অনলাইন ডেস্ক
সাইরেন বাজিয়ে দ্রুত ছুটে যাচ্ছিল লাশবাহী এ্যম্বুলেন্সটি। সবার চোখ ফাঁকি দিলেও গোয়েন্দা পুলিশের কড়া নজর এড়াতে পারেনি। লিংকরোড় অতিক্রম করতেই ডিবির জালে আটকে যায় লাশের পরিবর্তে ইয়াবা পাচার করা এ্যম্বুলেন্সটি। পাচারকারীসহ ইয়াবার চালানটি জব্দ করে জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ।
ডিবি পুলিশের দেওয়া তথ্যমতে, লাশবাহী এ্যাম্বুলেন্স ব্যবহার করে কারবারিরা ইয়াবা পাচার করছিল। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে লিংকরোড় এলাকা থেকে চালানটি জব্দ করা হয়। এসময় পাচারে জড়িত তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
ডিবি পুলিশের পরিদর্শক মানস বড়ুয়া জানান, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল (চমেক) থেকে এক রোহিঙ্গার লাশ নিয়ে আসে এ্যাম্বুলেন্সটি। পরে লাশটি কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্পে পৌঁছে দেয়। ফেরার পথে উখিয়া টিভি স্টেশনের পাশের আক্তার কামাল নামে এক রোহিঙ্গার বাড়ি থেকে ইয়াবার চালানটি নিয়ে এ্যাম্বুলেন্সে করে চট্টগ্রামের উদ্দেশ্যে রওনা দেয় পাচারকারীরা। পরে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে চালানটি জব্দ করা হয়।
ডিবি সূত্রমতে, রবিবার (৫ এপ্রিল) বিকালে কক্সবাজার শহরের প্রবেশমুখ লিংক রোডস্থ কুদরত উল্লাহ সিকদারের অফিসের সামনে থেকে এসব ইয়াবা উদ্ধার করে কক্সবাজার জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ।
পাচারের সময় আটককৃতরা হলেন-টেকনাফের হোয়াইক্যং ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের উলুবনিয়া মধ্যমপাড়া (আ. ছালামের বাড়ী) বাসিন্দা ইউসুফ আলীর ছেলে মো. আব্দুস শুক্কুর প্রকাশ সাইফুল (২৬), ভোলা তজুমুদ্দিন কোরালমারা এলাকার খাসেরহাট বাংলাবাজারের পাশের লামচি (রারী বাড়ী) বাসিন্দা মমতাজ মিয়ার ছেলে মো. সোহাগ (২৩) ও চট্টগ্রামের সাতকানিয়া পূর্ব নলুয়া মরফলা মোনাবর বাড়ী, কাশেম মেম্বারের এলাকার বাসিন্দা মৃত মো. সফির ছেলে মো. ইলিয়াছ প্রকাশ ইমন (৩০)।
তাদের বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রন আইন ২০১৮ এর ৩৬ (১)এর সারণী ১০(গ)/৪১/২৬ ধারায় ৬ এপ্রিল কক্সবাজার সদর মডেল থানায় মামলা হয়েছে। মামলা দায়ের করেছেন ডিবি পুলিশের এসআই রাজীব কুমার সূত্রধর।
এ মামলায় পলাতক আসামী হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে উখিয়া কুতুপালং ক্যাম্প নং-৭, ব্লক-এ, টিভি টাওয়ার, এফসিএন নাম্বার-৩০০২৭১, আনছার মাঝির ব্লক এর বাসিন্দা রুস্তম আলীর ছেলে মো. কামাল প্রকাশ আক্তার কামাল (২৮), পালংখালী এলাকার (পালংখালী হাই স্কুলের পাশে) বাসিন্দা মো. আবুল বশর প্রকাশ বশর (৩২), থাইংখালী (ডিবি চেক পোষ্টের উপরে) এলাকার মো. মিজান (২৭) এবং কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্পের বাসিন্দা মাহমুদুর রহমান দাছরা (৪০)।
ডিবি পুলিশের পরিদর্শক মানস বড়ুয়া বলেন, কলাতলী ডলফিন মোড়ে অবস্থান করাকালীন গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানতে পারি যে, কতিপয় মাদক ব্যবসায়ী এ্যাম্বুলেন্স যোগে উখিয়া থেকে ইয়াবার চালানসহ চট্টগ্রামের দিকে যাচ্ছে।
ঝিলংজা ইউপিস্থ টেকনাফমুখি লিংক রোডে ইউপি সদস্য কুদরত উল্লাহ সিকদারের অফিসের সামনে অবস্থানকালীন সময়ে একটি সন্দেহজনক এ্যাম্বুলেন্স মাইক্রোবাস থামিয়ে গাড়ীর ভেতরে থাকা ৩ জনকে নামানো হয়।
এ সময় তাৎক্ষণিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা গাড়িতে ইয়াবা আছে বলে স্বীকার করলে এ্যম্বুলেন্স এর ভেতরে বিশেষ কায়দায় লুকানো অবস্থা থেকে ২০ হাজার ইয়াবা উদ্ধার করা হয়।
এ্যাম্বুলেন্সটির রেজিঃ নং- ফেনী-ছ-৭১-০০১৩, (যার গায়ে আঞ্জুমান এ্যাম্বুলেন্স সার্ভিস লেখা আছে)। এ্যাম্বুলেন্সটিও জব্ধ করা হয়েছে।
পরে জিজ্ঞাসাবাদে তারা ইয়াবাগুলো ক্রয় করে অধিক লাভে বিক্রয়ের জন্য চট্টগ্রাম শহরের দিকে নিয়ে যাচ্ছিল বলে স্বীকার করে। জিজ্ঞাসাবাদে অপর সহযোগিদের নামও প্রকাশ করেছে।
প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে চক্রটি দীর্ঘদিন মাদক কারবারি করে আসছিলে বলে জানিয়েছেন ডিবি পুলিশের এ পরিদর্শক
Leave a Reply