• অনলাইন ডেস্ক:
এক লাখ ৮০ হাজার রোহিঙ্গাকে ফেরত নেয়ার মতো পরিচয় শনাক্তের বিষয়টি নিয়ে আরকান আর্মির বক্তব্য পাওয়া গেছে।
মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের নিয়ন্ত্রণে থাকা সস্বস্ত্র গোষ্ঠীটির মুখপাত্র খাইং থু খা বলেছেন, মিয়ানমার মিলিটারি কন্সপিরেসি থিওরী ছড়াচ্ছে আন্তর্জাতিক মহলের কাছে। বাংলাদেশকে তারা সন্তুষ্ট করার চেষ্টা করছে যে রোহিঙ্গাদের ভেরিফাইড হওয়ার খবর দিয়ে।
বাংলাদেশের কাছে বলা জান্তার এমন কথাকে আরাকান আর্মি ফাঁকা বুলিই মনে করে জানিয়ে খাইং থু খা বলেন, “মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর অস্থিত্বই তো নাই রাখাইনে এবং সেনাবাহিনীর তো সত্যি সত্যি এখন ওই পাওয়ার নাই যে আরকান আর্মির সাথে ফ্রন্টে মুভ করবে।”
রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে কাজ করা ‘উন্মুক্ত সাংবাদিক’ তানভীরুল মিরাজের সাথে এমন কথা হয় খাইং থু খা’য়ের সাথে। সাংবাদিক মিরাজ টিটিএনের কাছে সেসব কথা তুলে ধরেন।
সাংবাদিক মিরাজ টিটিএনকে বলেন, ‘বাংলাদেশ চেষ্টা করছে রোহিঙ্গা বিষয়টি সমাধান করার জন্য। এই তৎপরতা খুবই পজিটিভ। মিয়ানমার যে কথা গুলো বলছে যখন তাদের ওপর বিশ্বের নানান চাপ। আর তাদের জনগনের দীর্ঘদিন সশস্ত্র আন্দোলন করছে গণতান্ত্রিক অবস্থা ফিরিয়ে আনার জন্য।’
“আমি বেশ কয়েকবছর যাবৎ ধরে এই অঞ্চলের আর্মড গ্রুপগুলো নিয়ে কাজ করছি। বাংলাদেশের এই মুহুর্তের প্রত্যেকটি স্টেপস ও ডিপ্লোমেটিক মুভ খুবই গুরুত্বপূর্ণ এবং সেনসেটিভ। রাখাইন জুড়ে ননস্ট্যাট স্টেকহোল্ডার্স। রাখাইনের সাথে আমাদের ল্যান্ড, নদী ও সমুদ্র সীমা আছে। বাংলাদেশ বে-অব-বেঙ্গলের তাদের উপস্থিতি বাড়াতে কাজ করছে। সেক্ষেত্রে বাংলাদেশের যেকোনো ধরনের ভুল মুভ বে-অব-বেঙ্গলে প্রভাব ফেলবে। বেশ কয়েকদিন যাবৎ ধরে আরকান আর্মি আমাদের জাহাজ, জেলে, নৌকা ওসব ধরে জিম্মি করে রেখে দিচ্ছে। এই ক্ষেত্রে আমাদের আরকান আর্মির সাথে এনগেজমেন্ট জরুরী।” বলেন সাংবাদিক মিরাজ।
শুক্রবার বিকেলে বাংলাদেশ সরকারের প্রধান উপদেষ্টার ফেইসবুক পেইজ থেকে জানানো হয়, এক লাখ ৮০ হাজার রোহিঙ্গার পরিচয় নিশ্চিত করেছে মিয়ানমার। যাদের ফিরিয়ে নেয়া যেতে পারে।
এমন খবরের পর থেকেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমে বিশেষজ্ঞরা মতামত দিতে থাকেন রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন বর্তমান পরিস্থিতিতে সম্ভব কিনা।
“রাখাইন অঞ্চলের কর্তৃত্ব কার্যতভাবেই মায়ানমারের জান্তার নেই। ওই ভূখণ্ডের ৯০% এখন আরাকান আর্মির নিয়ন্ত্রণে। এমন পরিস্থিতিতে জান্তা কীভাবে ১ লাখ ৮০ হাজার রোহিঙ্গাকে প্রত্যাবাসন করবে? কোথায় করবে? আরাকান আর্মি কী তা করতে দেবে?” এমন মতামত আসে।
শরণার্থী বিশেষজ্ঞ আলতাফ পারভেজ তার ফেইসবুক স্ট্যাটাসে লিখেন- “বাংলাদেশের অন্তত একটা মায়া-মরীচিকা থেকে মুক্ত হওয়া উচিত যে, রোহিঙাদের আরাকানে ফেরত যাওয়ার ব্যাপারে মিয়ানমারের কেন্দ্রীয় সরকার এখন প্রধান গুরুত্বপূর্ণ পক্ষ নয় আর; আলাপ করতে হবে আরাকান আর্মি ও রাখাইন নেতৃবৃন্দের সঙ্গে। কারণ, এটা ২০১৭ সাল নয়, ২০২৫ সাল। নাফ নদী দিয়ে অনেক পানি গড়িয়ে গেছে। মিয়ানমারের সঙ্গে বাংলাদেশের সীমান্তই নেই এখন আর। অঙ্ক পরীক্ষার দিন বাংলা উত্তর পড়ে আসলে মুশকিল।”
Leave a Reply