জিয়াবুল হক, টেকনাফ
কক্সবাজার টেকনাফ পৌরসভার লামার বাজার এলাকার দোকান গুলোতে প্রতিদিন হাজার হাজার টাকার নিষিদ্ধ কারেন্টজাল মিয়ানমার থেকে অবৈধভাবে পাচার করে অবাধে বিক্রি করছে। ফলে বঙ্গোপসাগর ও নাফনদীর ডিমওয়ালা মাছগুলো নির্বিকারে নিধন চলছে। ফলে এলাকায় নানান প্রকারের জাতীয় মাছ বিলুপ্তির পথে।
জানা যায়, টেকনাফ উপজেলায় বঙ্গোপসাগর ও নাফনদীর মাছ সারা দেশের জন্য বিখ্যাত। এসব সাগর-নদী গুলোতে জেলেদের জালে মাছ পড়তেছে এ সুযোগে হাট-বাজারে প্রতি বছরের ন্যায় এ বছরও পৌরসভার লামার বাজারসহ বিভিন্ন হাট বাজারের মিয়ানমার থেকে পাচার হয়ে দোকানে প্রকাশ্যে নিষিদ্ধ কারেন্ট জাল অবাধে বিক্রি করছে। সংশ্লিষ্টরা দেখেও না দেখার ভান করে আছে।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, টেকনাফ পৌরসভার লামার বাজার এলাকার লামার বাজার গনি সওদাগরের দোকানের কর্মচারি জাহেদ দীর্ঘ দিন ধরে অবৈধ ভাবে মিয়ানমার থেকে কারেন্ট জাল পাচার করে বিভিন্ন শ্রেনীর লোকজনকে মাসোহারা দিয়ে ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। এমনকি গত তিন মাস আগে দমদমিয়া বিজিবি চেকপোস্ট কারেন্ট জাল নিয়ে দোকানে আসার সময় সিএনজি থেকে লাফ দিয়ে পালিয়ে যায়। সেই মামলায় বিজিবি জাহেদকে পলাতক আসামি করে। জিয়াবুল সওদাগর, মুজিব সওদাগর, মন্নান সওদাগরের দোকানে প্রকাশ্যে মিয়ানমারের হাজার হাজার টাকার কারেন্ট জাল বিক্রি করে আসছে। এছাড়া প্রতিদিন পাইকারি দরে লাখ লাখ টাকার কারেন্ট জাল এ দোকান গুলোতে বিক্রি হয়ে থাকে। এসব কারেন্ট জাল এই এলাকার দেশীয় মাছের ব্যাপক ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
সাবরাং ইউনিয়নের মুন্ডার ডেইল এলাকার মো. ইলিয়াস বলেন, শীত মৌসুমের সঙ্গে সঙ্গেই গ্রামের মানুষ কারেন্ট জাল কিনে এনে বঙ্গোপসাগর ও নাফনদীতে ব্যাপক হারে মাছ শিকার করছে। এভাবে মাছ শিকার করলে মাছের বংশ নির্বংশ হয়ে যাবে।‘
শাহপরীরদ্বীপের মাঝের পাড়া এলাকার
রহমত উল্লাহ বলেন, ‘আমিসহ গ্রামের অনেকেই টেকনাফ পৌরসভার লামার বাজার এলাকার জিয়াবুল, মন্নান সওদাগর, গনি সওদাগরের দোকান থেকে কারেন্ট জাল কিনে এনে তা সাজিয়ে বিক্রি করি। এ বছর ব্যাপক বৃষ্টিপাত হওয়ায় নাফনদী ও বঙ্গোপসাগরে মাছ বেশি পড়তেছে। এবছর কারেন্ট জাল বিক্রি করে আমরা লাভবান হয়েছি।’
এদিকে, নাম প্রকাশ না করা শর্তে একাধিক ক্ষুদ্র জাল ব্যবসায়ী জানান, টেকনাফ উপজেলার সব চেয়ে বড় কারেন্ট জালের পাইকারি ব্যবসার কেন্দ্র হলো পৌরসভার লামার বাজার এলাকায়। কয়েকজন ব্যবসায়ী এ দোকান গুলোতে লাখ টাকার মিয়ানমারের অবৈধ কারেন্ট জালের পাইকারির ব্যবসা করে থাকেন। এ দোকান গুলো থেকে প্রতিদিন লাখ লাখ টাকা মূল্যের কারেন্ট জাল ছোট ছোট ব্যবসায়ীরা পাইকারি মূল্যে কিনে নিয়ে উপজেলার বিভিন্ন হাটে বাজারে খুচরা বিক্রি করে থাকেন।
টেকনাফ উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা দেলোয়ার বলেন, ‘এবারে মৎস্য সপ্তাহে অভিযান পরিচালনা করে বেশ কিছু কারেন্ট জাল পুড়িয়েছি। এই দোকান গুলোর বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
Leave a Reply