1. akfilmmultimedia@gmail.com : admin2020 :
  2. teknafchannel71@gmail.com : teknaf7120 :
বুধবার, ০৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ০১:৩৮ অপরাহ্ন
শিরোনাম :

মিয়ানমার থেকে গবাদি পশু আমদানি বন্ধ

  • আপডেট সময় : মঙ্গলবার, ৬ জুলাই, ২০২১
  • ২৭৪ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক,টেকনাফ

দেশের খামারিদের লোকসানের কথা চিন্তা করে মিয়ানমার থেকে গবাদি পশু আমদানি বন্ধ করে দিয়েছে সরকার। ফলে স্থানীয় ব্যবসায়ীদের মাঝে হতাশা বিরাজ করছেন। কারন তারা মিয়ানমার থেকে পশু আমদানি করতে কোটি টাকা দাদন দিয়েছেন আগে থেকে।

সোমবার বিকেল ৫টার দিকে বিষয়টি নিশ্চিত করে কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মামুনুর রশিদ জানান, ‘মিয়ানমার থেকে অবৈধভাবে পশু আমদানি করে আসছিল। ফলে এখন সেটি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। বিশেষ করে কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে দেশের খামারিদের কথা চিন্তা করে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।’

তবে দীর্ঘ দিন ধরে অবৈধভাবে মিয়ানমার থেকে টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপ হয়ে গবাদি পশু আসছিল, সেগুলো শুল্ক স্টেশনের মাধ্যমে প্রতি গরু-মহিষ থেকে ৫০০ টাকা ভ্যাট আদায় করে বৈধ করা হতো। পরে সেগুলো বাজারে কেনা-বেচা করা হতো।

সোমবার সকাল থেকে বিকেল ৫ টা পর্যন্ত মিয়ানমার থেকে গরু-মহিষ ভর্তি কোনো ট্রলার শাহপরীর দ্বীপ করিডোরে আসেনি। তবে সর্বশেষ জুলাই মাসের চার দিনে মিয়ানমার থেকে ৮৩টি গরু এসেছিল। এর আগে রোববার বিকেলে জেলা চোরাচালান নিরোধ টাস্কফোর্স কমিটির একটি জুম মিটিংয়ে সিদ্ধান্ত হয় টেকনাফ সীমান্তের মিয়ানমার থেকে পশু আমদানি বন্ধের।

এ বিষয়ে টেকনাফ স্থল বন্দর শুল্ক কর্মকর্তা মো. আব্দুন নুর জানান, ‘জেলা চোরাচালান নিরোধ টাস্কফোর্স কমিটির বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সোমবার থেকে মিয়ানমার থেকে গবাদি পশু আমদানি বন্ধ রয়েছে। এরপরও কেউ পশু আমদানি করে থাকলে, তাদের বিষয়ে অবৈধ চোরাচালান আইনে মামলা দেওয়া হবে। তবে ওই বৈঠকের আগে মিয়ানমার থেকে যেসব পশু আমদানি করা হয়েছে সেগুলো ছেড়ে দেওয়া হচ্ছে।’

কাস্টমস সূত্রে জানা যায়, গত মে ও জুন এ দু’মাসে মিয়ানমার থেকে ২৫ হাজার ৮৬৮টি গরু ও ৪ হাজার ২৫৮টি মহিষ আমদানি করা হয়েছে। আর আমদানি বাবদ এক কোটি ৫০ লাখ ৬৩ হাজার টাকা রাজস্ব আয় করেছে শুল্ক বিভাগ। এর আগে মার্চ-এপ্রিল মাসেও ১১ হাজার ৮৮৬টি গরু ও দুই হাজার ৪২৪টি মহিষ আমদানি বাবদ ৭১ লাখ ৫৫ হাজার টাকা শুল্ক আদায় করেছে কাস্টমস।

টেকনাফের পশু আমদানিকারক আবু সৈয়দ বলেন, ‘সামনে কোরবানি ঈদ, এ সময় হঠাৎ করে মিয়ানমার থেকে গবাদি পশু বন্ধের সিদ্ধান্তে ব্যবসায়ীদের শত কোটি টাকার লোকসান পোহাতে হবে। কারণ মিয়ানমারে পশু ব্যবসায়ীদের শত শত কোটি টাকা দাদন দিয়েছে ব্যবসায়ীরা।’

তিনি জানান, ‘কোরবানিকে সামনে রেখে সে দেশে অনেক পশু মজুদ করা হয়েছে। ব্যবসায়ীদের লোকসানের কথা ভেবে পশু আমদানি সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের অনুরোধ করছি। পাশপাশি মিয়ানমার থেকে গবাদি পশু না আসলে কক্সবাজারের আশ্রিত ১১ লাখ রোহিঙ্গাদের মাঝে কোরবানির ঈদের মাংস দেওয়া সম্ভব হবে না।’

টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মোহাম্মদ পারভেজ চৌধুরী বলেন, ’বিশেষ করে দেশের খামারিদের কথা ভেবে সরকার মিয়ানমার থেকে পশু আমদানি বন্ধ করে দিয়েছে। ফলে এখন থেকে কোনোভাবেই মিয়ানমার থেকে গরু-মহিষ আমদানি করা যাবে না। পরবর্তী নির্দেশনা না আসা পর্যন্ত, ওপার থেকে গবাদি পশু আসা বন্ধ থাকবে।’

তিনি জানান, ‘তাছাড়া শাহপরীর দ্বীপ করিডোরে মিয়ানমারের গবাদি পশু আমদানি কার্যক্রমও ভিন্ন। কেউ এ নির্দেশ অমান্য করে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ বিষয়ে বিজিবি ও শুল্ক স্টেশনকে অবহিত করা হয়েছে।’

এ দিকে টেকনাফ উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ড. মোহাম্মদ শওকত আলী জানান, ‘টেকনাফে আড়াই শতাধিক পশু খামার রয়েছে। এর মধ্য অর্ধশতাধিক বড় খামার আছে। তাছাড়া কোরবানি মৌসুমে আরো অনেকে খামারজাত করেন। এসব খামারে প্রায় ২০ হাজার গরু, মহিষ ও ছাগল রয়েছে। যা কোরবানি ঈদে হাটে বিক্রির প্রস্তুতি চলছে। এই উপজেলায় কোরবানি পশুর চাহিদা রয়েছে সাড়ে ৮ হাজার।’

প্রসঙ্গত, টেকনাফ শাহপরীর দ্বীপ করিডোরটি শুল্ক স্টেশনের আওতাধীন জোন। ২০০৩ সালে ২৫ মে মিয়ানমার থেকে চোরাই পথে গবাদিপশু আসারোধে বিজিবির চৌকি-সংলগ্ন এলাকায় এ করিডোর চালু করা হয়। আমদানি করা গবাদিপশু প্রথমে বিজিবির তত্ত্বাবধানে রাখা হয়। পরে সোনালী ব্যাংকে চালানের মাধ্যমে রাজস্ব জমা এবং স্থলবন্দরের শুল্ক স্টেশনের অনুমতি নিয়ে গবাদিপশুগুলো করিডোর থেকে ছাড়পত্র নেওয়া হয়।

নিউজটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published.

এ জাতীয় আরো খবর
error: Content is protected !!