নাছির উদ্দীন রাজ, টেকনাফ।
কক্সবাজার টেকনাফের হ্নীলা ইউনিয়নের পূর্ব পানখালীর আবুহুরাইরা মাদরাসার নূরানী বিভাগের ১ম শ্রেণীর ছাত্র অপহৃত শিশু সোয়াদ বিন আব্দুল্লাহ কে জীবিত অক্ষত অবস্থায় ফেরত পেতে প্রশাসনের সহযোগিতা কামনা করে সংবাদ সম্মেলন করেছেন সোয়াদের পরিবার। তবে ইতি মধ্যে পুলিশ অভিযান চালিয়ে শিশু সোয়াদের অপহরণের সাথে জড়িত থাকার দায়ে ৫ জনকে আটক করেছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। কিন্তুু ইতি মধ্যে শিশু টিকে মুক্তি দিতে ২০ লক্ষ টাকা মুক্তি পন দাবি করেছেন অপহরণ চক্রের সদস্যরা। ২০ লক্ষ টাকা থেকে ১৯ টাকা কম হলেও শিশু সোয়াদের দেহ টুকরো টুকরো করে বস্তায় ভর্তি লাশ বাড়িতে পাঠানোর হুমকি দিয়ে মোবাইলে বর্তা পাঠায় শিশু সোয়াদের মা নুরুজ্জাহানের কাছে । যা এখনো রেকর্ড আছে। অথচ অপহরণের ৬ দিন পার হলেও তাকে উদ্বার করতে না পারায় অবশেষে শিশু সোয়াদ কে অক্ষত অবস্থায় ফিরে পেতে তাহার পরিবারের পক্ষ থেকে সংবাদ সম্মেলন করা হয়।
বুধবার (১৩ মার্চ) বিকালে হ্নীলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রাশেদ মাহমুদ আলীর নিজস্ব কার্যালয়ে উক্ত সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
এতে শিশু সোয়াদের পরিবারের সদস্যরা দাবি করেন, গত ৯ মার্চ দুপুরে মাদরাসা ছুটির পরে হ্নীলা পুর্বপানখালীস্থ আবুহুরায়রা (রাঃ) মাদ্রাসার ১ম শ্রেণীর ছাত্র একই এলাকার কাতার প্রবাসী হাফেজ আব্দুল্লাহর ছেলে সোয়াদ বিন আব্দুল্লাহ (৬) কে উম্মে সালমা নামক এক মহিলার নেতৃত্বে কক্সবাজারের লার পাড়া এলাকার সিএনজি চালক নাসিরের সহায়তায় অপহরণ করা হয়। পরে এঘটনা জানা জানি হওয়ার পর টেকনাফ মডেল থানা পুলিশের অফিসার ইনচার্জ মোঃ ওসমান গণী বরাবরে ছেলেটির মাতা নুরুজ্জাহান বাদী হয়ে ভিক্টিম কে উদ্ধারের আবেদন জানিয়ে একটি অভিযোগ দায়ের করে।
ওই অভিযোগের প্রেক্ষিতে টেকনাফ মডেল থানা পুলিশের ওসি মোঃ ওসমান গণীর নির্দেশে এস আই সুদর্শনের নেতৃত্বে পুলিশ অভিযান চালিয়ে কক্সবাজার থেকে ভিক্টিম কে অপহরণে ব্যবহারিত সিএনজি গাড়ী ( যাহার নং কক্সবাজার – থ ১১- ৬৪১০) জব্দের পাশাপাশি চালক নাসির কে আটক করা হয়। পরে তার স্বীকারোক্তিতে অপহরণ কারী মহিলা উম্মেসলমা ( ২৫ ) কে ও আটক করা হয়।
এমতাবস্থায় অপহরণে ব্যবহারিত গাড়ীও ড্রাইভার এমনকি নেতৃত্ব দান কারী মাহিলা কে পুলিশ আটক করার পর কেন ভিকটিম সোয়াদ কে উদ্ধার না করে তাদের কে কেন পর্যায় ক্রমে আদালতে চালান করা হয় সে অভিযোগও করেছেন সংবাদ সম্মেলনে। এমন প্রশ্ন রীতিমতো এলাকাসী কে ক্ষুব্ধ করে তুলেছেন। তবুও
শিশু সোয়াদ কে অক্ষত অবস্থায় ফিরে পেতে তাহার মা ও স্বজনেরা সকল আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহযোগিতা কামনা করেন সংবাদ সম্মেলনে। সংবাদ সম্মেলনে সোয়াতের মা ছেলের কথা বলতে বলতে বারবার মোচ্ছা বা জ্ঞান হারাচ্ছিলেন। ছেলে কি বুকে ফিরি পেতে সমস্ত প্রশাসনের হাত পা ধরে জোর করে অনুরোধও জানান।
সংবাদ সম্মেলনের পূর্বে হ্নীলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রাশেদ মাহমুদ আলী কে ভুক্তভোগী পরিবারের প্রায় অর্ধশতাধিক নারী ও ছোট শিশুরা ঘিরে ধরে বলেন আপনাকে ভোট দিয়ে চেয়ারম্যান বানিয়েছি, আপনি আমাদের জন্য একটা সহযোগিতা করুন আমার ছেলেকে উদ্ধার করে দিন। এমন আবেগময় পরিস্থিতিতে
হ্নীলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রাশেদ মাহমুদ আলী জানান, ভিক্টিম শিশু টিকে উদ্ধারে পুলিশ সহ সকলের সর্বাত্মক সহযোগিতা কামনা করেন।
এ বিষয়ে টেকনাফ মডেল থানার ওসি মোঃ ওসমান গণীর কাছে জানতে চাইলে তিনি জানান, ইতি মধ্যে পুলিশ অভিযান চালিয়ে শিশু সোয়াদ কে অপহরণের সাথে জড়িত ৫ জন কে আটক করেছে। এবং অপহরণের কাজে ব্যাবহারিত গাড়িটিও জব্দ করেছে। ভিক্টিম উদ্ধার না করে কেন আটকদের আদালতে চালান করা হয়েছে এমন প্রশ্নের জবাবের ওসি জানান, কোন আসামি আটকের ২৪ ঘন্টা পরে আইন গত ভাবে থানাতে রাখার নিয়ম নাই। তবে এসপি সার্কেল স্যার উখিয়া সহ আমরা গত রাতে আটকদের শিশু টির বিষয়ে অনেক তথ্য জিজ্ঞাসা করেছি। তবুও আমরা শিশু সোয়াদ কে উদ্ধারে সর্বাত্মক অভিযান অব্যাহত রেখেছি।
Leave a Reply