মিয়ানমারে জান্তা সরকার বিরোধী বিক্ষোভে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর গুলিতে একদিনেই নিহত হয়েছেন ৭১ জন। গত ১ ফেব্রুয়ারি থেকে দেশটিতে সামরিক অভ্যুত্থান বিরোধী বিক্ষোভ শুরু হওয়ার পর এর আগে একদিনে আর এত মানুষ নিহত হয়নি। সবমিলিয়ে সোমবার (১৫ মার্চ) পর্যন্ত সরকার বিরোধী বিক্ষোভে ১৬৭ জন নিহত হলো।
গত রোববার নিহত হওয়াদের অধিকাংশই ইয়াঙ্গুনের পশ্চিমে হ্লেইং থারইয়ার টাউনশিপের বাসিন্দা। সেখানে বিক্ষোভকারীদের ওপর নিরাপত্তা বাহিনী তাজা গুলি, কাঁদানে গ্যাস এবং স্টান গ্রেনেড ব্যবহার করেছে।
হ্লেইং থারইয়ার টাউনশিপের একটি হাসপাতাল জানিয়েছে, সোমবার তাদের কাছে ৩৭ জনের মৃতদেহ এসেছে। এসময় প্রায় ৪০ জনকে আহতাবস্থায় ভর্তি করা হয়। ইয়াঙ্গুনের আরেকটি হাসপাতাল জানিয়েছে, তাদের কাছে সাতজনের মৃতদেহ এসেছে। আর ৫৬ জন আহত ব্যক্তিকে ভর্তি করা হয়েছে।
লাইংথাইয়া শিল্প এলাকায় চীনের অর্থায়নে পরিচালিত কয়েকটি কারখানায় রবিবার আগুন দেয়া হয়। এরপরই বিক্ষোভকারীদের ওপর চড়াও হয় নিরাপত্তা বাহিনী। নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে সেখানে প্রায় দুই ডজন মানুষের মৃত্যু হয়। যদিও কেউ কারখানা পোড়ানোর দায় স্বীকার করেনি।
রাজবন্দিদের অধিকার নিয়ে কাজ করা অ্যাসিস্ট্যান্ট অ্যাসোসিয়েশন ফর পলিটিক্যাল প্রিজনার্স (এএপিপি) জানিয়েছে, সকাল সাড়ে ৯টা থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ইয়াঙ্গুনের হ্লাইং থারিয়ার এলাকায় পুলিশ বিক্ষোভকারীদের লক্ষ্য করে টিয়ার গ্যাস, রাবার বুলেটেটের পাশাপাশি সরাসরি তাজা গুলি ছোঁড়ে। এতে অন্তত ২২ জন নিহত হন। আহত হয়েছেন আরও অনেকে। তাদের কারো কারো অবস্থা গুরুতর। নিহতের সংখ্যা বাড়তে পারে বলেই আশংকা করা হচ্ছে।
চিকিৎসাকর্মীদের বরাতে বিভিন্ন গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নিরাপত্তাবাহিনী রাবার বুলেট ও তাজা গুলি ছোড়ে। প্রত্যক্ষদর্শী একজন সাংবাদিক বলেন, এটা ভয়ঙ্কর। আমি চোখের সামনে গুলি করে বিক্ষোভকারীদের হত্যা করতে দেখেছি। এমন নৃশংস দৃশ্য জীবনে ভুলতে পারব না।
গত ১ ফেব্রুয়ারি সেনা অভ্যুত্থানের মাধ্যমে অং সান সু চির নির্বাচিত সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করার পর থেকে মিয়ানমারে রাজনৈতিক সংকট শুরু হয়। সেনাবাহিনীর অভিযোগ,গত নভেম্বর মাসে অনুষ্ঠিত সাধারণ নির্বাচনে ব্যাপক জালিয়াতি করে জয় পেয়েছে এনএলডি। তবে এই অভিযোগ নাকচ করে দিয়েছে দেশটির নির্বাচন কমিশন।
Leave a Reply