ফারুকুর রাহমান, টেকনাফ প্রতিনিধি।
মিয়ানমার সীমান্তে আরাকান আর্মি ও জান্তা সরকারের মধ্যে চলছে ব্যাপক সংঘর্ষ, গোলাগুলি ও বিমান হামলা । চলমান সংঘাতের জেরে বিস্ফোরণের বিকট শব্দ যেন থামছে না। কাঁপছে এপারের সীমান্তবর্তী এলাকা সহ স্থানীয়দের ঘরবাড়ি।
শনিবার (২২ জুন) রাত, থেকে শুরু হওয়া বিস্ফোরণের শব্দ থেমে থেমে অব্যাহত রয়েছে শনিবার ভোর পর্যন্ত। আরাকান আর্মি ও জান্তা সরকার দুপক্ষের মধ্যে চলছে গোলাগুলি মর্টার শেল ও বিমান হামলা । বিস্ফোরণের বিকট শব্দ অবিরত আসছে এপারের টেকনাফের সীমান্ত এলাকাগুলোতে।
জানা যায়, তারা রাতে শান্তিতে ঘুমাতে পারছে না। নুরুল্লা পাড়া, হাইর পাড়া, মুন্নী পাড়া, সাইরা পাড়া, ফাতনজা, ফেরানপ্রু, সিকদার পাড়া, হাঁরি পাড়া, হেতিল্লা পাড়াসহ আরো কয়েকটি গ্রাম আরাকান আর্মি অবস্থান নিয়েছে, এ গ্রামগুলোতে জান্তা সরকার ও আরাকান আর্মির মধ্যে বর্তমানে তুমুল সংঘর্ষ চলছে। এ গৃহযুদ্ধে হতাহতের ঘটনা হওয়ায় ভয়ে বাড়িঘর ছেড়ে নিজ গ্রাম ছেড়ে অন্য গ্রামে পালিয়ে যাচ্ছে মায়ানমার অবস্থানরত রোহিঙ্গারা।
এতে টেকনাফ পৌরসভার নাইট্যং পাড়া, কায়ুকখালী পাড়া, জালিয়া পাড়া, কুলাল পাড়া, খাংগার ডেইল, চকবাজার, নাজির পাড়া, মৌলভি পাড়া, সাবরাং মগ পাড়া, আচারবনিয়া, ডেগিল্ল্যা বিল, নয়া পাড়া, শাহপরীর দ্বীপ জালিয়া পাড়া, উত্তর পাড়া, মিস্ত্রি পাড়া এলাকার লোকজন শুনতে পায় মায়ানমার ওপার থেকে থেমে থেমে বিকট মর্টার শেলের শব্দ।
এপারে সীমান্ত এলাকায় বসবাসরত ইমাম শরীফ বলেন, মংডু টাউনশিপ থেকে কিছুক্ষণ পর থেমে থেমে বিকট বিস্ফোরণের শব্দ ভেসে আসছে। “এতে করে এলাকার ঘরবাড়ি কেঁপে উঠেছে। একেবারে ভূমিকম্পের মতো, বিস্ফোরণের শব্দ। ‘রাত দেড়টায় ভারী মর্টারশেল এবং বিমান হামলার ভয়ংকর শব্দ শোনা গেছে, গেল রাতের মতো বিকট শব্দ আর কখনো শোনা যায়নি, পরিবারের সবাই নির্ঘুম রাত কাটিয়েছে।
টেকনাফ পৌরসভার উত্তর জালিয়া পাড়া এলাকার বাসিন্দা মো. রাসেল বলেন, মিয়ানমারের ওপারে হেলিকপ্টার উড়তে দেখা গেছে, বোমার শব্দে এপারের বাড়িঘর কাঁপছে, ছোট ছোট বাচ্চারা ভয়ে ঘুম থেকে উঠে যায়, প্রতিনিয়ত আতঙ্কের মধ্যে তাকে পরিবারের লোকজন।
টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আদনান চৌধুরি থেকে সীমান্তের নিরাপত্তা নিয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন- রাখাইনে বিস্ফোরণের ঘটনায় টেকনাফ সীমান্তের প্রতিটি গ্রামে বিশেষ নজর রাখা হয়েছে। বর্তমানে সীমান্ত এলাকার পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে।”
টেকনাফ-২ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, রাখাইনের পরিস্থিতি গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে যাতে কোনো ধরনের অনুপ্রবেশ করতে না পারে সেজন্য নাফ নদী ও সীমান্তে বিজিবির টহল বাড়ানো হয়েছে।
Leave a Reply