শামসুল আলম শারেক, টেকনাফ (কক্সবাজার) প্রতিনিধি।
কক্সবাজার টেকনাফের হ্নীলা বাজারের নতুন অর্থবছরে ইজারা আদায় নিয়ে সরকারী মুল্য তালিকান উপেক্ষিত বলে অনেকেই অভিযোগ করেছেন। তালিকার বাইরে ইজারা নেওয়ার ফলে গরীবের পেটে পড়ছে লাথি। সীমান্ত উপজেলা টেকনাফের হ্নীলা বাজার সংশ্লিষ্ট ফুটপাত ব্যবসায়ীদের শত করা ৯০ ভাগ ব্যবসায়ী গরীব।
দিনে এনে দিনে বিক্রি করে ইনকাম করা টাকার উপর তাদের দৈনন্দিন সংসার চলে।
কিন্তু ফুটপাতে বসে ব্যবসা করতে গিয়ে তাদের উপর ইজারাদার সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের যে জুলুম, তা অতীতের সকল রেকর্ড ছাড়িয়েছে বলে অনেকেই নিজ ফেইসবুকে প্রকাশও করেছেন বলে জানাগেছে। সরকারী প্রদত্ত তালিকার বাইরে গিয়ে ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ইজারা আদায় করছে বলে অভিযোগ ভুক্তভোগীদের। এ নিয়ে খোদ ইজারা ডাক কারীদের বিরুদ্ধে অতিরিক্ত মুল্যে বাজার ইজারা নেয়া নিয়েও নানাপ্রশ্ন তুলেছে সাধারণ ব্যবসায়ীরা । এহেন কর্মকান্ডের ফলে বিভিন্ন রকম ব্যবসায়ীদের অনেকে হ্নীলা বাজারে ব্যবসা করা থেকে মূখ ফিরিয়ে নিচ্ছে বলেও জনশ্রুতি রয়েছে।
এমন কি নির্দিষ্ট বাজারের বাইরে গ্রামের এলাকায় কেউ কোন কিছু বিক্রি করলেও তাদের নির্ধারিত চক্রের মাধ্যমে বাজারের নামে ইজারা আদায় করে। মনে করেন ইউএনও নির্ধারিত তালিকায় একটি গরু বিক্রি করে যদি ৩৫ হাজার টাকাপায় তার মধ্য থেকে ইজারাদার হাসিল হিসেব নেয়ার নিয়ম রয়েছে ৩৫০ টাকা, এবং ৩৫ হাজার ১০০ শ থেকে তদউর্ধ্বে সর্বোচ্চ ৫০০ টাকা নেয়ার লিখিত তালিকা থাকলেও তারা ২ হাজার ৫০০ টাকা থেকে ৩ হাজার টাকাপর্যন্ত ইজারা আদায় করে থাকে বলে অভিযোগ করেছেন হ্নীলা বাজার কমিটির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক জহির।
আবার একটি গরু জবাই করে বিক্রি করলে প্রতিদিন ঐ দোকান থেকে তালিকা মতে হাসিল নেয়ার নিয়ম রয়েছে ১৫০ টাকা,কিন্তুু এমন অনেক হাজারো রেকর্ড রয়েছে যে, প্রতি দোকান থেকে ১০০০ টাকা থেকে ১৫০০ টাকাপর্যন্ত প্রতিদিনই ইজারা আদায় করে থাকে তারা।
যার কারণে গরুর মাংসের দাম ৮০০ শ টাকা থেকে ১০০০ টাকা বিক্রি করতে হয় বলে অনেকের অভিমত। এইভাবে ছোট,বড়,কম,বেশী সকল পন্য থেকে সরকার নির্ধারিত মুল্য তালিকার অতিরিক্ত ২/৩ গুন বেশী ইজারা আদায় করলেও সংশ্লিষ্ঠ প্রশাসনের কোন নজরধারী না থাকায় একদিকে ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে ঘরোয়া বিক্রেতারা, অন্যদিকে তার চেয়ে ও বেশী ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে ফুটপাতের ক্ষুদ্রব্যবসায়ীরা।
ইতিমধ্যে নতুন ইজারাদারদের অতিরিক্ত অর্থ আদায়ের অভিযোগ তুলে বাজার কমিটির সাধারণ সম্পাদক তাহার ব্যক্তিগত ফেইসবুকে স্ট্যাটাস দিলে তা সমর্থন করে বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।
এবিষয়ে জানতে চাইলে হ্নীলা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ও বাজার কমিটির সভাপতি রাশেদ মাহমুদ আলী বলেন, সরকারী মূল্য তালিকার বাইরে কেউ অতিরিক্ত ইজারার টাকা ( হাসিল) আদায় করতে পারবেনা। তবে অতিরিক্ত ইজারা ( হাসিল) আদায়ের যে খবর শুনা যাচ্ছে ঐ অভিযোগের বিষয়ে আমি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবরে মৌখিক ভাবে অবহিত করেছি।
বাজার কমিটিরসাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক জহির আহমদ বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে হ্নীলা বাজারের নতুন ইজারাদারেরা বিভিন্ন ব্যবসায়ী থেকে অতিরিক্ত ইজারা আদায় করছে বলে একাধিক ভুক্তভোগীরা অভিযোগ করলে বাজার কমিটির সাধারণ সম্পাদক হিসেবে তা গোপনে তদারকী করে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া যায়।
তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থানিতে
সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের প্রতি জোর দাবী জানাচ্ছি।
এবিষয়ে বাজার ইজারাদার এডভোকেট রশিদুল আলম চৌধুরী বলেন, হ্নীলা বাজারের ইজারা বা হাসিল অতীতের মত ন্যায়ের বা সহনশীলতার মধ্যে নেয়া হচ্ছে। বর্তমানে হ্নীলা বাজার কমিটির মিয়াদোর্তীর্ন। কমিটির সাধারণ সম্পাদক দাবী করা ব্যক্তিটি নিজের ইচ্ছাচরিতার্থ করতে এমন অপ প্রচার চালাচ্ছেন বলে মনে করি । তবে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাও ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান বাজারের মুল্যতালিকা টাঙ্গিয়ে দিতে নির্দেশ দিলে তা অবশ্যয় আমরা পালন করতে বাধ্য । আমার জানামতে উপজেলার কোন ইজারাকৃত বাজারে এখনো কেউ মুল্যতালিকা টাঙ্গাইনি।
এব্যাপারে টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ আদনান চৌধুরীর বক্তব্য নিতে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে, তিনি মোবাইল রিসিভ না করায় বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।
Leave a Reply