বিশেষ প্রতিবেদক, টেকনাফ
মানবতার উপহার রোহিঙ্গাদের জন্য টেকনাফের স্থানীয় জনগনের নানাবিধ ভোগান্তির পাশাপাশি মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে প্রকৃিতিক পরিবেশ। রোহিঙ্গাদের বসতির জন্য টেকনাফের বনভূমি প্রায় ধ্বংসের ধার প্রান্তে। এ বনভূমি ও পাহাড় নিধন থেমে নেয়।
মানবতার খাতিরে রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিতে গিয়ে হাজার হাজার একর বনভূমির গাছ পালা উজাড় করে এমনিতে টেকনাফের পরিবেশের ভারসাম্য হুমকির মুখে। বাকী বনভূমি ও পাহাড় টুকু রক্ষায়ও বন বিভাগ এবং পরিবেশ অধিদপ্তরে নেই কোন কার্যকরী পদক্ষেপ। তদুপরি বন বিভাগের কতিপয় অসাধু কর্মকর্তা ও এনজিওর যোগসাজশে বনভূমি উজাড় ও পাহাড় কর্তন অব্যাহত রয়েছে বলে অভিযোগ স্থানীয়দের।
অন্যদিকে দীর্ঘদিন ধরে স্থানীয় গরীব কৃষকদের পাহাড়ি জমিতে পান চাষ, ফলজ ও বনজ গাছের বাগান বন বিভাগ কর্তৃক বনভূমি উদ্ধারের নামে নির্বিচারে কর্তন পূর্বক স্থানীয় কৃষকদের উচ্ছেদ করলেও এনজিও কর্তৃক রোহিঙ্গাদের জন্য নিত্য বনভূমি ন্যাড়া করণ ও পাহাড় কাটার ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ যেন চোখ থাকিতে অন্ধ! এবিষয়ে স্থানীয়দের মাঝ জন্ম দিচ্ছে চাঁপা ক্ষোভ।
এহেন পরিস্থিতিতে সাম্প্রতিক সময়ে এনজিও সংস্থা এনজিও ফোরামের অর্থায়নে জাদিমুড়ার জাদি খাল, দমদমিয়া বিজিবি খাল ও মুছনি খালের উৎপত্তি স্থল পাহাড়ি ঝর্ণার মুখ বন্ধ করে রোহিঙ্গাদের পানীয় জলের ব্যাবস্থা করতে গহীন পাহাড়ে নির্মীত হচ্ছে ৩ টি বড় বাঁধ। ফলে একদিকে বাঁধাগ্রস্থ হতে যাচ্ছে উপরোক্ত ৩টি খালের পানি প্রবাহ। অপরদিকে পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট হওয়ার সাথে সাথে ঐ ৩ টি খালের পানির ওপর নির্বরশীল স্থানীয় কৃষকদের চাষাবাদ বন্ধ হয়ে যাওয়ার রয়েছে সমূহ সম্ভাবনা। তাছাড়া এসব বাঁধের মাটির জন্য নির্বিচারে কাটা হচ্ছে পাহাড়।
স্থানীয় সচেতন মহল কর্তৃক অভিযোগ পেয়ে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, জাদিমুড়ার জাদী খাল ও বিজিবি খালে উৎপত্তি মুখের গহীন পাহাড়ের ভিতর ৫০-৬০ জন রোহিঙ্গা শ্রমিক পাহাড় কেটে বাঁধ তৈরি কাজে নিয়োজিত রয়েছে।
এ ব্যাপারে টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ সাইফুল ইসলামের সাথে যোগাযো করা হলে তিনি জানান বিষয়টি তিনি অবত নন। স্থানীয় জন প্রতিনিধি মারফত আপত্তির অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিবেন।
এব্যাপারে টেকনাফ রেঞ্জের কর্মকর্তা সৈয়দ আশিকুর রহমানেনর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, বাঁধ নির্মান করে পানি সরবরাহের বিষয়টি আমি আসার পূর্ব থেকে চলমানন। মানবিক কারণে রোহিঙ্গাদের পানি সরবরাহের জন্য সুষ্ক মৌসুমে বাঁধ নির্মান হলেও বর্ষায় তা ভেঙ্গে ফেলা হয় বলে জানি। গত উপজেলা মিটিংয়ে বিষয়টি উত্তাপন করেছি। আর পাহাড়ের মাঠি কাটার বিষয়টি পাহাড়ি ছড়া থেকে মাটি উত্তোলন করে বাঁধের কাজ করা হয়। পাহাড়ের মাটি কাটার বিষয়টি সত্য হলে আমি এক্ষুনি ব্যবস্থা নিচ্ছি।
Leave a Reply