অনলাইন ডেস্ক,
বগুড়ার ধুনটে আরিফুল ইসলাম হিটলু নামে এক সন্ত্রাসীকে কুপিয়ে হত্যার পর তার লাশ কবরে পুঁতে রাখে এলাকাবাসী। ঘটনার ১৪ ঘণ্টা পর শাজাহানপুর উপজেলার চার বছরের পুরনো একটি কবরে লাশের সন্ধান পেয়ে পুলিশ তা উদ্ধার করে মর্গে পাঠিয়েছে।
এর আগে শনিবার রাতে অত্যাচারে অতিষ্ঠ প্রায় তিন শতাধিক এলাকাবাসী একত্র হয়ে হিটলুকে কুপিয়ে হত্যার পর লাশ গুম করে। নিহত হিটলু বেড়েরবাড়ি গ্রামের আব্দুল জলিলের ছেলে।
জানা গেছে, ধুনটের বেড়েবাড়ী গ্রাম এবং শাজাহানপুরের আমরুল ইউনিয়ন সীমান্তবর্তী এলাকা। হিটলু দীর্ঘদিন যাবৎ শাজাহানপুর উপজেলার আমরুল ইউনিয়নের নাগরকান্দি খালের ব্রিজের জুয়ার আসর চালিয়ে আসছিল। শনিবার রাত সাড়ে ৯টায় জুয়া খেলা নিয়ে বিরোধের জেরে ধুনটের বেড়েরবাড়ি গ্রামের মালেক নামের এক যুবককে কুপিয়ে আহত করে। পরে এখবর গ্রামের পৌঁছলে বেড়েরবাড়ি গ্রামের অন্তত তিন শতাধিক লোক জুয়ার আসরে হামলা চালিয়ে হিটলুকে ধরে নিয়ে যায়। এরপর বেড়েরবাড়ী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সংলগ্ন এলাকায় তাকে কুপিয়ে হত্যা করে তার লাশ অজ্ঞাত স্থানে পুঁতে ফেলে। খবর পেয়ে রাত সাড়ে ১০টায় ধুনট থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে স্থানীয়দের সহযোগিতায় লাশের সন্ধান শুরু করে। পরে স্থানীয়দের দেয়া খবরে রবিবার দুপুর ১টায় শাজাহানপুরের আমরুল ইউনিয়নের ক্ষুদ্র ফুলকোট টারপাড়া গ্রামের দুদু মিয়ার কবর থেকে তার পুঁতে রাখা লাশ উদ্ধার করে।
শাজাহানপুর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) শামীম জানান, আমরুল ইউনিয়নের ক্ষুদ্র ফুলকোট টারপাড়া গ্রামের দুদু মিয়ার কবরে হিটলুর লাশ পুঁতে রাখা হয়েছিল। কবরটির চারপাশে ধানে জমি রয়েছে। কবরের রাস্তার আশপাশে রক্তের দাগ অনুসরণ করে দুদু মিয়ার কবরে হিটলুর বেরিয়ে থাকা পা দেখতে পায় নিহতের স্বজনরা। এরপর বিষয়টি জানাজানি হলে স্থানীয় লোকজন পুলিশে খবর দেয়। নিহত হিটলুর পিঠ ঘাড় এবং দুই পায়ের গোড়ালি কাটা ছিল।
ধুনট থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) কৃপা সিন্ধু বালা বলেন, হিটলুর অত্যাচারে অতিষ্ঠ ছিল শাজাহানপুর ও ধুনট উপজেলার লোকজন। তার বিরুদ্ধে ধুনট থানায় মাদক, পুলিশের ওপর হামলা, জুয়া খেলাসহ ৮টি মামলা রয়েছে। গত তিন মাস আগে হিটলু জামিনে মুক্ত হয়। গতকাল শনিবার রাতে মালেক নামে এক যুবককে কুপিয়ে আহত করার ঘটনায় এলাকার প্রায় শত শত লোকজন একত্র হয়ে হিটলুকে ধরে এ ঘটনা ঘটায় বলে জানতে পেরেছি। ঘটনাস্থলে রক্ত পরে থাকলেও লাশ পাওয়া যাচ্ছিল না। আমরা স্থানীয় লোকজনের সহযোগিতা নিয়ে লাশের সন্ধান করছিলাম। গতকাল সারারাত আমরা ওই গ্রামেই ছিলাম। আজ রবিবার বেলা ১২টায় আমরুল ইউনিয়নের একটি কবরস্থানে স্থানীয় লোকজন পা দেখতে পেরে পুলিশে খবর দেয়। পরে শাজাহানপুর থানা পুলিশ গিয়ে লাশ উদ্ধার করে আমাদের কাছে হস্তান্তর করে। লাশ শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।
Leave a Reply