নিজস্ব প্রতিবেদক, টেকনাফ ৭১
বনবিভাগের জায়গায় বাড়ি করার সুযোগ দিয়ে কক্সবাজার শীলখালী রেঞ্জ আওতাধীন মাতা ভাঙ্গা বিটে বনকর্মকর্তাদের নিয়োগ করা সিপিজি সভাপতি সাকের আহমদ এর বিরুদ্ধে বিপুল পরিমাণ টাকা হাতিয়ে নেয়ার গুরুতর অভিযোগ উঠেছে।
সাকের আহমদ এর পকেটে টাকা না আসলে নিমিশে ভেঙে দেয়া হয় গরিবের মাথা গোজার ঠাই টুকু। খোদ বনবিভাগের জায়গা না হয়েও সরকারী খাস জমিতে থাকা নির্মাণাধীন বাড়িঘর থেকে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে তিনি এমন অভিযোগ এলাকাবাসীর।
বৃহস্পতিবার (২ নভেম্বর) সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, কক্সবাজার টেকনাফ উপজেলাধীন শীলখালী রেঞ্জ মাতা ভাঙ্গা এলাকায় বেশ কিছু এলাকাজুড়ে বনভূমি খাস জমি রয়েছে এর কিছু পরে রয়েছে বিশাল এলাকাজুড়ে বনভূমি। স্থানীয় গরিব অসহায় মানুষ সাম্প্রতিক বেশ কয়েকটি সরকারী খাস জমি ও বনবিভাগের জমিতে বাড়ি ঘর নির্মাণ করেছেন। এমন সুযোগে সিপিজি সদস্য সাকের আহমদ এর নেতৃত্বে নির্মাণাধীন বাড়ি-ঘর থেকে বিপুল টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে। তার অন্যায়-আবদার পোষাতে না পারলে ভেঙে দেয়া হয় গরিবের ঘর-বাড়ি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্যক্তি জানান,ওই এলাকার স্থানীয় এক ব্যক্তির কাছ থেকে ১০ হাজার টাকা দাবি করেন এই ১০ হাজার টাকা দিতে অপারগতা করলে তার ঘরটি অভিযানের নামে ভেঙে দেন বলে দাবি করেন। একজন ভোক্তভোগী ব্যক্তি জানান ।সাকের আহমদের সাথে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিসহ বেশ কয়েকজন প্রভাবশালী ব্যাক্তির সাথে সখ্যতা রয়েছে। ঐ প্রভাবশালী সিন্ডিকেট তাদের ব্যাক্তিগত সুবিধা হাসিল করতেও এই ঘরটি ভেঙেছে বলে দাবি ভোক্তভোগী পরিবারের। মাতা ভাঙ্গা বিট কর্মকর্তা যোগদান করার পর থেকে নানা বিতর্কতা তার বিরুদ্ধে। এর আগেও টাকা না পেলে হুমকি-ধামকি দিয়ে ঘর ভেঙে দেয়ার একাধিক অভিযোগ রয়েছে। অনেকের নির্মাণাধীন প্রত্যেক ঘর থেকে দশ থেকে ত্রিশ হাজার টাকা নিয়েছে বলে দাবি করেন অনেকেই ।সিপিজি সংগঠনের সভাপতি সাকের আহমদ একটি মোটর বাইক নিয়ে দুয়েকজন সঙ্গী নিয়ে এলাকায় এলাকায় মহড়া দিয়ে দাপিয়ে বেড়ায় এবং এলাকাবাসীকে বলে আমি বনভূমির মালিক,এখানে কেউ ঘর করলে আমার অনুমতি লাগবে না হয় ঘর করতে পারবে না,পাশাপাশি একটি মামলার মালিক হতে হবে। সব কথা আমার কথায় চলবে আর আমি যা বলি তাই হবে।
এই বিষয়ে ভোক্তভোগী সাকের আহমদ এর বিরুদ্ধে অবৈধ সুযোগ সুবিধা নিয়ে ঘর ভেঙে দেওয়া এবং এলাকায় নির্মাণাধীন ঘর থেকে টাকার বিনিময়ে নির্মাণাধীন ঘর তৈরী করতে দেওয়াসহ ঘুষ দুর্নীতির অভিযোগ এনে কক্সবাজার জেলা দক্ষিণ বিভাগীয় বন কর্মকর্তা কার্যালয়, চট্রগ্রাম বিভাগীয় বন কর্মকর্তা কার্যালয় এবং প্রধান বনসংরক্ষণ কার্যালয়ে ৫ ই নভেম্বর রবিবার একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের কবরে বলে জানা গেছে।
এছাড়া স্থানীয়দের অভিযানের নাম দিয়ে ঘর ভেঙে দেয়ার হুমকি দিয়ে তাদের ব্যবহার করে টাকা আদায় করেন সাকের আহমদ। তার পকেটে টাকা পয়সা না গেলে বন বিভাগের কর্মকর্থাদের মিথ্যা তথ্য দিয়ে অভিযান পরিচালনা করান।যেখানে প্রত্যেক রেঞ্জের অধীনে এক জন বিট কর্মকর্তা দায়িত্ব পালন করেন। যেহেতু বনবিভাগের জনবল সংকট হওয়াতেই তারা কিছু এলাকার লোকদের কে নিয়ে একটি সিপিজি নামে সংগঠন করেন।কয়েকজন সদস্যকে নিয়ে একটি সংগঠন দিয়ে কার্যক্রম চালান।তাদেরকে ডেইলি কাজকর্ম করায় এবং বনভূমি পাহারা দেওয়ায়। যাদেরকে যেখানে দায়িত্ব দেওয়া হয় সেখানে কাজ করতে হয়। তাদেরকে প্রতিদিন কাজের বেতন দেওয়া ৪০০ টাকা বেতন প্রদান করা হয়। যেখানে সাকের আহমদ পাহাড় কাটা থেকেও মোটা অংকের টাকা পেয়ে থাকেন। এগুলো সেই বন বিভাগের নাম বিক্রি করে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নেয়।দিনের পর দিন বেপরোয়া হয়ে উঠেছে সেই।তবে তাকে টাকা না দিলেই গরিবের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবার পরামর্শ দেন বন কর্মকর্তাদেরকে ।
এই বিষয় নিয়ে মাথাভাঙ্গা বিট কর্মকর্তা অফিসারের কাছ থেকে জানতে চাইলে তিনি সাংবাদিকদের জানান, আমরা এই বিষয় নিয়ে জানতাম না।তবে তাদেরকে যেখানে আমরা দায়িত্ব দিই সেখানে তারা প্রতিদিন প্রতিনিয়ত দায়িত্ব পালন করে।তবে বিষয়টি যদি সত্যি হয়ে থাকলে আমরা তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব।
এই বিষয় নিয়ে শীলখালী রেঞ্জ কর্মকর্তা শাফিউল ইসলাম জানান, সিপিজি সভাপতি সাকের আহমদ এর যে অভিযোগটি রয়েছে সব মিথ্যা, এবং তার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ উঠেছে আমরা তদন্ত করে দেখব।
এই বিষয়ে কক্সবাজার জেলা দক্ষিণ বিভাগীয় বন কর্মকর্তা সরোয়ার আলম জানান, এই বিষয়টি তো আমি জানিনা তবে আমি ওখানকার রেঞ্জ অফিসার শাফিউল ইসলাম এর সাথে যোগাযোগ করে আমি বিষয়টি জেনে নিব।যদিও বা এত অভিযোগ যদি সত্যি হয়ে থাকে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য আমি রেঞ্জ অফিসারদেরকে নির্দেশনা দেব।
Leave a Reply