আবুল কালাম আজাদ/মোঃ আরাফাত সানী, টেকনাফ
কক্সবাজার টেকনাফের পর্যটকদের স্বপ্নের প্রবাল দ্বীপ সেন্টমার্টিন নৌ রোডে লক্কর ঝক্কর বোট নিয়ে যাতায়াত করছে পর্যটকরা। দুর্ঘটনা ও প্রাণহানির আশঙ্কা করছে সচেতন মহল।
প্রতিবছর দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে স্বপ্নের দ্বীপ সেন্টমার্টিন দেখার জন্য পর্যটকরা টেকনাফে এসে ভিড় করে। পর্যটক মৌসুমে পর্যটকদের যাতায়াতে উন্নত মানের জাহাজ থাকে। জাহাজ ছাড়ার একটি নির্দিষ্ট সময় থাকে। এ সময়ের মধ্যে যে সমস্ত পর্যটক জাহাজ ঘাটে এসে পৌঁছায় তারা অনায়াসে অত্যাধুনিক জাহাজে করে যাতায়াত করতে পারে। এরপরও অনেক পর্যটক বিলম্বে এসে পৌছায়। তারা জাহাজ না পেয়ে দিকবেদিক ছুটতে থাকে। এ সুযোগকে কাজে লাগিয়ে একশ্রেণীর টেকনাফ-সেন্টমার্টিন যাত্রী পরিবহন সার্ভিস নামধারী বোট মালিকগণ পর্যটকদের লোভে ফেলে অনুমতি ও ফিটনেস বিহীন বোটে নিয়ে সেন্টমার্টিন নিয়ে যায়।
এ সমস্ত বোট সার্ভিস যাতায়াতের উপযোগী কিনা,
জীবন রক্ষাকারী সরঞ্জাম আছে কিনা, নৌ পরিবহন মন্ত্রণালেয় অনুমোদন আছে কিনা পর্যটকেরা জানেনা। এসমস্ত লক্কর ঝক্কর মার্কা বোটে ধারণ ক্ষমতা চেয়ে অতিরিক্ত যাত্রী নিয়ে সেন্টমার্টিন যাতায়াত করে থাকে। ফলে অনেক সময় দুর্ঘটনায় কবলিত হয়।
গত (৫ সেপ্টেম্বর) এই বোট সার্ভিসের সাথে যুক্ত হওয়া একটি স্পিডবোট অতিরিক্ত যাত্রী নিয়ে সেন্টমার্টিন যাওয়ার প্রাক্কালে নাফ নদীতে দুর্ঘটনায় কবলিত হলে ঘটনাস্থলে আটজন হতাহত হয়। এ ঘটনা নিয়ে স্থানীয় প্রশাসন ও আইন প্রয়োগকারী সংস্থা বোট মালিকদেরকে অনুমতি ছাড়া না চালানোর নির্দেশ দিলেও বোট মালিক সমিতি এ নির্দেশকে উপেক্ষা বোট চালাচ্ছে।
সেন্টমার্টিন, টেকনাফের পৌরসভার কে কে ঘাট ও শাহাপরীর দ্বীপ জেটি ঘাট পরিদর্শনে গিয়ে দেখা যায় ওই বোট মালিক সমিতির বোট মালিকগণ তাদের পরিত্যক্ত বোট গুলো মেরামত করছে । উদ্দেশ্য পর্যটন মৌসুমকে সামনে রেখে টেকনাফ-সেন্টমার্টিন পর্যটক পরিবহন করা। এই পরিত্যক্ত বোট নিয়ে দীর্ঘদিন ঘটনা-দুর্ঘটনার মধ্য দিয়ে যাতায়াত করলেও সংশ্লিষ্ট দায়িত্বশীল কর্তৃপক্ষের কোন নজরদারী নেই। স্থানীয় সূত্র জানায় এ বোট যাত্রী পরিবহন ছাড়াও বিভিন্ন অপরাধ কর্মকাণ্ডে ব্যবহৃত হয়। যেমন ইয়াবা বহন, মানব পাচার ও সাগরে জলদস্যুতা ইত্যাদি কাজে ব্যবহৃত হয়।
এ পরিবহন সার্ভিস গুলো পর্যটক ছাড়াও টেকনাফ-সেন্টমার্টিন থেকে অতিরিক্ত মালামাল নিয়ে যাতায়াত করে থাকে।
এ বিষয়ে টেকনাফ-সেন্টমার্টিন যাত্রী পরিবহন বোট মালিক সার্ভিসের সভাপতি আব্দু রশিদের এর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান আমাদের সমিতিতে ২৬ টি বোট ও ২০ স্পিডবোট রয়েছে। নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয় ও সংশ্লিষ্ট দপ্তরের যাতায়াতের অনুমোদন আছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন শুধুমাত্র ইউনিয়ন পরিষদের অনুমতি রয়েছে বলে জানান।
এ বিষয়ে সেন্টমার্টিন ইউনিয়ন চেয়ারম্যান নুর আহমদ এর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান স্থানীয় লোকজন যাতায়াতের বোটের বিষয়ে আমি অবগত রয়েছি। বাকি বোট বিষয়ে সমিতির সভাপতির সাথে আপনারা যোগাযোগ করতে পারেন।
এ বিষয়ে টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ সাইফুল ইসলামের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে ওনি বলেন লাইসেন্স ও ফিটনেসবিহীন কোন বোট সার্ভিস অবৈধভাবে চলাচলের সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
Leave a Reply