প্রেস বিজ্ঞপ্তি
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, স্বাধীনতার ঘোষণা এবং মুক্তিযুদ্ধের প্রথম বিদ্রোহ চট্টগ্রাম থেকেই হয়েছে। তাই চট্টগ্রামের ইতিহাস মুক্তিযুদ্ধপূর্ব এবং যুদ্ধকালীন সময়ে অবিস্মরনীয়। শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান কালুরঘাট বেতার কেন্দ্র থেকে স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়ে নীরব ছিলেন না। এদেশের সেনাবাহিনীকে সংগঠিত করে তিনি পাক সেনাদের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ শুরু করেছেন চট্টগ্রাম থেকেই। তিনি স্বাধীনতার পরের সরকারের একদলীয় শাসন ব্যবস্থা থেকে দেশকে বের করে নিয়ে বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। দেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব রক্ষায় শহীদ জিয়ার অবদান এদেশের ইতিহাসে স্বর্ণাক্ষরে লিখা থাকবে।
রোববার, মে ৩০, ২০২১ বিকালে নাসিমন ভবনস্থ দলীয় কার্যালয়ের মাঠে সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ৪০ তম শাহাদাত বার্ষিকী উপলক্ষে চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপি’র আলোচনা সভায় ভার্চুয়ালী যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
আমীর খসরু মাহমুদ বলেন, মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তী সময়ে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশের পথচলা যখন বারংবার বাধাগ্রস্ত হচ্ছিল ঠিক তখন রাষ্ট্র ও জনগণের জন্য ত্রাণকর্তা হিসেবে আবির্ভূত হন রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান। রাষ্ট্র পরিচালনায় তার দক্ষতা ও দূরদর্শিতার কারণে অতি অল্প সময়ের মধ্যেই বাংলাদেশকে তলাবিহীন ঝুড়ির তকমা ফেলে স্বনির্ভর বাংলাদেশের পথে, পথ চলতে শুরু করে। শহীদ জিয়া আধুনিক বাংলাদেশ গড়ার লক্ষে বিভিন্ন উন্নয়নমুখী কর্মকান্ড শুরু করেন। যার ফলশ্রুতিতে বাংলাদেশ আজ মাথা উঁচু করে দাড়াতে শিখেছে।
জিয়াউর রহমানকে ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনের সংগ্রামী নেতাজী সুভাস বসুর সঙ্গে তুলনা করে তিনি বলেন, ইতিহাসে দু’জন বাঙালি অস্ত্র হাতে যুদ্ধ ঘোষণা করেছিলেন। একজন হচ্ছেন নেতাজী সুভাস বসু। তিনি ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছিলেন। আরেকজন হচ্ছেন জিয়াউর রহমান। আর কোনো বাঙালি যুদ্ধের ঘোষণা দেয়নি। সমস্ত বাঙালিকে যুদ্ধক্ষেত্রে আর কোনো বাঙালি ডেকে আনেননি। কই, ভারতীয়রা তো নেতাজী সুভাস বসুকে অসম্মান করেনি। তার নামে বিমানবন্দর আছে। তাকে দলমত নির্বিশেষে শ্রদ্ধা করে। কিন্তু বাংলাদেশে আওয়ামী লীগ এসব সংস্কৃতি ধংস করে দিয়েছে। রাজনীতিবিদদের প্রতি রাজনীতিবিদদের শ্রদ্ধা জানানোর যে প্রবণতা সেটা আওয়ামীলীগ বিলীন করে দিয়েছে। গুণিদের যদি আমরা সম্মান না করি আগামীতে কোনো গুণির জন্ম হবে না।
