নাছির উদ্দীন রাজ, টেকনাফ।
কক্সবাজার সীমান্ত জনপদ টেকনাফে মাদকের বাজারে দাপটে বেড়াচ্ছে ক্রিস্টাল মেথ বা আইস। বিশ্বের এ উন্নত মানের মাদকের চাহিদা বৃদ্ধি , দামে ও মানে দ্বিগুন হওয়ায় ইয়াবা সহ অন্যান্য মাদকের বাজারে ভাটা আসলেও পূর্ণ জোয়ার এখন ক্রিস্টাল মেথ বা আইসে বলে মনে করেছেন অনেকেই।
গত ৩ (তিন) মার্চ টেকনাফে প্রথম ক্রিস্টাল মেথ বা আইস মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের অভিযানে ধরা পড়লেও পরবর্তীতে বিভিন্ন অভিযানে পুলিশ, র্যার্ব ও বিজিবি সহ আইন শৃঙ্খলা বাহিনী কয়েক দফায় বড় বড় চালান উদ্ধার করেছে, যাহার আনুমানিক বাজার মূল্য ছিল ১০ কোটি টাকার ও বেশি।
স্থানিয় সচেতন মহলের দাবি , ঐ মাদক দামে দ্বিগুন হওয়ায় ইয়াবার মাদার ব্যবসায়ীরা নবী – প্রবীন সিন্ডিকেট করে নতুন এ মাদক বানিজ্য চালিয়ে যাচ্ছে । এ রকম চলতে থাকলে দেশের যুবসমাজ ও ভবিষ্যৎ প্রজন্মের সিংহভাগ পড়ালেখা ও অন্য কর্ম ছেড়ে দিয়ে সহজে এই পেশায় আত্মনিয়োগ করছে বলে ধারনা করা হচ্ছে ।
সীমান্তে পর্যাপ্ত আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর টহল জোরদার থাকলেও তাদের ফাকি দিয়ে রাতের আধাঁরে বা বিভিন্ন কৌশলে নদী এবং সাগর পথে প্রবেশ করিয়ে মাদক কারবারিদের হেফাজতে নিয়ে আসেন বলে তথ্য সূত্রে জানাগেছে।
বড় ধরনের শিকড় না গজাতেই বিশেষ বা দৃশ্য মান সাড়াশি অভিযান পরিচালনা না করলে তাহার বিস্তার রোধ সম্ভব হবে না বলে জানিয়েছেন স্থানীয় সুশীল সমাজের প্রতিনিধি গণ ।
কেন মাদক কারবারিরা ইয়াবা ছেড়ে আইসে ব্যবসায় জড়াচ্ছে, কোন প্রকার লোকের কাছে আইসের চাহিদা বেশি ও তা বন্দের কারণ কি জানতে চাইলে প্রশ্নের জবাবে (ডিএনসির) মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর টেকনাফ বিশেষ জোনের সহকারী পরিচালক সিরাজুল মোস্তফা জানান,
মিডিয়ার প্রচার ও মানুষের নতুন কৌতুহলের কারণে বেশি মাদক কারবারিরা ঐ পেশায় (আইস ব্যবসায়) বেশি ইনবেষ্ট করছে। ইয়াবা যারা সেবন করছে তাদের কাছে মূলত এর চাহিদা বেশী। তিনি আরো বলেন, রাজনীতিবিদরা চাইলে ও সচেতন হলে এবং সীমান্ত আরো বেশী সিল (বন্দ) করলে তা বন্দ হবে বলে মনে করি।
টেকনাফ মডেল থানার ওসি (তদন্ত) আব্দুল আমিন জানান, আমরা আসার পর থেকে থানায় যে মামলা হয়েছে তাহার সিংহভাগই মাদকের মামলা। মাদকের মামলা বেশী হওয়ার কারণ জাতে চাইলে প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, সীমান্ত জনপদের বেশীর ভাগ মানুষ ঐ পেশার সাথে সম্পৃক্ত তাই। তবে মাদক নির্মূলে আমাদের অভিযান চলমান রয়েছে।
প্রজন্ম থেকে প্রজন্ম বিধ্বংসকারী মাদকের বিস্তার সমাজে যেভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে তাতে সচেতন অভিভাবক মহল সহ অনেকেই উদ্বিগ্ন। মাদকাসক্তদের মধ্যে ৮৫ শতাংশের বয়স ১৮ থেকে ৩৫ বছরের মধ্যে। না বুঝেই অনেক যুবক এ পথে পা দিয়ে বিপথগামী হয়ে সমাজ বা পরিবারে অনেকেই নির্যাতন করছে। তা বন্দে টেকনাফের মানুষ আবারো বড় ধরনের সামাজিক সচেতনতার পাশাপাশি বিশেষ আইন শৃঙ্খলা বাহিনী অভিযান কামনা করেছেন।
Leave a Reply