসলাম মাহমুদের ‘যাপিত জীবনের কাব্য’ নিয়ে প্রাবন্ধিক শহিদুল ইসলাম, শিশুসাহিত্যিক সন্তোষ কুমার শীলের ‘সুস্থ থাকা সবল থাকা’ নিয়ে শিক্ষক মো. আবু তাহের, ঔপনাাসিক মুহাম্মদ জামিলের ‘মায়াজাল’ নিয়ে কবি আল মামুন সাদেক, শিশুসাহিত্যিক মো. আনোয়ারুল ইসলামের ‘নাফের তরি’ নিয়ে কবি আব্দুল্লাহ আল ইসলাম, কবি ও ঔপন্যাসিক আবুল হোছাইন হেলালীর ‘কাব্য কাননে সূরা বাক্বারা’ নিয়ে কবি নুপা আলম, কবি শেখ আনোয়ার হোসেন রানার ‘বুঝতেই চাইনি তোমার মন’ নিয়ে কবি নুর মোহাম্মদ, কবি আলী প্রয়াসের ‘মায়া ও মর্মের ভগ্নাংশ’ নিয়ে কবি নাফিক আবদুল্লাহ, কথাসাহিত্যিকও কবি বিশ্বজিৎ পালের ‘মেঘলা আকাশ’ নিয়ে কবি সাগর শর্মা, কবি রহিম ক্যালভিনের ‘অবলোকন’ নিয়ে কবি রফিক রানা, কবি নাফিক আব্দুল্লাহর ‘কবিদের কথা বলছি’ নিয়ে লেখক এহসান উদ্দিন, কবি নুপা আলমের ‘ইচ্ছে রঙের তুলি’ নিয়ে কবি ও চিন্তক রহিম ক্যালভিন, কবি এম. এরশাদুর রহমানের ‘হোয়াইক্যং-এর ইতিহাস’ নিয়ে কবি আজিজুর রহমান, কবি সাইফুল্লাহ মানছুরের ‘সুবোধ ও তার এলিজি’ নিয়ে লেখক নুরুল আমিন, কবি ফারুক আজিজের ‘শব্দ গোলাব’ নিয়ে কবি হোসাইন জাহিদ, কবি আবদুল্লাহ্ বিন নূরের ‘পরীবিবির তাসের ঘর’ নিয়ে লেখক সানা উল্লাহ মোহাম্মদ কাউসার, কবি নুর মোহাম্মদের ‘জুতা আমাকে নিয়ে হাঁটছে’ নিয়ে কবি সাইফুল্লাহ মানছুর, কথাসাহিত্যিক ইসহাক তুহিনের ‘ধীরাজ-মাথিনের আখ্যান’ নিয়ে কবি ও শিশুসাহিত্যিক শফিউল্লাহ নান্নু, কবি ফারজানা রুমার ‘মানুষ ব্যথায় বাঁচে’ নিয়ে লেখক ও শিক্ষক শফিকুল ইসলাম, কবি শফিউল্লাহ নান্নুর ‘লাল হইতরি’ নিয়ে শিক্ষক জিয়া উদ্দিন, ঔপন্যাসিক ফারুক বিল্লাহর ‘অপূর্ব প্রেম’ নিয়ে কবি দিলদার সামাদ খান, কবি হিমেল রিফাতের ‘ক্লেশে গাঁথা নীল চিরকুট’ নিয়ে কবি সীমান্ত হেলাল, কবি আজিজুর রহমানের ‘নোনাজলের ঢেউ’ কবি ইসমাঈল মুকুল, কবি শাকিল সাহেলের ‘ইচ্ছেডানা’ নিয়ে কবি মুরতাজা বেগম মলিকা, ছড়াকার আহমদ বিন শফীর ‘ছন্দবিলাস’ নিয়ে কবি আবুল হোসেন হেলালী, কবি আব্দুর রহমান হায়দারের ‘নব্যকথনে প্রশান্তির বাসন’ নিয়ে কবি সাদেক হোসাইন খায়রি, কবি সীমান্ত হেলালের ‘দুঃখবিভ্রম’ নিয়ে কবি ফারজানা রুমা, কবি সাদেক হোসাইন খায়রির ‘কবিতায় জীবনের গল্প’ নিয়ে ছড়াকার আহমদ বিন শফী প্রমুখ আলোচনায় অংশ নেন।
আলোচনা পর্ব শেষে সকল সম্মানিত লেখক ও আলোচকদের হাতে সম্মাননা তুলে দেন একাডেমির পক্ষে আলী প্রয়াস, নুপা আলম।
আলোচনায় আলোচকরা প্রতিটি বই নিয়ে লিখিত এবং মৌখিকভাবে পুঙ্খানুপুঙ্খ আলোচনা ও গঠনমূলক সমালোচনা করে সাহিত্যের নানা দিক উন্মোচন করেন।
বিশেষ আলোচনায় আরও বক্তব্য রাখেন, প্রাবন্ধিক রফিক উল্লাহ, কবি শেখ আনোয়ার হোসেন রানা, লেখক আবছার বিন কামাল প্রমুখ। আলোচকরা বলেন, এই অনুষ্ঠান টেকনাফের ইতিহাসে মাইলফলক হয়ে থাকবে। ১৯৯১ সালের বইমেলার পরে বিগত সাড় তিন দশকের মধ্যে এটাই সাহিত্যের বৃহত্তর অনুষ্ঠান আখ্যা দিয়ে তারা আরও বলেন, টেকনাফ সাহিত্য একাডেমির হাত ধরে সবার ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্ঠায় টেকনাফের সাহিত্য সংস্কৃতির সমৃদ্ধির পথ আরও সুগম হবে। ভবিষ্যতে সবার অংশগ্রহণের ভিত্তিতে আরও বৃহৎ পরিকল্পনার মাধ্যমে বইমেলার আয়োজনসহ নানামাত্রিক সাহিত্য আসর, লেখা উন্নয়ন কর্মশালা, গ্রন্থাগার আন্দোলন, সাহিত্য পাঠ প্রতিযোগিতা, লেখক আড্ডা করার অঙ্গীকার করেন। এক মঞ্চে টেকনাফের সকল লেখকের উপস্থিত করার বিরল কৃতিত্বের জন্য সকল লেখকদের পক্ষ থেকে টেকনাফ সাহিত্য একাডেমির প্রতি সংশা প্রকাশ করে কৃতজ্ঞতা জানানো হয়।
অনুষ্ঠান শেষে দশ প্রজাতির দেশীয় মৌসুমি ফল নিয়ে উপস্থিত সকলকে আপ্যায়ন করান এবং ‘জ্যৈষ্ঠ উৎসব’ পালনের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি হয়।টেকনাফে কবি-সাহিত্যিক নিয়ে ইতিহাসের সর্ববৃহৎ মিলনমেলা###
Leave a Reply