1. akfilmmultimedia@gmail.com : admin2020 :
  2. teknafchannel71@gmail.com : teknaf7120 :
বৃহস্পতিবার, ১৩ নভেম্বর ২০২৫, ১১:১৭ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
মৎসজীবি দল টেকনাফ পৌর কমিটি অনুমোদন: আহ্বায়ক- মান্নান, সদস্য সচিব- ইসমাইল চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ক ‘মৃত্যুর সড়ক’: ঝরছে প্রাণ, ফাইলবন্দী ৪/৬ লেনের পরিকল্পনা -তামিম আ.লীগের ঝটিকা মিছিলে গেলে ৫ হাজার টাকা, ব্যানার ধরলে ৮ হ্নীলা ইউনিয়নকে আধুনিক মডেল হিসেবে গড়ে তোলার প্রত্যয়: চেয়ারম্যান প্রার্থী আজিজুল বশির মোহাম্মদ কলাতলীর মিছিলের মামলায় আসামি হলেন কারারুদ্ধ এমপি পুত্র রনি : জড়িত না থাকলে পাবে অব্যাহতি- পুলিশ বাবা ইউনুস সিকদারকে নিয়ে ফারদিন সিকদারের আবেগঘন স্ট‍্যাটাস সৈকতের বালুতটে স্মৃতির আঁচড়ে বন্ধুত্বের রঙিন দিন ইউনুস হত্যায় জড়িতদের গ্রেফতারের দাবীতে উত্তাল টেকনাফ : থানা ঘেরাও সেন্টমার্টিন ভ্রমণের নতুন ওয়েবসাইট চালু টেকনাফ ৭১ পরিচয় দিয়ে বিভ্রান্ত সৃষ্টি

বাবা ইউনুস সিকদারকে নিয়ে ফারদিন সিকদারের আবেগঘন স্ট‍্যাটাস

  • আপডেট সময় : সোমবার, ১০ নভেম্বর, ২০২৫
  • ৭২ বার পড়া হয়েছে

“আমার শেষ কথা” —
মরহুম ইউনুস

আমি আর বেঁচে নেই। গভীর এক নিঃস্তব্ধ রাতে ওরা আমাকে মেরে ফেলেছে।
সবাইকে বলে দিও— আমি আর নেই।
ঘাতকেরা আমার বড় দেহটাকে পিঁপড়ে ভেবে, অকথ্য ভাষায় গালাগাল দিয়ে, কিল-ঘুষি আর নানা নিষ্ঠুর উপায়ে আমাকে তিলে তিলে হত্যা করেছে।
যাদের আমি একদিন আপন ভাবতাম—যারা ছিল আমার ঘরের মেহমান, রাজপথের সহযোদ্ধা, স্লোগানে যাদের কণ্ঠে আমার কণ্ঠ মিশে যেত—সেই তারাই আজ আমার প্রাণ কেড়ে নিয়েছে।
ওদের কি একবারও আমার জন্য মায়া হলো না?
আমি মানুষ হিসেবে হয়তো ভুল করেছি, কিন্তু সে ভুলের শাস্তি কি মৃত্যুই হতে পারে?
ওরা কি ভেবেছে, আমার এই মৃত্যু আমার মা-বাবা, ভাই-বোন, স্ত্রী-সন্তান, পাড়া-মহল্লা আর সহযোদ্ধাদের মধ্যে ক্রোধ, শোক আর অভিশাপ হয়ে ফিরে আসবে?
না, ওরা মানুষ নয়—মানুষরূপী হায়েনা।
ওদের চোখের হাসি হিংস্র হায়েনার মতো, ওদের বুকে করুণা নয়, কেবল হিংস্রতা।

আমার পরিবারকে বলো—
দেশ ও জাতির জন্য তোমরা শক্ত হও।
আমার ছোট সন্তান,
তুমি শেখো—দুটি আপেলের সাথে দুটি আপেল যোগ করলে চারটি হয়।
তুমি জেনে রেখো, সত্য ও জ্ঞানের উপরই জীবন গড়ে ওঠে।
আমার বড় ছেলে,
যদি কেউ দুই আর দুই যোগ করে পাঁচ বলে, তবে সেই ভুলেই একদিন জীবন হারিয়ে যায়।
শিখে নিও—তোমার বাবা কেমন ছিল।
আমার ভালো কাজের সার্টিফিকেট তুলে ধরার দায়িত্ব আজ তোমার হাতে,
আর আমার মন্দ কাজের গ্লানি ধুয়ে দিও নিজের সততা ও সাহসে।
আমার মেয়ে,
তোমার বোনের যত্ন নিও। তোমাদরর মা ফিরার সময় যা আমাকে মনে করিয়ে দিতো… সেতো আমি এখন গত।
যেমন আমি বাসায় ফিরলে সবসময় তোমাদের জন্য কিছু না কিছু নিয়ে যেতাম,
তেমনি তোমরাও একে অপরের জন্য ভালো কিছু নিয়ে আসবে—ভালোবাসা, সহানুভূতি, প্রার্থনা।

