মোঃ শেখ রাসেল ::কক্সবাজার সীমান্ত উপজেলা টেকনাফে নানা প্রতিকূলতার মধ্যেও সুনামের সঙ্গে শিক্ষার আলো ছড়িয়ে দিচ্ছে ঐতিহ্যবাহী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান মঈন উদ্দিন মেমোরিয়াল কলেজ। শিক্ষকদের দায়িত্বশীল পাঠদানের মাধ্যমেই প্রতিবছর প্রতিষ্ঠানটি ভালো ফলাফল অর্জন করে সর্ব মহলে প্রশংসা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে।
প্রতিষ্ঠানটিকে আরো বেশি গতিশীল ও শিক্ষার মান উন্নয়নে প্রথমবারের মত চালু করা হয়েছে সিসি ক্যামেরা। এতে একদিকে যেমন শিক্ষকরা আন্তরিকতার সঙ্গে পাঠদানে উৎসাহিত হবেন অন্যদিকে শিক্ষার্থীরাও পড়াশুনায় মনযোগী হবে।
সিসি ক্যামেরা প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে একাডেমিক নিরাপত্তা, শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখা, বহিরাগতদের অনুপ্রবেশ বন্ধসহ নানা অনিয়ম থেকে কোমলমতী শিক্ষার্থীরা রক্ষা পাবে বলে মনে করছেন প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ।
তিনি জানান, কক্সবাজার জেলা টেকনাফ উপজেলায় প্রথমবারের মত ডিজিটাল এ প্রযুক্তির মাধ্যমে শিক্ষার পরিবেশ আরো উন্নত হবে।একই সঙ্গে বর্তমান সরকারের ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তাবায়নে একধাপ এগিয়ে যাবে।
মঈন উদ্দিন মেমোরিয়াল কলেজ সূত্র জানায়, কক্সবাজার জেলা টেকনাফ উপজেলার হ্নীলা ইউনিয়নের ২০১৫ সালে প্রফেসর ডক্টর ফরিদ উদ্দিন আহমেদ-এর তত্ত্বাবধানে পিতার নামে মঈন উদ্দিন মেমোরিয়াল কলেজ প্রতিষ্ঠা করা হয়।
প্রতিষ্ঠানে বর্তমানে প্রায় ৮০০ জন শিক্ষার্থী অধ্যায়নরত রয়েছে। ২০১৬ সালের মাঝামাঝি সময়ে অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্বভার গ্রহণ করেন কলেজের প্রতিষ্ঠাকালীন অর্থনীতির প্রভাষক আ.ন.ম তৌহিদুল মাশেক তৌহিদ। তিনি দায়িত্বভার গ্রহণের পর থেকে শিক্ষা ও খেলাধূলায় এবং নীতি-নৈতিকতায় বেশ সফলতা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে কলেজটি।
শুধু পড়াশুনা নয়, এর পাশাপাশি প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা এগিয়ে রয়েছে খেলাধূলা ও সাংস্কৃতিক চর্চাতেও। চলতি শীতকালীন খেলাধূলায় ক্রিকেট, ভলিবল ও ব্যাডমিন্টন টুর্নামেন্টে অংশগ্রহণ করছে।
এলাকাবাসী জানিয়েছে, টেকনাফ হ্নীলা ইউনিয়নের মঈন উদ্দিন মেমোরিয়াল কলেজ প্রতিষ্ঠান থেকে পাশ করে অনেক শিক্ষার্থী এখন সুনামের সঙ্গে সরকারি ও বেসরকারি মানস্মমত বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পেয়েছে। অনেক শিক্ষার্থীরা শহরে গিয়ে পড়াশোনা করতে না পারলেও স্থানীয় কলেজে পড়াশোনা করতে পেরে খুবই আনন্দিত।
এলাকার শিক্ষার উন্নয়নে এ প্রতিষ্ঠানের ভূমিকা অপরিসীম। ভবিষ্যতেও এ সাফল্যের ধারা অব্যাহত থাকবে বলে আশাবাদী শিক্ষক, অভিভাবক ও এলাকার মানুষ। উক্ত প্রতিষ্ঠানের হিসাববিজ্ঞান প্রভাষক কায়সার রশিদ জানান, কক্সবাজার জেলার মধ্যে মঈন উদ্দিন মেমোরিয়াল কলেজ এমপিওভুক্ত না হলেও সরকারি ভাবে ফলাফলের দিক দিয়ে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে।
কক্সবাজার ও চট্টগ্রামের বিভিন্ন নামকরা সরকারি কলেজে ভর্তি যুদ্ধের পর অকৃতকার্য শিক্ষার্থীরা বেসরকারি পর্যায়ের এ প্রতিষ্ঠানে ভর্তি হয়ে থাকে। অপেক্ষাকৃত কম মেধাবী ওই সকল শিক্ষার্থীদের আমরা ভর্তি করে অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে পাঠদানের মাধ্যমে মেধাবী হিসেবে গড়ে তোলার চেষ্টা করি। এটা নিঃসন্দেহে একটি কঠিন কাজ।
এ ব্যাপারে মঈন উদ্দিন মেমোরিয়াল কলেজের অধ্যক্ষ (ভারপ্রাপ্ত) আ.ন.ম তৌহিদুল মাশেক তৌহিদ বলেন” কোমলমতী শিক্ষার্থীদের পড়ালেখায় আরো বেশি মনযোগী করতে কলেজে ইতোমধ্যে বিভিন্ন ধরণের পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে সিসি ক্যামেরা প্রযুক্তি অন্যতম। এছাড়াও শিক্ষার্থীদের পরিচয়পত্র, ইউনিফর্ম ও মেয়েদের পৃথক নামাজের ব্যবস্থা করা হয়েছে। সংযুক্ত করা হয়েছে ডিজিটাল কম্পিউটার ল্যাব ও ডিজিটাল ক্লাসরুম।
তিনি বলেন, সার্বিকভাবে সম্মানিত ট্রাস্টিবৃন্দের আন্তরিক প্রচেষ্টা ও দিকনির্দেশনা এবং প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকবৃন্দের যুগোপযোগি ও আন্তরিক পাঠদান এর কারণে শিক্ষার্থীরাও নিয়মিত প্রতিষ্ঠানে এসে মনযোগী হচ্ছেন। ভবিষ্যতেও প্রতিষ্ঠানের সাফল্যের এই ধারাবাহিকতাকে অব্যাহত রাখান জন্য সব্বোর্চ চেষ্টা করবো।
Leave a Reply