• ফারুকুর রাহমান, টেকনাফ।
কক্সবাজারের সীমান্ত উপজেলা টেকনাফ স্থল বন্দরে ৪দিন পর পণ্যবাহী তিনটি জাহাজের মধ্যে দুইটি জাহাজ ছেড়ে দিয়েছে মিয়ানমার আরাকান আর্মি।
জানা যায়, ১২ জানুয়ারি মিয়ানমার ইয়াঙ্গুন বন্দর থেকে টেকনাফ স্থলবন্দরে উদ্দেশ্যে রওনা করেন ৩টি পণ্যবাহী জাহাজ। তবে গত ১৬ জানুয়ারি সকালে আসার পথে মিয়ানমার মংডু শহরের হাইয়ন খালী নামক এলাকা থেকে নাফ নদীতে পণ্যবাহী উক্ত জাহাজ গুলো আটকে রাখে ওই দেশের বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মি।
সোমবার (২০ জানুয়ারি) দুপুর ১২ টার দিকে পণ্যবাহী দুটি জাহাজ টেকনাফ স্থলবন্দরের জেটি ঘাটে নোঙর করেছে। আরাকান আর্মির হেফাজতে থাকা উক্ত জাহাজগুলোতে মালামাল রয়েছে ৫৬ হাজার বস্তা সুপারি, আচার, শুঁটকি, কসমেটিক, কফি’সহ অন্যান্য।
এদিকে, বন্দরে নোঙর করা দুটি জাহাজে পণ্য রয়েছে ২৭ হাজার ২শত ২২ বস্তা। এসব পণ্যের আমদানি কারকরা হলেন, ওমর ফারুক, শওকত আলী, এহেতেশামুল হক বাহাদুর, ছিদ্দিক, সাদ্দাম হোসেন, এমএ হাশেম, ওমর ওয়াহেদ সহ প্রমুখ।
গণমাধ্যমে বিষয়টি নিশ্চিত করেন টেকনাফ স্থলবন্দরের ম্যানেজার ছৈয়দ আনোয়ার হোসেন।
তিনি বলেন, মিয়ানমার থেকে পণ্যবাহী তিনটি জাহাজ টেকনাফ স্থলবন্দরে উদ্দেশ্যে আসার পথে আটকে রাখে মিয়ানমার সশস্ত্র গোষ্ঠী আরাকান আর্মি। তারা মালামালের কাগজপত্র যাচাই-বাছাই করার কথা বলে জাহাজ তিনটি তাদের হেফাজতে রেখে দেয়। সোমবার দুপুরে দুটি জাহাজ বন্দরের জেটি ঘাটে নোঙর করেন।
এ বিষয়ে টেকনাফ স্থল বন্দরের বিশিষ্ট ব্যবসায়ী এনামুল হাসান বলেন, মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ সংঘাতের ফলে বর্তমানে দেশটির মংডু শহর আরকান আর্মির দখলে থাকায়, তারা যাচাই-বাছাই করার কারণে চারদিন অতিবাহিত হয়েছে। জাহাজ গুলো ছেড়ে দিয়েছে। মূলত যাদের কাছ থেকে পণ্য আমদানি করি তারা তাদের দেশের বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মির সাথে যোগাযোগ করে ছেড়ে দিয়েছে।
যে আরেকটি জাহাজ রয়েছে সেটি আজকে কালকের মধ্যে টেকনাফে স্থলবন্দরে পৌঁছাবে বলে জানতে পারি।
অপরদিকে, টেকনাফ স্থলবন্দরের দোভাষী নুরুল আলম জানান, মিয়ানমারের সীমান্ত দিয়ে আসার পথে আমাদের পণ্যবাহী তিনটি জাহাজ আটকে রেখেছে আরাকান আর্মি পরে চার দিন পর কাগজপত্র যাচাই বাছাই করে ছেড়ে দিয়েছে। ছেড়ে দেওয়ার পর আজকে দুপুরে টেকনাফের স্থলবন্দরে ওই জাহাজগুলো নোঙর করে ।
টেকনাফ স্থল বন্দরের কাস্টমস সূত্রে জানা যায়, রাজস্ব বিভাগের তথ্যমতে গত ২০২৩-২০২৪ অর্থ বছরে জুলাই থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত ৪৭ হাজার মেট্রিক টন মালামাল আমদানির বিপরীতে রাজস্ব আদায় হয়েছে ২’শ ৫৭ কোটি টাকা। এছাড়া রপ্তানি হয়েছে ৬’শ ৩৬ মেট্রিক টন পণ্য। কিন্তু ২০২৪-২০২৫ চলতি অর্থ বছরের জুলাই থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত পণ্য আমদানি হয়েছে মাত্র ১১ হাজার মেট্রিক টন। রাজস্ব আদায় ৮৭ কোটি টাকা। এবং রপ্তানি হয়েছে ৬’শ ৯১ মেট্রিক টন মালামাল।
উল্লেখ্য, ১২ জানুয়ারি মিয়ানমার ইয়াঙ্গুন বন্দর থেকে টেকনাফ স্থলবন্দরে উদ্দেশ্যে রওনা করেন। ১৬ জানুয়ারি পণ্যবাহী জাহাজ মিয়ানমার মংডু শহরের জলসীমানা নাফ নদীতে মালামালের কাগজপত্র যাচাই-বাছাই করার কথা বলে তিনদিন ধরে আটকে রেখেছে।
Leave a Reply