প্রিয়তমা,
যদিও আমি এই পৃথিবী ছেড়ে চলে যাচ্ছি ,
তবে মনে রেখো — আমার ভালোবাসা মৃত্যুরও ওপারে টিকে থাকবে।
তোমার হাসি, তোমার যত্ন, তোমার স্পর্শ —
সবকিছু আমার জীবনের আলো হয়ে থাকবে।
আমি থাকব তোমার প্রতিটি নিঃশ্বাসে,
প্রতিটি প্রার্থনায়, প্রতিটি স্মৃতিতে।
তুমি সুখে থেকো, সেটাই হবে আমার শান্তি।

ন্যায় ও সতর্কতার আহ্বান 💔
আমার মৃত্যু হয়েছে, কিন্তু আমার আকুতি আজো শোনার মতো। আমি চাই আমার মৃত্যুকে অবহেলা করা না হোক। যদি আমার হত্যার বিচার হয়, এটি শুধু আমার জন্য নয়—এটি হবে দেশের প্রতিটি নাগরিকের জন্য শিক্ষণীয় ঘটনা।
আমার হত্যাকারীরা যেন শাস্তির মুখোমুখি হয়, এবং ভবিষ্যতে কেউ এই ধরনের অপরাধ করতে সাহস না পায়। আমি চাই, দেশবাসী বুঝুক যে আইন ও ন্যায়ের পথে থাকা শুধু সঠিক কাজ নয়, এটি অপরাধীদের প্রতিরোধের শক্তিশালী মাধ্যম।
যাদের চোখে আমার মৃত্যু শুধুই সংখ্যা, তাদের জন্য বলি: ন্যায়প্রার্থী হয়ে উঠুন। অপরাধ কখনো সফল হয় না, বিচার শেষ পর্যন্ত আসে। আমার মৃত্যু যেন দেশের সকল নেতাকর্মীকে সতর্ক করে, যেন কেউ অন্যায় পথে পা না বাড়ায়।
আমার জীবন হয়তো শেষ, কিন্তু ন্যায়ের আলোকরশ্মি যেন অব্যাহত থাকে। বিচার হল শুধুমাত্র শাস্তির মাধ্যম, এটি শেখার সুযোগ, সতর্ক থাকার শিক্ষা।

দেশ ও জাতি ,
যদি কখনো আমার জন্য মানববন্ধন বা সংবাদ সম্মেলন করো,
দয়া করে কেউ মাইক হাতে কেঁদো না।
দৃপ্ত কণ্ঠে, সাহসের সাথে জাতিকে জানিয়ে দিও—
“পদ, পদবি আর পদকের মোহে নিত্য দুর্জনের পা চাটা মানুষগুলোই
ধীরে ধীরে নেমে যাচ্ছে লোভ আর অন্ধকারের নরকে।”
সোচ্চার হও।
আমার মতো কত মানুষ আজও প্রাণ হারাচ্ছে—অপহরণ, অজ্ঞাত খুন, গুম—
এগুলোর শেষ কোথায়?
অধিকার আদায়ের লড়াই থামিও না।
শিক্ষিত হয়েও বিবেক বিকৃত করো না।
অপহরণ, হত্যা, মুক্তিপণের নামে নিরপরাধদের মৃত্যু—এসব বন্ধ করতেই হবে।
প্রশাসনের ভাইদের বলো—
তোমরা চাইলে সব বদলে দিতে পারো।
সরকারের নির্দেশের অপেক্ষা করো না, তোমরাই হতে পারো আশার আলো।
অভিযান চালাও, পাহাড়ে ক্যাম্প গড়ো,
ড্রোন, হেলিকপ্টার টহলে পাহাড়কে মুক্ত করো—দেশকে বাঁচাও।
টেকনাফকে করো বিশ্বের দর্শনীয় স্থান,
পাহাড়, নদী, সাগরের সৌন্দর্যে সমৃদ্ধ করো এই দেশ।
জেলেদের নদীতে যেতে দাও, পর্যটকদের আনো,
দেশের আয় বাড়বে, মানুষ বাঁচবে।
যদি তা না করো—
তবে পাহাড়ের অন্ধকার তোমাদের কারো না কারো প্রাণও কেড়ে নেবে,
যেমন কেড়েছে আমারটা।
এই যাত্রা অনেক লম্বা।
জানি না এর শেষ কোথায়।
হয়তো ওপারেই আমার জন্য কেউ অপেক্ষা করছে।
সেই কারণেই তো তারা আমাকে ডেকে নিয়ে গিয়ে জীবন কেড়ে নিয়েছে।
আমি চলে যাচ্ছি।
আমাকে ক্ষমা করে দিও।
— মরহুম ইউনুস

নিউজটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published.

এ জাতীয় আরো খবর
error: Content is protected !!