নিজস্ব প্রতিবেদক, টেকনাফ (কক্সবাজার)।
কক্সবাজার জেলা টেকনাফ উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিসের ডাক্তার না হয়ে প্রাণির চিকিৎসক বড় ডাক্তার পরিচয়ে উপজেলার গ্রামে-গঞ্জে ভুল চিকিৎসা দিয়ে গরু মেরে ফেলা ও সরকারি ঔষধ দিবে মর্মে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নেওয়া সহ ইত্যাদি প্রতারণার অভিযোগ উঠেছে জুয়েল বাসাক নামের উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তরের এক ভেটেরিনারি ফিল্ড অ্যাসিস্ট্যান্ট এর বিরুদ্ধে।
গেল বৃহস্পতিবার বিষয়টি যথাযথ প্রতীক চেয়ে টেকনাফ উপজেলার হোয়াইক্যং ইউপির কাটা খালি এলাকার ভুক্তভোগী মহিলা নছিমা খাতুন ভিডিও বার্তায় ওষুধ ও কাগজপত্র নিয়ে গণমাধ্যমের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট অনুরোধ জানিয়েছেন।
জানা যায়, বাংলাদেশ ভেটেরিনারি কাউন্সিলের নির্দেশনা মতে, ডাক্তারি সনদ ছাড়া কেউ চিকিৎসক পরিচয় দিতে বা প্রাণীর চিকিৎসা সেবা প্রদান করতে পারবেন না। সে নির্দেশনা উপেক্ষা করে ডাক্তারি সনদ ছাড়াই টেকনাফ উপজেলায় গ্রামে-গঞ্জে প্রাণি চিকিৎসক পরিচয় দিয়ে গরু-ছাগলের ভুল চিকিৎসা প্রদান করে আসছেন কথিত এই জুয়েল বাসাক।
নামধারী এই প্রাণি চিকিৎসক গবাদি পশুসহ অন্যান্য প্রাণির চিকিৎসা দিতে গিয়ে উচ্চমাত্রার অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহার করেন। তাদের এ ভুল চিকিৎসার কারণে অসংখ্য গরু-ছাগলসহ অন্যান্য গৃহপালিত পশু মারা যাচ্ছে।
ভুক্তভোগী ওই মহিলা নছিমা খাতুন জানান, আমার গবাদি পশু অসুস্থ হলে উপজেলা প্রাণিসম্পদ দেওয়া একটি নাম্বারে কল করিলে, জুয়েল বাসাক এসে চিকিৎসা করেন। চিকিৎসার শেষ হলে তাঁর ডাক্তারি ফি নামে প্রথমে ১ হাজার ৫০০ টাকা নিয়ে যায়। প্রাণিসম্পদ হাসপাতালে চিকিৎসার ফি নিয়ে সে আমাদের উপজেলা প্রাণিসম্পদ হাসপাতাল থেকে সরকারি ঔষধ দিবে মর্মে অফিসে নিয়ে যাওয়ার ভান করে তাদের পূর্ব পরিকল্পিত হোয়াইক্যং বাজারের একটি ফার্মেসি থেকে আরো ১ হাজার ৫০০ টাকা নিয়ে তাদের ইচ্ছে মতো কিছু ঔষুধ দেয়। পরে ঔষুধ গুলো অসুস্থ বাছুর কে খাওয়ার পরে চিকিৎসকের ভুল চিকিৎসার কারণে একটি বাছুর গরু মারা যায়। এর জন্য দায়ী জোয়েল বাসাক।
সূত্রে জানা যায়, টেকনাফ উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তর ও ভেটেরিনারি হাসপাতাল এর দীর্ঘদিন ধরে নেই প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ও ভেটেরিনারি সার্জন। যার ফলে উপ-সহকারী কর্মকর্তা (মোঃ- আব্দুর রহিম আজাদ) দুইবার বদলি হওয়ার পরও একই কর্মস্থলে বহাল রয়েছে। এই উপ-সহকারী মোঃ- আব্দুর রহিম আজাদ এর নেতৃত্ব (VFA) জুয়েল বাসাক হোয়াইক্যং ইউনিয়ন পরিষদের দায়িত্বে কালিন সময়ে বিভিন্ন খামারিকে সরকারি ঔষুধ পত্র দেওয়ার কথা বলে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিয়ে তাদের কন্টাক কৃত দোকান থেকে ইউনিয়নের ভুক্তভোগী সাধারণ খামারিদের সরকারি ওষুধ বিক্রি করছে। তার বিরুদ্ধে যথাযত ব্যবস্থা গ্রহণ না করা হলে টেকনাফে উপজেলা প্রাণিসম্পদ দুর্নাম বয়ে আনবে। তাই জুয়েল বাসাক সহ জড়িতদের বিরুদ্ধে অনতিবিলম্বে এই কথিত ডাক্তারদের গ্রেফতারপূর্বক জেল জরিমানা করে দৃষ্টান্ত মুলক শাস্তির ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট দাবি জানিয়েছেন গবাদিপশুর খামারিবৃন্দ ও কৃষকরা। না হয় উপজেলা প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের প্রতি মানুষের বিশ্বাস কমে যাবে।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত কতিপয় জুয়েল বাসাকের সাথে যোগাযোগ করা হবে চিকিৎসা বিষয়টি তিনি স্বীকার করেন। তবে বাছুরের মৃত্যু ও টাকা নেওয়ার বিষয়ের জানতে চাইলে প্রতিবেদককে অফিসে আসার জন্য অনুরোধ করেন।
প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের চট্টগ্রাম বিভাগীয় পরিচালক হুমায়ুন কবির জানান, বিষয়টি খুবই দুঃখজনক। তবে উল্লেখিত ব্যক্তিদের এই ধরনের কাজ করলে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। গুটিকয়েক অসাধু ব্যক্তিদের জন্য কেন? প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের বদনাম হবে।
Leave a Reply