মোঃ আরাফাত সানি, টেকনাফ
কক্সবাজার টেকনাফ উপজেলার পশ্চিম বঙ্গোপসাগর উপকূলে মাছ শিকারের নামে বেশীর ভাগ নৌকা ও ট্রলার এখন মাদক, মানব পাচারের নিরাপদ বাহনে পরিনত হয়েছে। উপকূলীয় এলাকার লোকজন সুত্রে জানা যায়। টেকনাফ উপজেলার শাহপরীর দ্বীপ হতে বাহার ছড়া ইউনিয়নের শামলাপুর পুরান পাড়া সমুদ্র উপকূলীয় এলাকায় মাছ শিকারে নামে প্রতি নিয়ত নিত্যনতুন নৌকা ও ট্রলার তৈরী করে সাগরে নামানো হচ্ছে। এদের একটি মাত্র কারন হচ্ছে মাছের শিকারের নামে মাদক ও মানব পাচার করা। স্থানীয় সুত্র আরও জানায়, ইদানিং মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারের অধিকাংশ মালিকগণ সারাদিন টেকনাফ ও উখিয়া উপজেলার বিভিন্ন রোহিঙ্গা শরনার্থী ক্যাম্প থেকে লোক সংগ্রহ করে উপকূলীয় এলাকার মেরিন ড্রাইভ সংলগ্ন এলাকার পূর্ব পাশে ঝুপড়ি বাসায়, পাহাড়েরসহ বিভিন্ন স্থানে জড়ো করে রাখে।
সন্ধ্যা নামার সাথে সাথে নৌকা ও ট্রলার মালয়েশিয়াগামী লোকজন উঠানোর প্রতিযোগিতা শুরু হয়। গভীর রাত পর্যন্ত মালয়েশিয়াগামী লোকজন উঠিয়ে দিয়ে ভোর রাতে বাড়িতে চলে আসে। প্রতিজন মালেয়শিয়াগামী লোকজনের বিপরীতে নেওয়া হয় ২৫/৩০ হাজার করে টাকা। এই নৌকা ও ট্রলার মিয়ানমারে জলসীমায় বড় ট্রলারে উঠিয়ে দিয়ে নিজ গন্তব্যে ফিরে আসার সময় নিয়ে আসে ইয়াবার বড় বড় চালান। যা ইদানিং টেকনাফ উপজেলার পশ্চিম বঙ্গোপসাগরের প্রতিটি নৌকার ঘাটে ইহা খালাস করা হয় বলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েক জন জেলে ও বোট মালিক জানান।
এদিকে স্থানীয় সচেতন মহল জানান, টেকনাফে জেলেদের মাছ শিকারের কয়টি নৌকা, কয়টি ট্রলার রেজিষ্ট্রেশন ভুক্ত আছে তার কোন পরিসংখ্যান সংশ্লিষ্ট উপজেলা মৎস্য অধিদপ্তরে বা প্রশাসনে নেই বলে জানা যায়। ফলে জেলে নামধারী নৌকা ও ট্রলারে মালিকগণ এই অবৈধ কর্মকান্ডে জড়িয়ে পড়েছে। সাগরে মাছ শিকারে যাওযা এলাকা বিক্তিক নিদিষ্ট স্ব-স্ব ঘাট রয়েছে। প্রতিটি ঘাটে একজন করে সভাপতি রয়েছে। এই সভাপতিগণ এই অবৈধ কর্মকান্ডে বেশীর ভাগই জড়িত বলে জানা যায়। এদের কে আটক করে জিজ্ঞেসাবাদ করা হলে আসল থলের বেড়াল বেরিয়ে আসবে বলে স্থানীয় লোকজনদের ধারনা।
অনিবন্ধিত ট্রলারের বিষয়ে টেকনাফ উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা মো দেলোয়ার হোসাইন এর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, আমাদের নিবন্ধিত ট্রলার ছাড়া বাকি অবৈধ ট্রলারের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করে শীগ্রই অভিযান পরিচালনা করা হবে।
টেকনাফ মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ হাফিজুর রহমানের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে পুলিশ আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ইয়াবা ও মানবপাচারকারী যত বড় শক্তিশালী হোক না কেন।
দৈনিক কক্সবাজার একাত্তর
Leave a Reply