নাছির উদ্দীন রাজ, টেকনাফ।
কক্সবাজার টেকনাফের সরকারি টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজের শিক্ষার্থীদের তৈরি ফায়ার ফাইটার ড্রোন টি ১ কিলোমিটার দূরে গিয়ে আগুন নেভানোর কাজ করতে সক্ষম বলে দাবি করেছেন শিক্ষার্থীরা। যে দুর্ঘটনায় বা ঝুঁকিপূর্ণ ও দুর্গম এলাকায় আগুন নিয়ন্ত্রণ বা নেভাতে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা যেতে পারবেনা সেখানে আমাদের আবিষ্কৃত ফায়ার ফাইটার ড্রোনটি কাজ করবে। এটি ১০ কেজি সমমনা পানি বহন করতে পারেন। সরকারের পক্ষ থেকে আমরা যদি সহযোগিতা পায় তাহলে এর কাজ আরো বড় পরিসরে করে বিশ্বের দরবারে বাংলাদেশের সম্মান অক্ষোন্ন রাখতে চেষ্টা করব। তাই আমরা শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে দাবি জানাচ্ছি আমাদের স্কুলে যেন বিভিন্ন প্রশিক্ষণ সরঞ্জামাদির বরাদ্দ বেশি দেওয়া হয়।
শনিবার (২৭ সেপ্টেম্বর) দুপুরে টেকনাফ সরকারি টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজের বার্ষিক বিজ্ঞান মেলা ও প্রশিক্ষণ প্রদর্শনি অনুষ্ঠানে তা প্রদর্শন করা হয়। এ ছাড়া উক্ত বার্ষিক বিজ্ঞান মেলায় ইলেকট্রিক্যাল, মেকানিক্যাল ও আইসিটি তথা তথ্য প্রযুক্তি বিষয়ের ৩টি বিভাগের ১৫ টি স্টলে প্রদর্শন করেন।
এতে প্রথম স্থান লাভ করেন, ট্রান্সমিশন লাইন ফল্ট সেফটি প্রজেক্ট, ২য় স্থান অর্জন করেন স্মার্ট ট্রাফিক কন্টোল সিস্টেম ও ৩য় স্থান অর্জন করেন রেইন ডিটেকশন সিস্টেম।
১স্থান অর্জন কারারিরা বলেন, বর্মতানে দেশে বিদ্যুতের ব্যবহারের কারণে বিভিন্ন সময় দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছে। যার কারণে মানুষের মৃত্যু পর্যন্ত হচ্ছে। তাই কেউ যদি আমাদের উদ্ভাবিত ” ট্রান্সমিশন লাইন ফল্ট সেফটি প্রজেক্ট ” ব্যবহার করেন তাহলে দুর্ঘটনার আগে বিদ্যুৎ স্বয়ংক্রিয় ভাবে বন্ধ হয়ে যাবে। যার কারনে মানুষ দুর্ঘটনা থেকে বাঁচবে।
২য় স্থান অর্জন কারি বলেন, স্মার্ট ট্রাফিক কন্টোল সিস্টেম আমাদের দেশে অতীব গুরুত্বপূর্ণ। প্রতিটি শাহর বা মহাসড়কে স্মার্ট ট্রাফিক কন্টোল সিস্টেম না থাকায় প্রতিনিয়ত যানজট লেগে থাকে এবং অনেকেই সড়ক দুর্ঘটনার শিকার হন। এই পদ্ধতি ব্যবহার করলে ট্রাফিক আইনে শৃঙ্খলার পাশাপাশি কমবে যানজট। কমবে দুর্ঘটনার ঝুঁকি।
৩য় স্থান আধিকারি বলেন, রেইন ডিটেকশন সিস্টেম বস্তুুটি জানাবে আগাম সতর্ক বার্তা । কোন কলকারখানা অথবা রাইস মিলে ধান শুকানো অথবা বাড়ি ঘরে কোন খোলা জায়গায় যদি শুটকি মাছ অথবা যে কোন কিছুর দ্রব্য রৌদ্রের শুকাতে দেওয়া হয়েছে এমন সময় বৃষ্টি আসার সম্ভাবনা থাকলে তা আগে থেকেই মালিক কে জানিয়ে দেবে। এ বস্তুটির ব্যবহার করলে যে কোন মালিক আগাম বার্তা পেয়ে যাবে যার কারণে তাহার কোন কিছু ক্ষতি হবে না।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন, টেকনাফ টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ প্রকৌশলি মোহাম্মদ আতিকুর রহমান। টেকনাফ উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলির উপসহকারী মোহাম্মদ ফারুক হোসেন, সাবরাং উচ্চ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আনিছুর রহমান, সাবরাং গ্রান্ড মাস্টার মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতা সুলতান আহমদ বিএ সহ অনেকেই।
কলেজের অধ্যক্ষ বলেন, টেকনাফের মত জায়গায় এ রকম একটি টেকনিক্যাল বিদ্যাপীঠ সত্যি দেশের টেকনিক্যাল খাতে নতুন মাত্রা যোগ করবে। পাশাপাশি এ অঞ্চলের ছেলেরা আগে শুধু সাধারণ শিক্ষায় শিক্ষিত ছিল। যাদের অধিকাংশরা অর্ধশিক্ষায় ঝড়ে যেত। আজ টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজের কারণে টেকনাফের ছেলে সন্তানরা প্রকৌশলগত বিদ্যা অর্জন করে নিজেদের বেকারত্ব দূর করার পাশাপাশি দেশ ও জাতির মুখ উজ্জ্বল করে প্রকৌশল গত স্বনির্ভর বাংলাদেশ গড়ার চেষ্টা করছেন।
সুলতান আহমদ বিএ বলেন, স্বাধীনতা ৫৪ বছরে টেকনাফের ছেলেরা টেকনিক্যাল শিক্ষা থেকে বাদ ছিল। যারা কিছু পড়েছে তাও ঢাকা,চট্টগ্রামে গিয়ে। বর্তমানে এখন আমাদের অভিভাবকদের আর দূরে যেতে হবে না আমরা আমাদের টেকনাফেই সেই প্রযুক্তিগত শিক্ষা লাভ করতে সক্ষম হচ্ছে। তাই সকলকে প্রযুক্তিগত শিক্ষায় উদ্বুদ্ধ হতে ইস্কুলে আশার উদাত্ত আহ্বান জানাচ্ছি।
Leave a Reply