টেকনাফ ৭১ ডেস্ক
বাংলাদেশ পুলিশের এভিয়েশন উইং এ পাইলট হিসেবে কাজ করার জন্য বিসিএস (পুলিশ) ক্যাডারের চারজন সহকারি পুলিশ সুপার (এএসপি)কে নির্বাচিত করা হয়েছে- এই তথ্য জানতাম আগে থেকেই। ৩৫ তম বিসিএসের শরীফ ও মুশফিক, ৩৬ তম বিসিএসের ফাতেমা তুজ জোহরা এবং ৩৭ তম বিসিএসের শামান। আজ জানা গেল, আর্মি এভিয়েশন স্কুল থেকে তারা প্রত্যেকেই সফলভাবে একাডেমিক ট্রেনিং ও একক উড্ডয়ন (সলো ফ্লাইং) সম্পন্ন করেছেন। গর্বে বুকের ছাতি ফুলিয়ে দেওয়ার মতো আরেকটি খবর- এই প্রশিক্ষণে সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী এবং পুলিশের মোট যে ১০ জন কর্মকর্তা অংশ নিচ্ছেন, তাদের মধ্যে একাডেমিক ট্রেনিং এ প্রথম হয়েছেন আমাদের ফাতেমা তুজ জোহরা।
ফাতেমার অনন্য এই অর্জনের কথা জানার পর কেন যেন বারবার মনে পড়ছিল পিছিয়ে পড়া বাঙালি নারী সমাজকে নিয়ে শত বছর পূর্বে বেগম রোকেয়া রচিত আক্ষেপ ভরা কয়েকটি লাইন- “স্বামী যখন পৃথিবী হইতে সূর্য ও নক্ষত্রের দূরত্ব মাপেন, স্ত্রী তখন একটা বালিশের ওয়াড়ের দৈর্ঘ্যপ্রস্থ পরিমাপ করেন।স্বামী যখন কল্পনার সাহায্যে সুদূর আকাশে গ্রহনক্ষত্রমালা বেষ্টিত সৌরজগতে বিচরণ করেন, সূর্যমণ্ডলের ঘনফল তুলাদণ্ডে ওজন করেন এবং ধূমকেতুর গতি নির্ণয় করেন, স্ত্রী তখন রন্ধনশালায় বিচরণ করেন”। মিসেস আর এস হোসেন নিশ্চয়ই পরপারে বসে হাসিমুখে লক্ষ করছেন পালাবদলের গল্পের প্রতিটি এপিসোড। ভাবছি, এখন থেকে পুলিশে কর্মরত কোনো নারী সদস্য (এবং অন্য কোনো নারীও) যদি আমার কাছে তাদের হতাশার কথা প্রকাশ করেন, তাহলে এখন থেকে আমি তাদেরকে ফাতেমার গল্প শোনাব।
নিজের দক্ষতায়-যোগ্যতায় নারীরা এগিয়ে যাচ্ছেন। সদর্পে বিচরণ করছেন, সমাজ- রাষ্ট্রের প্রতিটি স্তরে, প্রতিটি ক্ষেত্রে। প্রমাণ? সে তো হাতের কাছেই। এই যেমন বাংলাদেশ পুলিশের এএসপি ফাতেমা তুজ জোহরা। যিনি বালিশের ওয়াড়ের দূরত্ব শুধু নয়, এবার নক্ষত্রের দূরত্বও পরিমাপ করবেন। আকাশে ডানা মেলে বিচরণ করবেন গ্রহ-নক্ষত্রদের রাজ্যে।
[ট্রেনিং এখনো চলমান রয়েছে। ফাতেমা এবং বিভিন্ন বাহিনী থেকে আগত তার সতীর্থ প্রশিক্ষণার্থীগণ সস্থ দেহে, সফলভাবে ট্রেনিং সম্পন্ন করবেন, তাদের সবার জন্য এই শুভ প্রত্যাশা রইলো।]
……………………………………………….
Shamim Anwar
বিসিএস (পুলিশ)
সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি),
রাঙ্গুনিয়া সার্কেল, চট্টগ্রাম।
Leave a Reply