প্রধান বক্তার বক্তব্যে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু বলেছেন, বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান কাউকে হত্যা বা ক্যু করে ক্ষমতায় আসীন হননি। জনগণের আহবানে দেশ ও জাতিকে পথ দেখানোর জন্য তিনি ক্ষমতা গ্রহণ করেছেন। কিন্তু আওয়ামী লীগ গণতন্ত্রকে হত্যা করে বাকশাল কায়েম করেছিল। জিয়াউর রহমান সে একনায়কতন্ত্র তথা বাকশাল বিলুপ্ত করে বহুদলীয় ক্ষমতায়নের প্রবর্তন করেছেন। আর আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকাকালে ৫টি মৌলিক ইস্যুকে ধংস করে দিয়েছে। বিএনপি তা ফিরিয়ে দিয়ে জনগণের আশা আকাঙ্খার প্রতিফলন ঘটিয়েছে। দেশ পরিচালনায় আওয়ামী লীগ যেখানে ব্যর্থ হয়েছে বিএনপি সেখানে সফল হয়েছে।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা আবুল খায়ের ভূইয়া বলেন, চট্টগ্রামের কালুরঘাট বেতারকেন্দ্র বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধের একটি বড় স্তম্ভ। এই স্থানের গুরুত্ব দেশের মানুষের কাছে অনেক বেশি। কারণ শহীদ জিয়াউর রহমান এখান থেকেই বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণা করেছিলেন। জিয়াউর রহমানের স্বাধীনতার ঘোষণা দেশে ও আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত। কেউ চাইলেই এই ইতিহাস পরিবর্তন করতে পারবে না।
সভাপতির বক্তব্যে চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপি’র আহবায়ক ডা. শাহাদাত হোসেন বলেন, শহীদ জিয়াউর রহমান বাংলাদেশের আধুনিক ও উন্নত রাষ্ট্রের স্বপ্নদ্রষ্টা। তাঁর শাসনামল ছিল বাংলাদেশের স্বর্ণযুগ। কৃষি থেকে শুরু করে রেমিটেন্সসহ অর্থনীতির চাকা সচল হয়েছিল জিয়াউর রহমানের হাত ধরে। মহান মুক্তিযুদ্ধে যেভাবে নেতৃত্ব দিয়ে দেশ স্বাধীন করেছেন সেভাবে রাষ্ট্র পরিচালনা করে বাংলাদেশকে উন্নত ও আধুনিক রাষ্ট্র হিসেবে গড়ে তুলেছেন। তাঁর ১৯ দফা কর্মসূচি বাস্তবায়ন করতে পারলে বাংলাদেশ স্বয়ংসম্পূর্ণ রাষ্ট্র হিসেবে বিশ্বের বুকে মাথা তুলে দাড়াতে পারতো। কিন্তু দেশি ও বিদেশী ষড়যন্ত্রকারীদের কারণে তিনি তা করতে পারেনি।
মহানগর বিএনপির সদস্য কামরুল ইসলামের পরিচালনায় বিশেষ অতিথি ছিলেন বিএনপির কেন্দ্রীয় মহিলা সম্পাদিকা নুরী আরা ছাফা, বিভাগীয় সহসাংগঠনিক সম্পাদক জালাল উদ্দীন মজুমদার। এসময় উপস্থিত ছিলেন মহানগর বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক আলহাজ্ব এম এ আজিজ, যুগ্ম আহবায়ক মো. মিয়া ভোলা, আবদুল মান্নান, সদস্য হারুন জামান, মাহবুবুল আলম, এস এম আবুল ফয়েজ, জাহাঙ্গীর আলম দুলাল, মনজুরুল আলম চৌধুরী মনজু, কোতোয়ালী থানা বিএনপির সভাপতি মনজুর রহমান চৌধুরী, পাঁচলাইশ থানার সভাপতি মামুনুল ইসলাম হুমায়ুন, ডবলমুলিং থানার সভাপতি মো. সেকান্দর কমিশনার, চকবাজার থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক নুর হোসেন, সদরঘাট থানার সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান, মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদিকা জেলি চৌধুরী, মৎস্যজীবিদলের আহবায়ক নুরুল হক, তাঁতীদলের আহবায়ক মনিরুজ্জামান টিটু, সদস্য সচিব মনিরুজ্জামান মুরাদ প্রমুখ।
— দিনকাল
Leave a Reply