টেকনাফের তরুণ প্রজন্ম যদি এই মুহূর্ত থেকে টুরিজম ও কমিউনিকেশনে নিজেদের স্কিল না বাড়ায় এবং নিজেকে ডেভেলপ না করে তাহলে তাদের জন্য আগামী ৫ বছর পরের টেকনাফ খুবই চ্যালেঞ্জিং এবং আফসোসের হবে। টেকনাফে আগামী দিনগুলোতে কি হবে তা টেকনাফেরই অধিকাংশের না জানা। অপার সম্ভাবনাময় দিনগুলোতে নিজের এলাকার শ্রমবাজার বাহিরের লোকবল দখলে নিবে যদি টেকনাফের তরুণ প্রজন্ম এখন থেকে এসব নিয়ে না ভাবে। কেন ভাবতে হবে আসুন দেখি..
সাবরাং ট্যুরিজম পার্ক একটি প্রস্তাবিত বাংলাদেশের বৃহত্তম বিনোদনমূলক পার্ক হবে। বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ (বেজা)র সারা দেশে ১০০টি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল উন্নয়নের পরিকল্পনার একটি অংশ সাবরাং ট্যুরিজম পার্ক।
সাবরাং ট্যুরিজম পার্কে ২৮টি বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে জমি ইজারা চুক্তি স্বাক্ষর হয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানের প্রস্তাবিত বিনিয়োগের পরিমাণ প্রায় ৪৬ কোটি মার্কিন ডলার। দেশী-বিদেশী বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান বিনিয়োগের আগ্রহ প্রকাশ করেছে। নেদারল্যান্ডস, সিঙ্গাপুর এবং অন্যান্য দেশের ২৩ বিনিয়োগকারী ১১২ দশমিক ২৯ একর জমি বরাদ্দ পেয়েছে। এর বিনিময়ে তারা ৪১৩ মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগের প্রস্তাব দিয়েছেন।
১. গ্রেট আউটডোর অ্যান্ড অ্যাডভেঞ্চার লিমিটেড এখানে তিন একর জমিতে প্রায় ৬০ লাখ ডলার বিনিয়োগে পর্যটনবান্ধব বিভিন্ন স্থাপনা গড়ে তুলবে। এর মধ্যে রয়েছে, স্নোরকেলিং, স্কুবা ডাইভিং, প্যারাসেইলিং, জেট স্কিইং, প্যাডেল বোর্ডিং, বিচ ভলিবল, বিচ বোলিং
২. গ্রিন অরচার্ড হোটেল অ্যান্ড রিসোর্টস লিমিটেড দেড় একর জমিতে প্রায় ৭৫ কোটি ডলার বিনিয়োগে গড়ে তুলবে ২১০টি রুম বিশিষ্ট থ্রি স্টার হোটেল, রিক্রিয়েশন সেন্টার এবং কনভেনশন সেন্টার।
৩. সানসেট বে লিমিটেড এক একর জমিতে প্রায় ১ কোটি ৯২ লাখ ডলার বিনিয়োগে ৩৭০টি রুম বিশিষ্ট ৫ তারকা হোটেলসহ পর্যটনবান্ধব স্থাপনা তৈরি করবে
সাবরাং ট্যুরিজম পার্কে ইতিমধ্যে ১২টি প্রতিষ্ঠানের বিনিয়োগ অনুমোদন পেয়েছে, যার মাধ্যমে ২৪ কোটি ৫০ লাখ ডলার বিনিয়োগ হবে।
সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্বের (পিপিপি) ভিত্তিতে সাবরাং ট্যুরিজম পার্ক গড়ে তোলা হবে, এখানে বিভিন্ন ক্যাটাগরির রিসোর্ট ও হোটেলের পাশাপাশি গলফ কোর্স, শপিং সেন্টার, ঐতিহ্য ও মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর, অ্যামফিথিয়েটার, কনভেনশন সেন্টার, আ্যমিউজমেন্ট পার্ক, হাসপাতাল, ফায়ার স্টেশন, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কেন্দ্র থাকবে
এছাড়াও যোগাযোগের জন্য বাস ডিপো, ট্রান্সপোর্টেশন হাব, হেলিপ্যাড ও জেটি স্টেশন করা হবে। রাস্তা, হাঁটার পথ ও বাইসাইকেল লেন রাখা হবে।
বাংলাদেশে বিদেশি পর্যটকদের জন্য নির্দিষ্ট কোনো টুরিজম স্পট নেই। সাবরাং ট্যুরিজম পার্কের ভেতরে ১০০ একর জায়গায় বিদেশিদের জন্য একটি ‘এক্সক্লুসিভ জোন’ স্থাপনের উদ্যোগ নিয়েছে বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চফল কর্তৃপক্ষ (বেজা)। বিদেশি পাসপোর্ট দেখিয়ে প্রবেশ করতে হবে এ জোনে।
এটা তো শুধু একটা প্রকল্প, ভবিষ্যতে মেরিন ড্রাইভ রোড চারলেন হবে, কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতকে পেছনে ফেলে টেকনাফ সমুদ্র সৈকত সকলের আগ্রহের জায়গা হবে, সেন্টমার্টিন এবং জেটিঘাট তো আছেই।
সুতরাং টেকনাফের তরুণ প্রজন্মের ভবিষ্যৎ সম্পূর্ণ টুরিজমের উপর ভর করা সম্ভব। এখন থেকে যদি নিজেদের প্রস্তুত না করা হয় তাহলে এই বাজারও বাইরের লোকদের দখলে চলে যাবে।
এই টুরিজম নিয়ে অনেক স্বপ্ন। কেউ যদি এগিয়ে আসে তাহলে টেকনাফের ছেলেদের জন্য পর্যটনমূখী বিভিন্ন কর্মশালা হাতে নিতে প্রস্তুত আছি।
Leave a Reply