বিশেষ প্রতিবেদক, ৭১
আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে কক্সবাজারের টেকনাফে অনুষ্ঠিত হয়েছে যুব নেতৃত্বে নির্বাচনী সংলাপ ‘তারুণ্যের স্বপ্ন, আমাদের ইশতেহার, আমাদের ভবিষ্যৎ।
সোমবার (১৩ অক্টোবর) টেকনাফের হোটেল নেটংয়ে আয়োজিত এই সংলাপের আয়োজন করে সোসাইটি ফর হেলথ এক্সটেনশন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (শেড)।
অনুষ্ঠানের সহযোগিতায় ছিল একশন এইড বাংলাদেশ। সংলাপের মূল উদ্দেশ্য ছিল তৃণমূল জনগণ ও তরুণদের মতামতের ভিত্তিতে একটি জনগণ কেন্দ্রিক নির্বাচনী ইশতেহার প্রণয়ন করা।
অনুষ্ঠানে অংশ নেন বিএনপি থেকে কক্সবাজার-৪ (উখিয়া-টেকনাফ) আসনের মনোনয়নপ্রত্যাশী ও জেলা বিএনপির অর্থ সম্পাদক আবদুল্লাহসহ স্থানীয় শিক্ষক, নারী প্রতিনিধি, সাংবাদিক, ব্যবসায়ী ও তরুণ সমাজের নেতৃবৃন্দ। তরুণদের পক্ষ থেকে ইশতেহারভিত্তিক প্রস্তাবনা উপস্থাপন করেন টেকনাফ ইউথ হাবের সভাপতি মো. সোহেল ও সদস্য আয়শা আক্তার রিফা।
অনুষ্ঠানে তরুণদের উপস্থাপিত প্রস্তাবনায় উঠে আসে দুর্যোগ প্রস্তুতি ও মাদক প্রতিরোধ, অপহরণ রোধ ও নিরাপদ পানি নিশ্চিতকরণ, শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসেবার উন্নয়ন, টেকনাফ কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তর, শাহপরীরদ্বীপে টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণ এবং রোহিঙ্গা সমস্যার মানবিক ও টেকসই সমাধান।
এ সময় শেডের ডেপুটি ডিরেক্টর আবদুল মান্নান ও প্রকল্প সমন্বয়ক মোহাম্মদ আবদুল্লাহ বলেন, ‘এই কর্মসূচির লক্ষ্য তৃণমূল জনগণের কণ্ঠস্বরকে নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে পৌঁছে দেওয়া।
কক্সবাজার-৪ আসনে বিএনপি মনোনয়নপ্রত্যাশী জেলা বিএনপির অর্থ সম্পাদক আব্দুল্লাহ বলেন, তরুণ নেতৃত্বে এমন সংলাপ গণতন্ত্র ও টেকসই উন্নয়নের ভিত্তি আরো শক্তিশালী করবে। উখিয়া-টেকনাফ প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর হলেও বেকারত্ব, মাদক, অবকাঠামোগত দুর্বলতা ও পরিবেশ ঝুঁকির কারণে এ অঞ্চল পিছিয়ে আছে। তাই একটি সুন্দর পরিকল্পনা গ্রহণ করলেই এই অঞ্চলকে সমৃদ্ধ করা সম্ভব। এ ছাড়া তিনি উন্নয়নের জন্য পাঁচটি অগ্রাধিকারমূলক পরিকল্পনা তুলে ধরেন।
তরুণ ও কর্মসংস্থান : কারিগরি প্রশিক্ষণ, আইটি ইনস্টিটিউট, উদ্যোক্তা সহায়তা এবং পর্যটন, কৃষি ও মৎস্যভিত্তিক খাতে সহজ ঋণ ও প্রশিক্ষণ সুবিধা।
পর্যটন উন্নয়ন : টেকনাফ-সেন্টমার্টিন করিডরকে আন্তর্জাতিক পর্যটন গন্তব্যে রূপ দেওয়া এবং মেরিন ড্রাইভকে ইকোট্যুরিজম কেন্দ্রে হিসেবে গড়ে তোলা।
পরিবেশ ও জলবায়ু : উপকূলীয় বন, পাহাড় ও সমুদ্রতট সংরক্ষণে স্থানীয় অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা প্লান্ট ও টেকসই পানি ব্যবস্থাপনা চালু করা।
প্রযুক্তি ও শিক্ষা : প্রত্যন্ত অঞ্চলে স্মার্ট স্কুল, ডিজিটাল ল্যাব ও অনলাইন প্রশিক্ষণ কেন্দ্র স্থাপন করে তরুণদের ফ্রিল্যান্সিং ও ই-কমার্সে যুক্ত করা।
সুশাসন ও নাগরিক অংশগ্রহণ : স্থানীয় নীতিনির্ধারণে তরুণদের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করা এবং জনগণের মতামতের ভিত্তিতে উন্নয়ন বাজেট প্রণয়ন করা।
আবদুল্লাহ আরো বলেন, ‘এই পরিকল্পনাগুলো বাস্তবায়িত হলে পাহাড়, নদী-সমুদ্র ঘেরা উখিয়া-টেকনাফ হবে দক্ষিণাঞ্চলের শান্তি, উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির রোল মডেল।
তরুণরাই আগামী দিনের রাষ্ট্রনায়ক ও পরিবর্তনের কারিগর। তারেক রহমানের ৩১ দফা বাস্তবায়নের মধ্য দিয়ে তরুণদের স্বপ্ন বাস্তবে রূপ দেওয়া আমাদের দায়িত্ব।
অনুষ্ঠানের অতিথিরা অ্যাকটিভিস্টা টেকনাফ টিম, শেড এ-ফো-টি প্রকল্প এবং একশনএইড বাংলাদেশের এমন সময়োপযোগী উদ্যোগের প্রশংসা করেন এবং আগামী নির্বাচনী ইশতেহারে এ সংলাপের প্রস্তবনাগুলো অন্তর্ভুক্ত করার আশা ব্যক্ত করেন।
Leave a Reply