মোঃ আশেক উল্লাহ ফারুকী::দেশের দক্ষিণ ও পূর্ব সীমান্তবর্তী বাংলাদেশ মিয়ানমার দু’দেশের সীমান্ত পর্যায়ে চোরাচালান রোধের উদ্দেশ্যে ১৯৯৫ সালে ৫ সেপ্টম্বর নৌ বন্দর তথা স্থল বন্দরটি স্থাপিত হয়েছিল। হাঁটি হাঁটি পা পা করে বর্তমানে এ বন্দরটি পূর্ণাঙ্গ বন্দরে পরিনত হল। এ বন্দর দিয়ে ১৫টি পণ্য আমদানি এবং ৫টি রপ্তানী পণ্য চলমান রয়েছে। আমদানী পণ্যের কাঠ ও মাছ চলমান শীর্ষে। স্থল বন্দরটি স্থাপিতের পর আমদানী নিষিদ্ধ এবং অন্যান্য পণ্য চোরচালান প্রায় হৃাস পেলে ও মাদক ও রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ কিন্তু বন্ধ হয়নি। বৈধ আমদানির পাশাপাশি সমান তালে চলছ, ইয়াবা বনাম এবং রোহিঙ্গা নামক আদম ব্যবসা। স্থল বন্দরে ব্যবসায়ীর নাম প্রকাশ না করার শর্তে আলোচিত কতিপয় আমদানি কারক বৈধ ব্যবসার আড়ালে মাদক ব্যবসার সাথে জড়িত থাকার জনশ্রুত রয়েছে। জনশ্রুত অনুযায়ী কতিপয় আমদানি কারক এবং সি.এন্ড.এফ প্রতিষ্ঠানের ব্যবসায়ী সেজে স্থল বন্দরে ব্যবসার নামে অল্প সময়ে কোটি কোটি টাকার মালিক বনে গেছে। ওরা বেনামে স্বনামে বিপুল অর্থের মালিক বনে গেলে ও দুর্নীতি দমন বিভাগ এ বিষয়ে বেখবর রয়েছেন।
গভীর সখ্যতা থাকার অভিযোগ উঠেছে পুরো সীমাান্ত এলাকা জোড়ে। অনুসন্ধান করতে গিয়ে এক সমীক্ষায় এ তথ্য ভেসে উঠেছে। তথ্য মতে ২০১৬ সালে বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর স্থল বন্দর আমদানির পট পরিবর্তন ঘটে। সীমান্ত বানিজ্য ধ্বস নামে এবং পুরো সীমান্ত জোড়ে ইয়াবা বনাম মাদকের স্বর্গরাজ্যে পরিনত হয়। মাদকের বদৌলতে বনে যায়, কালোটাকার পাহাড়। তখন থেকে মাদকের জোয়ারে টেকনাফ ভেসে গিয়েছিল। যার করণে স্থল বন্দর বৈধ ব্যবসা প্রতিষ্ঠানটি মাদক চোরাচালানের মূখ তুপড়ে পড়েছিল। মাদকের ভয়াবহতা রোধ ও দমনে ২০১৩ সালে প্রধান মন্ত্রী ও স্বরাস্ট্র মন্ত্রী মাদকের বিরোদ্ধে জিরোটলারেন্স নীতি অবলম্ব করেন এবং এ নিদের্শে বিভিন্ন আইন শৃংখলা বাহিনীর লোকেরা মাঠে নামে এবং মাদক বিরোধী অভিযান এবং বন্দোকযুদ্ধে মাদককারবারী নিহত হয়। এর পর ও মাদক রোধ করা যাচ্ছে না বিধায় ২০১৭ সালে ১৯ অক্টোবর টেকনাফ মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) প্রদীপ কুমার দাশ যোগদানের পর ঘোষিত মাদকের বিরোদ্ধে জিরোটলােেরন্স নীতির প্রতি অটল থেকে মাদকের বিরোদ্ধে অভিযান এবং বন্দোকযুদ্ধ অব্যাহত রাখেন। গত ২ বছরে ১২৬ মাদক কারবারী বন্দোকযুদ্ধে নিহত এবং ১২২ মাদক কারবারী আত্মসমর্পনের পর ৭০% শতাংশ মাদক ব্যবসা ও পাচার কমে যায়। এ দাবী টেকনাফ মডেল থানা ও সংশ্লিষ্ঠ কর্তৃপক্ষের। তবে মাদক ব্যবসা কমে গেলে ও পাচার কিন্তু থামেনী। থেমে থেমে চলে মাদক ও মানব পাচার। ২০১৭ সালে ২৫ আগষ্ঠ মিয়ানমার (রাখাইন) রাষ্ট্র থেকে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশের পর মাদক ও মানব পাচার ফের শুরু হয়। টেকনাফের উত্তরাংশ হ্নীলা ও হোয়াইক্যং ইউনিয়নের রোহিঙ্গা ক্যাম্পে স্থাপিতের পর থেকে আজ পর্য্যন্ত মাদক ও মানব পাচার অব্যাহত রয়েছে। আইন শৃংখলা বাহিনীর অভিযানে প্রতিনিয়তয় মাদক ও মানব পাচারের আটক হচ্ছে। মাদক চোরাচালান ও মানব পাচার হৃাস পাওয়ায় স্থল বন্দর সীমান্ত বানিজ্যের উপর বিরুপ প্রভাব পড়েছিল। ফলে স্থল বন্দরে আমদানি ও রপ্তানীতে ধ্বস নেমেছিল। আইন শৃংখলা বাহিনীর লোকেরা মাদক বিরোধী অভিযান এবং বন্দোকযুদ্ধ চলমান থাকায় ২০১৮ সাল থেকে স্থল বন্দরের আমদানি ও রপ্তনীতে ফিরে আসে হারানো নব-যৌবন । এধারা অব্যাহত এবং ব্যবসায়ীদের উপর প্রশাসনের হয়রানী বন্ধ থাকলে মাদক ব্যবসার পরিবর্তে সীমান্ত এলাকার জনগণ বৈধ ব্যবসার প্রতি মনোনিবেশ করবে। এ অভিমত সীমান্ত এলাকায় সচেতন ব্যবসায়ীদের।
Leave a Reply