মোঃ আশেক উল্লাহ ফারুকী, (টেকনাফ৭১)
করোনা ভাইরাস, গোজব এবং আমন্ন রমজানকে সামনে রেখে টেকনাফ সীমান্তের অসাধু ব্যবসায়ীরা ভোগপণ্যের দাম বাড়িয়ে দিচ্ছে। বিশেষ করে “করোনা” ভাইরাসের প্রভাব এবং গোজব ছড়িয়ে সীমান্তবর্তী বড় বড় বাজার সমূহে হিড়িং পড়েছে কেনাকাটার। হুমড়ি দিয়ে কেনাকাটা করছে ক্রেতা সকল। রীতিমতো প্রতিযোগীতা চলছে নিত্য প্রয়োজনীয় ভোগপণ্য কিনে মওজুদ রাখার। এ সুযোগে অসাধু ব্যবসায়ীরা চাল, ডাল, পেঁয়াজ, আদা, রসুন, তৈল সহ নিত্য পণ্য প্রয়োজনীয় ভোগপণ্যের দাম বাড়িয়ে হাতিয়ে নিচ্ছে ভোক্তাদের পকেটের টাকা। বিক্রেতারা ক্রেতাদের জানান, চাহিদার চাপ ও পণ্যের সরবরাহ এবং সংকটের কারণে বাড়ছে পণ্যের দাম। অসাধু ব্যবসায়ীরা ভোগপণ্যের কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে এভাবে ভোক্তাদের কাছ থেকে অতিরিক্ত টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে নীরবে। বাজার মনিটরিং কার্যক্রম জিমিয়ে পড়া এবং দোকানে প্রকাশ্যে পণ্যের তালিকা প্রদর্শন না থাকার কারণে অসাধু ব্যবসায়ীরা অশিক্ষিত এবং অসচেতন ভোক্তাদের কাছ থেকে পণ্যের অতিরিক্ত দাম হাপিয়ে হাতিয়ে নিচ্ছে। বাজার তদারকীতে প্রশাসন এবং ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনায় এসব অভিযোগ সত্য প্রমানিত হয়েছে।
(২১ মার্চ) একদিনে ভ্রম্যমান আদালত পরিচালনা করে টেকনাফ স্টেশনে ৩ টি দোকানে ২৫ হাজার টাকা জরিমান করা হয়েছে। সরেজমিন পরিদর্শনে দেখা যায় টেকনাফ সীমান্তের বড় বাজার, হোয়াইক্যং বাজার, বাহারছড়া, শামলাপুর বাজার, হ্নীলা বাজার, টেকনাফ পৌর শহর বাজার, সাবরাং সিকদার পাড়া বাজার, নয়াপাড়া বাজার এবং শাহপরীরদ্বীপ তিনপুল মাথার বাজার এবং গ্রামের দোকান গুলোতে ও অন্যান্য দিনের তুলনায় রয়েছে বাড়তি চাপ। করোনা ভাইরাস আতংক এবং গোজব ছড়িয়ে বেশী বেশী নিত্য পণ্য ক্রয় করছে ভোক্তারা। অনুসন্ধানে দেখা যায়, যিনি ক্রেতা কেজিতে চাল কিনতেন তিনি কিনছেন বস্তা চাল। এভাবে যিনি নিত্য প্রয়োজনী ভোগপণ্য কেজিতে কিনতেন, তিনি এখন কিনছেন ৫/৬ কেজিতে। বাড়তি কেনার চাপে দাম বেড়েছে, নিত্যপণ্য চাল, ডাল, রসুন, আদা, পিঁয়াজ সহ অন্যান্য পণ্যের এমনটাই বলেছেন। বিক্রেতারা বড় বাজার পায়কারী চালের দোকানে করোনা ভাইরাসের পূর্বে মিনিকেট চাল ১৮ শত টাকা বিক্রি হতো এবং বর্তমানে ২২ থেকে ২৩ শত টাকা। অন্যান্য নরমাল চাল বিক্রি হতো ১৩ শত টাকা এবং বর্তমানে ১৮ শত টাকা থেকে ১৯ শত টাকা পর্যন্ত। কেন বাড়তি দাম? জানতে চাইলে, ব্যবসায়ীরা সন্তোষ্ঠজনক জবাব দিতে পারেন না। প্রধান মন্ত্রীর ঘোষনা অনুযায়ী দেশের পর্য্যপ্ত পরিমান খাদ্য শস্য মওজুদ রযেছে। অথচঃ ব্যবসায়ীরা করোনা ভাইরাস এবং গোজবকে ফাঁদ তৈরী করে নিত্যপণ্যের কৃত্রিম সংকট সৃষ্ঠি করে ভোক্তাদের কাছ থেকে হাতিয়ে নিচ্ছে অতিরিক্ত টাকা। অন্য দিকে গত কয়েক দিনের ব্যবধানে ৪০/৫০ টাকা দামের পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ৯০ টাকা পর্যন্ত। ওই দোকানে ১ শত টাকার ডাল বিক্রি হচ্ছে ১১৫ টাকায়। কেজিতে ১৪০ টাকার রসুন বিক্রি হচ্ছে ২ শত টাকায়। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক টেকনাফ পৌর শহরের বাজারে বড় বড় অসাধু ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট সৃষ্টি করে পণ্যের দাম হাতিয়ে বাজারে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্ঠি করে ঘোলা ও পানিতে মাছ শিকার করছে। এছাড়া রয়েছে, ওজনে কারচুপি, মিটার ছাড়া দাড়ি পাল্লাহ ব্যবহার এবং প্রকাশ্যে মূল্য তালিকা না টাংগানো। অপর দিকে টেকনাফে শিক্ষার হার নীচে এবং অসেছেতাকে দায়ী করেছে, সচেতন ভোক্তারা। স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও রাজনৈতিক দলের নেতারা এ ব্যাপারে কোনো মাথা ব্যথা করছেন না। এ প্রসংগে টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ সাইফুল ইসলাম বলেন, সব কিছু প্রশাসনের দিকে থাকালে হবে না। সচেতন নাগরিক, জনপ্রতিনিধি ও রাজনৈতিক দলের নেতাদেরকে ও ভোক্তাদিকার সংরক্ষণ আইনের প্রতি সচেষ্ঠ থাকতে হবে।
এদিকে টেকনাফ মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) প্রদীপ কুমার দাশ বলেন, ব্যবসায়ীরা করোনা ভাইরাসের কারণে ভোগপণ্যের দাম বাড়ালে, সোজা মেরীন ড্রাইভে পাঠানো হবে বলে হুঁশিয়ারি দেন।###
Leave a Reply