কক্সবাজার সংবাদ দাতা
টেকনাফের হ্নীলা ইউনিয়নের মোচনী পাড়া এলাকায় বাপের বাড়ি থেকে যৌতুকের টাকা স্বামী কে এনে দিতে না পারায় ১০ মাসের শিশু সহ স্ত্রী কে ঘর ছাড়া করলেন পাষণ্ড স্বামী । সে হ্নীলা ৯নং ওয়ার্ডের বাসীন্দা বশির আহমদের ছেলে দেলোয়ার হোসাইন (৩০)। উক্ত ঘটনায় ককসবাজার টেকনাফ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমলী আদালতে একটি মামালাও দায়ের করেছেন বলে জানিয়েছেন স্ত্রী সানিয়া তাহাসিন রিপা (২১)। বর্তমানে সে ওই মামলায় জেল হাজতে রয়েছে বলে জানা গেছে।
বাদী রিপা জানান, বিগত ৬ আগস্ট ২০২০ সালে আমার সাথে স্বামী দেলোয়ার হোসেনের ইসলামী শরীয়তের বিধান মতে পারিবারিকভাবে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হই। যাহার রেজিষ্ট্রারী নং ৩৪৯/২০। এর পর হতে আমাদের দাম্পত্য জীবনে এক কন্যা সন্তান জন্ম লাভ করে। যাহা বর্তমানে আমি বাদীর নিকট আছে। সন্তানের ভরণ পোষণ না দেওয়াই আমাকে চলতে অনেক কষ্ট পোহাতে হচ্ছে।
তিনি বলেন, বিবাহের পর হতে যৌতুক লোভী স্বামী আমার পিতার বাড়ি হতে যৌতুকের টাকা এনে দিতে আমাকে বাধ্য করতেন । যার কারণে আমাদের সংসারের সুখের আশায় পিতা- মাতার নিকট হতে যতটুকু সম্ভব নগদ টাকা স্বামীকে এনে দিতাম। এর পরেও স্বামী মোটরসাইকেল ক্রয় করার জন্য আমার পিতা থেকে টাকা এনে দিতে চাপ প্রয়োগ করলে পিতার নিকট হতে বিগত ৬ মাস পূর্বে ১ লক্ষ ৭০ হাজার টাকা এনে দি। সে এটাতেও সন্তুুষ্ট না হয়ে আবার যৌতুক হিসেবে আরো টাকা নিয়ে দেওয়ার জন্য বিভিন্ন সময় আমাকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করেন। এর পরেও বিগত ৮ এপ্রিল ২০২৪ সালে সকাল ১০ ঘটিকার সময় মোটরসাইকেল কিনার জন্য টাকার প্রয়োজনের কথা বলে আমার পিতার কাছ থেকে ৪ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা আনিয়া দিতে চাব সৃষ্টি করে। ওই যৌতুকের টাকা এনে দিতে না পারায় আমার সাথে সংসার করবে না অন্য মহিলাকে বিয়ে করে যৌতুক নিয়ে সংসার করবে বলে আমাকে মারধর করে আমার স্বর্ণালঙ্কার কেড়ে নিয়ে ১০ মাস বয়সের শিশু সন্তানসহ আমার পিতার বাড়িতে জোরপূর্ব তাড়িয়ে দেয়। তাই আমি কোন উপায় না দেখে পিতার বাড়িতে শিশু সন্তান সহ বর্তমানে মানবেতর জীবন যাপন করছি । তার পরেও আমার অবুঝ শিশু সন্তানের দিকে তাকিয়ে সংসার ভঙ্গ না করার জন্য স্থানীয় বিভিন্ন জনপ্রতিনিধিদেরকে সামাজিকভাবে মীমাংসা করার জন্য বিচার প্রদান করি । সেখানও স্বামী কোন মেম্বার বা জনপ্রতিনিধি ও স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গের বিচার কে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে চলে আসে । তাই আমি মহান আদালতের শরণাপন্ন হয়েছি। আশা করছি মাননীয় আদালতের কাছে আমি সু বিচার পাব।
বাদির পিতা জানান, আমার জামায় আমার মেয়ের থেকে যৌতুক হিসাবে নগদ টাকা, মোটরসাইকেল, ফ্রিজ, এসি, সেগুন কাঠের ফার্নিচার, কাপড় কাচার ওয়াশ মেশিন সহ অনেক কিছু বার বার দাবি করে আসছে। যা আমার দেওয়া সম্ভব না হওয়ায় আমার মেয়েকে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেন। এ ছাড়া বাড়ির কাজ করবে বলে মৌখিক ভাবে অনেক টাকা ধার নিয়েছে যা কোন খাতায় উল্লেখ নাই । আমি তদন্ত করে বিচার দাবি করছি।
এ বিষয় হ্নীলা ইউনিয়ন পরিষদের ৮নং ওয়ার্ডের মেম্বার নুরুল হুদা জানান, বিবাদী দেলোয়ার কে বাদীর অভিযোগের প্রেক্ষিতে বার বার বিচারে আসার অনুরোধ জানালেও বিবাদী হাজির না হওয়ায় বাদীকে উচ্চ আদালতে যেতে আহব্বান পরামর্শদি।
তবে এ বিষয়ে বিবাদী জেল হাজতে থাকায় উক্ত বিষয়ে তাহার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
Leave a Reply