এস এন কায়সার জুয়েল,টেকনাফ
কক্সবাজার টেকনাফের সাবরাং ইউনিয়নের শাহপরীরদ্বীপের ইয়াসের পানির ঢেউয়ের আঘাতে বেড়িবাঁধের নির্মাণ করা ব্লক সরে যাচ্ছে। ফলে আতংকে আছে শাহপরীরদ্বীপের ৩৫ হাজার মানুষ।
জানা যায়,টেকনাফের সাবরাং ইউনিয়নের হারিয়াখালী পর্যন্ত শাহপরীরদ্বীপ থেকে ৫ কিলোমিটার রাস্তা দীর্ঘ সাড়ে ৫ বছর ধরে ভাঙ্গেছিল বেড়িবাঁধ। সেই থেকে নানান কষ্ট নিয়ে দ্বীপবাসী টেকনাফ শহরে যাতায়াত করত। ফলে বিগত বছর শাহপরীরদ্বীপবাসীর কপাল খুলে নতুন করে স্বপ্নের বেড়িবাঁধ নিমার্ণ শুরু করে কক্সবাজার পানি উন্নয়ন বোর্ড। সেই বেড়িবাঁধের গাম্পিং ব্লক দেওয়ার কথা ছিল, কিন্তু দেয়নি। তাতে জোয়ারের পানির ধাক্কায় বেড়িবাঁধের ব্লক সরে যাচ্ছে। গাম্পিং ব্লক দিলে পানির ধাক্কা গাম্পিং ব্লকে লাগলে ব্লক ধসে পড়ে না। ফলে কক্সবাজার পানি উন্নয়ন বোর্ডের অবহেলা ও অনিয়মের কারণে গাম্পিং ব্লক নিমার্ণ করেনি।
শাহপরীরদ্বীপ দক্ষিণ পাড়া এলাকার ওয়ারেজ আলী বলেন, ঘুর্ণিঝড় মোরার সময় বেড়িবাঁধ ভেঙে ঘর-বাড়িতে পানি উঠে গাছপালা নষ্ট হয়ে গেছে। এখন সাগরের পানি যেভাবে বেড়িবাঁধে ধাক্কা দিচ্ছে তা নিয়ে আমরা বেশ ভয়ে দিন কাটাচ্ছি। কিন্তু তা বর্ষাকাল আসলে আমাদের মাঝে আতংক বেড়ে যায়। এই বেড়িবাঁধ টেকসই করে করা হোক। যদি এবার যদি পানি ঢুকে তাহলে কোথায় যাব?
শাহপরীরদ্বীপ ৭ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য নুরুল আমিন বলেন, ইয়াসের আঘাতে বেড়িবাঁধের ৩টি পয়েন্ট খুব ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে গেছে। যেকোন সময় ভেঙ্গে যাওয়ার আশংকা রয়েছে। এলাকাবাসীর পক্ষে থেকে বার বার বেড়িবাঁধের ঠিকাদারকে বলার পরেও তারা কাজ করছে না।
শাহপরীরদ্বীপ ৭ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য রেজাউল করিম রেজু বলেন, সাবরাং ইউনিয়নের শাহপরীরদ্বীপের উত্তর পাড়া ও ডাংগর পাড়া এলাকায় যে ভাবে ভাঙা শুরু করেছে। এবং বেড়িবাধঁ নিমার্ণে টেকসই করে বাঁধ নির্মাণ না করায় দুর্যোগের সম্মুখীন হতে হচ্ছে দ্বীপবাসীর। সরকারি মহল থেকে বার বার আশ্বাস প্রদান করলেও তা বাস্তবায়ন করতে দেখা যায় না।
এব্যাপারে সাবরাং ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নুর হোসেন বলেন, ইয়াসের আঘাতে সাবরাং ইউনিয়নের শাহপরীরদ্বীপের যে সব এলাকায় বেড়িবাঁধ ধসে পড়েছে। তা ঠিক করে দেওয়া জন্য বলা হয়েছে। ইয়াসের জন্য ইউনিয়ন
পরিষদ থেকে সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।
এবিষয়ে টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পারভেজ চৌধুরী বলেন, ইয়াসের সকল প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে। এবং যে সব এলাকায় বেড়িবাঁধ ক্ষতি গ্রস্ত হয়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে শাহপরীরদ্বীপ বেড়িবাঁধ ভেঙে ধ্বসে পড়া জায়গাগুলোতে কাজ করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
শাহপরীরদ্বীপবাসী সুত্রে জানা যায়, ঘুর্ণিঝড়ে বেড়িবাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় সরকারের অব্যবস্থাপনাকে দায়ী করেন শাহপরীরদ্বীপের ৩৫ হাজার মানুষ। কয়েক বছর আগে ঘুর্ণিঝড় ‘মোরা’ ঝড়ের আঘাতে উপকূলের মানুষের যে পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতি হয় সেগুলো কাটিয়ে উঠতে পারেনি। তার উপর আবার বড় ধরণের প্রাকৃতিক দুর্যোগ আসার পূর্বাভাস শোনা যাচ্ছে। যদি এ ইয়াস নামের ঝড় এলাকা দিয়ে বয়ে যায় তাহলে উপকূলের মানুষের চরম দুর্ভোগ নেমে আসবে।
Leave a Reply