নিজস্ব প্রতিবেদক:কক্সবাজারের টেকনাফে নিজেদের অভ্যন্তরীণ কোন্দলে রোহিঙ্গাদের মাঝে মারামারি, পরে এক গ্রুপ আরেক গ্রুপের উপর আধিপত্য বিস্তার নিয়ে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে গুলাগুলি যেন নিত্য নৈমিত্তিক ব্যাপারে দাড়িয়েছে। গতকাল উপজেলার হোয়াইক্যং ইউপির ২২ নং রোহিঙ্গা ক্যাম্পে দিন দুপুরে গুলির শব্দে কেঁপে উঠেছে ক্যাম্প।
স্থানিয় দায়িত্বশীল সূত্রে জানা যায়, গতকাল (২১ আগষ্ট) কক্সবাজার জেলার টেকনাফের রইক্ষ্যং পুটিবনিয়া রোহিঙ্গা ক্যাম্প সংলগ্ন পাহাড়ে দুই গ্রুপের মধ্যে আধিপত্য বিস্তারের জেরে গোলাগুলি অব্যাহত রয়েছে। পাহাড়ে অবস্থানকারী পক্ষের গুলিতে রোহিঙ্গা ক্যাম্পের চারজন গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। এখনো দুই পক্ষ মুখোমুখি অবস্থানে রয়েছে। শুক্রবার বাদে জুমা হতে টেকনাফে ২২ নং রইক্ষ্যং পুটিবনিয়া রোহিঙ্গা ক্যাম্পের পাশের পাহাড়ে সক্রিয় থাকা উগ্রপন্থী দুই গ্রুপের মধ্যে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে গোলাগুলি শুরু হয়। পাহাড়ে অবস্থানকারী গ্রুপের এলোপাথাড়ি গুলিবর্ষণে সি-ব্লকের নুর হোসেন (৩৫), আব্দুর শুক্কুর (১৮), সি-১ এর ওমর ফারুক (১২), বি-২ এর ওসমান (১৭) গুলিতে আহত হয়। আহতদের ক্যাম্পের স্থানীয় হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। এই ঘটনার খবর পেয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর একটি দল ঘটনাস্থলে গেলে পরিস্থিতি শান্ত হয়। এই বিষয়ে ক্যাম্প পুলিশ ফাঁড়ির টুআইসি (এপিবিএন) এএসআই মাহমুদুর রহমান সুমন বলেন, নিরাপত্তা বাহিনী ফিরে যাওয়ার পর পরই আবারও উভয়পক্ষের লোকজন থেমে থেমে গুলিবর্ষণ করতে থাকে। রাত সাড়ে ৭টার পর পরিস্থিতি শান্ত হলেও উভয়পক্ষ মুখোমুখী অবস্থানে রয়েছে। রোহিঙ্গা ক্যাম্প সূত্রে জানা যায়, এই উগ্রপন্থি সংগঠনটি পাশের ক্যাম্পে স্বশস্ত্র অবস্থান নিয়ে ক্যাম্প নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি ইয়াবা কারবার নিয়ন্ত্রণ করছে। ক্যাম্পের রোহিঙ্গা নারীদের পাহাড়ে নিয়ে ধর্ষণ, নির্যাতন ও শ্লীলতাহানী করে আসছে। ইসলামী জিহাদের নামে লোকজনকে মাদক বাণিজ্যে বাধ্য করছে।
অনেক রোহিঙ্গা এই ধরনের অপকর্মের প্রতিবাদ করে ক্যাম্পে এসে স্বাভাবিকভাবে জীবন-যাপন করার চেষ্টা করছে। পাহাড়ে অবস্থানকারী গ্রুপ ক্যাম্পে এসে আধিপত্য বিস্তারের চেষ্টা করলে ক্যাম্পের লোকজন বাঁধা দেওয়ায় গোলাগুলির সূত্রপাত হয়। এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে ক্যাম্প ইন্চার্জ রাশেদুল হাছান জানান, রোহিঙ্গা দুই গ্রুপের আধিপত্য বিস্তার কে কেন্দ্র করে গুলাগুলির ঘটনা ঘটেছে। পুলিশ সহ আনশৃংখলা বাহিনী ঘটনাস্থলে মোতায়েন রয়েছে। অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীদের ধরতে আইনশৃংখলা বাহিনী কাজ করছে। উল্লেখ্য-২০১৭ সালের ২৫ আগস্টে মিয়ানমারের রাখাইনে সহিংস ঘটনার পর থেকে প্রাণভয়ে বাংলাদেশে পালিয়ে আসে সাড়ে সাত লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা। এসব রোহিঙ্গা আশ্রয় নেয় কক্সবাজারের উখিয়া এবং টেকনাফের ৩০টি আশ্রয় শিবিরে। নতুন পুরনো মিলিয়ে ওই ক্যাম্পগুলোতে এখন ১১ লাখ ১৮ হাজারেরও বেশি রোহিঙ্গা অবস্থান করছেন।###
Leave a Reply