নাছির উদ্দীন রাজ, টেকনাফ
কক্সবাজার টেকনাফের বাহার ছড়া ইউনিয়নের জাহাজ পুড়া এলাকায় খালে মাছ শিকার করতে গিয়ে ৮ জন স্থানীয় বাঙালি অপহরণের শিকার হওয়া ব্যক্তিদের উদ্ধারে ও অপরাধীদের আস্তানা শনাক্ত করতে পাহাড়ে ড্রোন উড়িয়ে অভিযান চালিয়েছে ডিবি পুলিশ। সোমবার (১৯ ডিসেম্বর) দুপুরে বাহার ছড়া জাহাজ পুরা গহীন পাহাড়ে উক্ত অভিযান পরিচালনা করা হয়। তবে এখনো তাদের কেউ উদ্ধার হয়নি বলে জানিয়েছে তাদের পরিবার।
শামলাপুর তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ মশিউর রহমান জানান, গত কাল আমরা সহ ডিবি পুলিশে একটি টিম পাহাড়ে অপহরণ হওয়া ৮ জনকে উদ্ধারে অভিযান চালিয়েছি, তবে তাদের উদ্ধার না হওয়া পর্যন্ত আমাদের অভিযান চলমান থাকবে।
উল্লেখ্য রবিবার (১৮ডিসেম্বর) সকালে বাহার ছড়া ইউপির ৬নং ওয়ার্ডের একটি খালে মাছ শিকার করতে গেলে তাদের অপহরণ করে । অপহরণ কৃতরা হলেন, জাহাজ পুড়া এলাকার ছৈয়দ আমিরের দুই ছেলে মোস্তফা ও করিম উল্লাহ, রোস্তম আলীর ছেলে ছলিম উল্লাহ, রশিদ আহাম্মদের পুত্র মোঃ উল্লাহ,নুরুল হকের ছেলে মোহাম্মদ, রশিদ আহাম্মদের পুত্র কলেজ ছাত্র আবছার উদ্দীন, মমতাজের ছেলে রিদুওয়ান, কাদির হোছনের ছেলে নুরুল হক।
স্থানীয় বাসীন্দা মোঃ হারুন জানান, রবিবার সকালে বাহার ছড়া এলাকার বনির ছড়া নামক একটি খালে মাছ শিকারে যায় । কিন্তুু সন্ধা হলেও তাহারা বাড়িতে ফিরে না আসাই তাদের পরিবারের স্বজনেরা খুঁজাখুঁজি করে কোথাও না পেয়ে কান্না কাটি করতে থাকে। এসময় হঠাৎ অপহরণ কৃত একজনের মোবাইল থেকে তাদের স্বজনদের সাথে মোবাইলে কল করে জানান, আমাদের কে পাহাড়ে ধরে ফেলেছে তোমরা তাড়া তাড়ি আমাদের উদ্ধার করতে টাকা যোগাড় কর।
তিনি আরো জানান, আবার আরেক জনের পিতার কাছে ওই মোবাইল দিয়ে জন প্রতি ৩লক্ষ টাকা মুক্তি পন দাবি করেন। অবশ্যই পরে অপহরণ কারি ও অপহৃত স্বজন দের সাথে মুক্তিপনের টাকার দর দরকষাকষিতে ২লাক্ষ টাকা পর্যন্ত নামিয়ে আসলেও অপহৃতদের স্বজনেরা গরিব ও অসহায় হওয়ায় ২০ হাজার টাকা পর্যন্ত দিবে বলে স্বীকার করলেও রাজি হয়নি অপহরণ কারি চক্রের সদস্যরা। নির্দিষ্ট সময় মুক্তি পন না দিলে বাড়িতে তাদের লাশ পৌঁছাবে বলে হুমকি দেন বলে জানিয়েছেন।
রিদুওয়ানের পিতা মমতাজ জানান, আমরা আমাদের ছেলেদের উদ্ধারে প্রশাসনের সর্বোচ্চ সহযোগিতা চাই, না হয় টাকা দিতে না পারলে ডাকাতেরা আমাদের ছেলেদের মেরেফেলবে।
এ বিষয়ে টেকনাফ মডেল থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) নাছির উদ্দীন মজুমদার জানান, ঘটনা শুনার সাথে সাথে আমরা পুলিশ পাঠিয়েছি। তবে তাদের উদ্ধারে আমাদের পুলিশের একটি টিম সার্বক্ষণিক কাজ করছে।
গত কিছুদিন আগে মুক্তিপন দিয়ে ফিরে আসা স্থানীয় হ্নীলা ইউনিয়নের পানখালী এলাকার বাসীন্দা আব্দুল্লাহ জানান, টেকনাফের গহীন পাহাড়ের মোড়ে মোড়ে বড় বড় সন্ত্রাসীদের আস্তা রয়েছে যেখানে মানুষ অপহরণের পরে বন্দি রেখে নির্যাতন চালায় যা আমরা স্বচক্ষে দেখেছি । তবে সেখানে পাশাপাশি দেশী বিদেশি অনেক অস্ত্রও রয়েছে। আমি আশা করি আইন শৃঙ্খলা বাহিনী ওই পাহাড়ে অভিযান করলে সন্ত্রাসীদের আটকের পাশা পাশি বিপুল পরিমাণ অস্ত্র উদ্ধার হবে।
Leave a Reply