• ফারুকুর রাহমান, টেকনাফ।
কক্সবাজারের সীমান্ত উপজেলা টেকনাফে প্রায় সাড়ে ৩ লক্ষ মানুষের বসবাস আবার সকল মানুষের সেবা নেওয়ার একমাত্র প্রতিষ্ঠান টেকনাফ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স বর্তমানে এই হাসপাতালটি ভুগছে জনবল সংকটে বন্ধের পথে হাসপাতালটি ফলে রোগীদের ভোগান্তি চরমে।
এই হাসপাতালে দূর দূরান্ত থেকে সেবা নিতে আসে প্রতিদিন ২-৩ শত মানুষ তাদের মধ্যে রয়েছে টেকনাফ পৌরসভা, সেন্টমার্টিন, বাহারছড়া, সাবরাং, হ্নীলা, হোয়াইক্যং ইউনিয়ন সহ নানান এলাকার মানুষ। এমনকি এতগুলো মানুষের মধ্যে প্রতিদিন পুরুষ ও নারী ওয়ার্ড মিলে ভর্তি তাকে ৩০ থেকে ৪০ জনের ওপরে নারী পুরুষ। কিন্তু, বর্তমানে তার মধ্যে পুরুষ ও নারী দুইটি ওয়ার্ড বন্ধ রয়েছে।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, এত মানুষদের সেবা দিতে হিমশিম খাচ্ছে ডাক্তার, নার্স ও কর্মচারীরা। এই হাসপাতালের ডাক্তারদের তালিকায় ১২ জন থাকার কথা থাকলেও ডাক্তার রয়েছে মাত্র ৪ জন, ৩ জন নার্স, ৩ জন কর্মচারী। বর্তমানে হাসপাতালে সিজারিয়ান সেকশন বন্ধ রয়েছে, দুইটি অ্যাম্বুলেন্স থাকলেও চালক নেই। তাঁর পাশাপাশি নেই পরীক্ষা নিরীক্ষার করে মেশিনের টেকনিশিয়ান।
তবে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে বোঝা গেছে, আগে বিভিন্ন এনজিও সংস্থার সহযোগিতা ছিল, বর্তমানে কোনো এনজিও সংস্থার মাধ্যমে কোন সহযোগিতা না পাওয়ায় হাসপাতালটির দিন দিন বেহাল দশায় ভুগছে।
হাসপাতালে দেখা পাওয়া রফিকুল ইসলাম নামক একজন রোগীর কাছ থেকে চিকিৎসা সেবার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি জানান, আমরা প্রায় সময় এই হাসপাতালে আসি গত কয়েক মাস থেকে আগের মত সেবা পাচ্ছে না রোগীরা তবে সেবা না পাওয়াতে আমরা ডাক্তারদের দোষ দেব না। মূলত সমস্যাটা হচ্ছে জনবল সংকট ডাক্তার কম, মানুষ বেশি, যার কারণে সেবা নিতে দীর্ঘক্ষণ লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে হয় রোগীদের। ফলে আমরা আরো বেশি অসুস্থতা ভোগ করছি।
তিনি আরও বলেন, যদি এভাবে চলতে তাকে তাহলে এই সীমান্ত জনপদের লাখ লাখ মানুষ কষ্টে দিনাতিপাত করবে। আমরা ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করব যত দ্রুত সম্ভব হাসপাতালের জনবল নিয়োগ দিয়ে হাসপাতালটি যেন সুস্থ করে তুলে।
সর্বশেষ টেকনাফ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কর্তব্যরত এক চিকিৎসক জানিয়েছেন, প্রতিদিন ২-৩ শতাধিক রোগী এই হাসপাতালে সেবা নিতে আসেন, তাঁর মধ্যে আমাদের ডাক্তার রয়েছে ৪ জন ২ জন রয়েছে ইমার্জেন্সিতে ২ জন চেম্বারে। ৪ জন চিকিৎসক নিয়ে এত মানুষদের সেবা দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে আমাদের। এমনকি দীর্ঘক্ষণ লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে থাকতে বিরক্তবোধ করছে দূরদূরান্ত থেকে সেবা নিতে আসা রোগীরা।
এদিকে জনবল সংকট ও রোগিদের পর্যাপ্ত সেবা না পাওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে টেকনাফ উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. প্রণয় রুদ্র জানান, গত কয়েক মাস ধরে আমাদের জনবল সংকট ডাক্তার, নার্স, কর্মচারী, অ্যাম্বুলেন্স ড্রাইভার, টেকনিশিয়ান সব কিছুর সংকটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছি। এই সংকটের প্রধান কারণ হচ্ছে আগে বিভিন্ন এনজিও সংস্থার সহযোগিতা ছিল বর্তমানে এখন এনজিও সংস্থার প্রজেক্ট না থাকায় হাসপাতালটি কোন রকম সহযোগিতা পাচ্ছেন না।
তিনি আরও বলেন, আমি আমার সাধ্যমতো চেষ্টা করে যাচ্ছি যেন আমরা রোগীদের পর্যাপ্ত সেবা প্রদান করতে পারি। পাশাপাশি আমার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের অবগত করেছি অতিদ্রুত তাঁরা বিষয়টি বিবেচনা করে কোন একটি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে বলে আশা করছি।
Leave a Reply