
কক্সবাজারের টেকনাফে এক রোহিঙ্গা নারীর দায়ের করা অপহরণ মামলাকে কেন্দ্র করে এলাকায় তীব্র উত্তেজনা ও বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। মামলাটি মিথ্যা আখ্যা দিয়ে মঙ্গলবার (১১টা সময়) টেকনাফ মডেল থানা এলাকায় হাজারও সাধারণ জনগণ বিক্ষোভ সমাবেশ ও মানববন্ধন করে। এ সময় প্রায় দুই ঘণ্টা ধরে থানা অবরোধ করে রাখেন বিক্ষুব্ধরা।
বিক্ষোভকারীরা দাবি করেন, মামলাটি মিথ্যা এবং এলাকার নির্দোষ ও সম্মানিত ব্যক্তিদের হয়রানি করার জন্য এটি দায়ের করা হয়েছে। তাদের অভিযোগ, টাকার বিনিময়ে এই মিথ্যা মামলায় এলাকার সর্দার, যুবদল নেতা-সহ গণ্যমান্য ব্যক্তিদের নাম যুক্ত করা হয়েছে। স্থানীয়দের ক্ষোভ, “থানার অনুমতি ছাড়াই র্যাব গভীর রাতে তাদের আটক করে নিয়েছে।”
জানা যায়, চলতি বছরের ১৫ অক্টোবর ওই রোহিঙ্গা নারীর ছেলে মারধরের শিকার হন। কিন্তু ঘটনাটিকে অপহরণ হিসেবে সাজিয়ে মামলা দায়ের করা হয়। এতে নির্দোষ ব্যক্তি হিসেবে স্থানীয় সর্দার, যুবদল সভাপতি এবং মোট ছয়জনকে আসামি করা হয়েছে।
দায়েরকৃত মামলার অভিযুক্ত মো: রফিক অভিযোগ করে জানান, মামলার বাদী ফেরদৌস আকতার একজন পুরাতন রোহিঙ্গা এবং দুই বছর আগে ভুয়া এনআইডি সংগ্রহ করে টেকনাফ এলাকায় বসবাস শুরু করেন। তার বাড়িতে মানবপাচার, ইয়াবা বাণিজ্য ও অনৈতিক কর্মকাণ্ডের অভিযোগ রয়েছে। রফিক দাবি করেন, “এলাকার জনপ্রতিনিধি, গণ্যমান্য ব্যক্তি ও এলাকাবাসী এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করার কারণে ফেরদৌস আকতার ইতোমধ্যে ছয়টি মিথ্যা মামলা দায়ের করেছিলেন। এখন নতুন করে এই মিথ্যা অপহরণ মামলা দায়ের করেছেন।”
তিনি আরও বলেন, “মামলায় যাদেরকে আসামি করা হয়েছে তারা কোনো ধরনের অপরাধ কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত নয়। আমরা এই মামলার পুনঃতদন্ত, নির্দোষদের অব্যাহতি এবং মামলার বাদীর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানাই।”
বিক্ষোভ চলাকালীন টেকনাফ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জিয়াউর রহমান জিহাদ এসে বিক্ষুব্ধ জনতাকে শান্ত করে বলেন, ফ্যাসিস্ট সরকারের আমলে ওই নারী লাগামহীনভাবে আওয়ামী লীগ নেতাদের অবৈধ কর্মকাণ্ডের সহযোগী ছিলেন, তাঁর কুকর্ম এলাকাবাসী প্রতিবাদ করলে ক্ষিপ্ত এমন ষড়যন্ত্রমূলক মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করছে, এসব ভিত্তিহীন মামলার প্রত্যাহারের দাবি তুলেন তিনি।
টেকনাফ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু জায়েদ নাজমুন নূর জানান, মামলাটি নিয়ে বিক্ষুব্ধ জনতা থানা প্রাঙ্গণে জড়ো হয়েছিলেন, স্থানীয় প্রতিনিধিদের সাথে বসে বিষয়টি তদন্ত পূর্বক নিরপরাধ ব্যক্তিদেরকে মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়া হবে।
বিক্ষোভ সমাবেশে অংশ নেওয়া সাধারণ জনগণ অবিলম্বে এই ঘটনার সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে নির্দোষ ব্যক্তিদের মামলা থেকে অব্যাহতি প্রদানের জোর দাবি জানান। তাদের এই কর্মসূচির ফলে এলাকায় সাময়িক অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়।
Leave a Reply