
নাছির উদ্দীন রাজ, টেকনাফ।
টেকনাফে জেলেদের জীবিকা উন্নয়নে কোস্ট ফাউন্ডেশনের অংশীজন মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সোমবার (২০ অক্টোবর) সকালে কোস্ট ফাউন্ডেশন বাস্তবায়িত “ফিশার লাইভলিহুড প্রকল্প” এর আওতায় হ্নীলা ইউনিয়ন পরিষদের হল রুমে স্থানীয় অংশীজনদের সঙ্গে উক্ত মতবিনিময় সভা ও কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়।
কোস্ট ফাউন্ডেশনের প্রকল্প সমন্বয়কারী মোঃ মিজানুর রহমানের পরিচালনায়, সংস্থাটির সহকারী পরিচালক মোঃ জাহাঙ্গীর আলম এর সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, কক্সবাজার জেলা প্রেস ক্লাবের সভাপতি তৌহিদ বেলাল। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন ইউনিয়ন পরিষদের সচিব, সদস্যবৃন্দ, প্রকল্পের উপকারভোগী প্রতিনিধি, রাজনৈতিক ও সামাজিক ব্যক্তিবর্গ, জেলে প্রতিনিধি এবং সাংবাদিকবৃন্দ।
সভায় স্বাগত বক্তব্যে জাহাঙ্গীর আলম বলেন, “নাফ নদী নির্ভর প্রায় ৩ হাজার জেলে পরিবারের বর্তমানে নানা সমস্যায় মুখোমুখি জীবন যাপন করতে হচ্ছে। ৮৪% পরিবার একসময় নাফ নদীর ওপর নির্ভরশীল ছিল, কিন্তু গত দুই বছরে ২৩% সরকার ও স্থানীয় কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে সহায়তা পেয়েছে। ১০০% জেলে নিবন্ধিত, তাদের আয় ৫০–৬০% পর্যন্ত হ্রাস পেয়েছে।” তিনি আরও বলেন, “নারী ও সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীর অধিকার সুরক্ষায় লিঙ্গ বৈষম্য নিরসনও একটি বড় চ্যালেঞ্জ।”
মোঃ মিজানুর রহমান, প্রকল্প সমন্বয়কারী, প্রকল্পের চলমান কার্যক্রম, সাফল্য এবং চ্যালেঞ্জ তুলে ধরেন। তিনি বলেন, “প্রযুক্তিগত বিকল্প আয়বর্ধক প্রশিক্ষণ ও আর্থিক সহায়তার মাধ্যমে জেলে পরিবারগুলোর টেকসই জীবিকার ৩ বছরের পরিকল্পনা তৈরি করা হচ্ছে, যাতে তারা নিজেদের উৎপাদিত পণ্য বাজারজাত করতে সক্ষম হয়।”
উপকারভোগী নাসিমা খাতুন বলেন, “নাফ নদীতে মাছ ধরা বন্ধ থাকায় আমাদের সংসার ভালো চলছে না, কিন্তু প্রকল্পের প্রশিক্ষণ পেয়ে বিকল্প আয় শুরু করেছি। ১০,০০০ টাকার সহায়তা পেয়ে মাছ শুকানোর কাজ শুরু করেছি। এখন পরিবারে কিছুটা স্বস্তি এসেছে।” তিনি নাফ নদীতে পুনরায় মাছ ধরার অনুমতি প্রদানের দাবিও জানান।
মোঃ জোবায়ের উসমান বলেন, “নাফ নদীতে মাছ ধরা বন্ধ থাকায় জেলার দক্ষিণাঞ্চল কঠিন সময় পার করছে। কোস্ট ফাউন্ডেশনের উদ্যোগ প্রশংসনীয়, তবে সহায়তার পরিধি আরও বাড়ানোর প্রয়োজন।”
মোঃ শফিকুল ইসলাম বলেন, “কোস্ট ফাউন্ডেশনের উদ্যোগ স্থানীয় সমস্যাগুলো চিহ্নিত করে সমাধানমূলক কার্যক্রম পরিচালনা করছে।”
সাংবাদিক নাসির উদ্দিন রাজ বলেন, “দরিদ্র জেলে পরিবারের পালাবদলের মধ্য দিয়েই জেলেদের সহায়তার কার্যক্রম এগিয়ে যাবে।
মোঃ আরিফ উল্লাহ বলেন, “উপকারভোগীদের প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত কাজে নিজেদের সম্পৃক্ত রাখতে হবে, যাতে সহায়তার স্থায়িত্ব নিশ্চিত হয়।” ইউপি সচিব মওলানা হোসেন বলেন, “জেলেদের বিকল্প জীবিকার স্থানে কোস্ট ফাউন্ডেশনের অবদান প্রশংসনীয়।”
তৌহিদ বেলাল বলেন, “কোস্ট ফাউন্ডেশনের এ প্রকল্পটি এ অঞ্চলের মানুষের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ১ কোটি ৭০ লক্ষ টাকার প্রকল্পের মাধ্যমে ১,০০০ জেলে পরিবারের সহায়তা করা প্রশংসনীয় উদ্যোগ। ভবিষ্যতেও যেন এমন কার্যক্রম অব্যাহত থাকে, সে প্রত্যাশা করি।
Leave a Reply