নিজস্ব প্রতিবেদক,
পুরো দেশ জুড়ে আলোচিত মেজর সিনহা হত্যার ঘটনায় কক্সবাজার আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বহিনীর ব্যস্ততার সুযোগে জেলার মাদকের গডফাদাররা আবারো নানা তৎপরতা শুরু করেছে। দীর্ঘ একবছরে, বারো মাসে যাদের কে এলাকায় দেখা যায়নি তাদের কে এখন প্রকাশ্যে লোকালয়ে দেখা যাচ্ছে।
বিভিন্ন মামলার পলাতক,ফেরারী আসামী,তালিকাভুক্ত ইয়াবা ব্যবসায়ী সকলেই যেন স্বস্থির বাতাশে ঘুরছে। প্রদীপ নিবে যাওয়ায় তাদের আতংক নাকি কেটে গেছে।
বিজ্ঞ মহলের মতে, মাদক ব্যবসায়ীরা টাকার গরমে সভা সমাবেশে,হাঁটবাজারে আধিপত্য ও চরম প্রভাব বিস্তার করবে। যেহেতু তারা আইনের প্রতি তোয়াক্কা করেনা। তাদের মতে মাদক ব্যবসায়ীরা দেশে আবারো সক্রিয় হলে এলাকায় আইনশৃংখলার চরম অবনতি হবে। টেকনাফের ইজিবাইক চালক আমির হামজা প্রতিবেদক কে জানান,ইয়াবা ব্যবসায়ীরা এলাকায় না থাকলে মাছ মাংসের দাম কমে যায়। এখন তারা এলাকায় ফিরে আসায় ইলিশের দাম বেড়ে গেছে। জেলার সীমান্ত উপজেলা উখিয়া-টেকনাফের তালিকাভুক্ত ইয়াবা কারবারীরা প্রকাশ্যে ঘুরা ফেরা করায় সাধারণ জনতার মাঝে উদ্বেগ উৎকন্ঠা দেখা দিয়েছে।
টেকনাফ,সদরইউনিয়ন,পৌরসভা,সাবরাং.হ্নীলা,হোয়াইক্যং,অপরদিকে উখিয়া উপজেলার,পালংখালী,থাইংখালী,বালুখালী,কুতুফালং এলাকার চিহ্নত ইয়াবা কারবারীরা মাঠে ময়দানে চষে বেড়াচ্ছে বলে এলাকা সূত্রে খবর এসেছে। সূত্রে প্রকাশ-টেকনাফের হ্নীলা ইউপির লেদার আলীখালী এলাকার বাসিন্দা কুখ্যাত সন্ত্রাসী ও ইয়াবা গডফাদার জমিল আহমদ প্রকাশ্যে ঘুরা ফেরা করছে। সে লেদার গবী সোলতানের পুত্র। তার বিরুদ্ধে পত্যক্ষভাবে এলাকার কেউ মুখ খুলতে রাজি নন। এলাকা সূত্রে জানা যায় যে,ইয়াবা কারবারীদের মদদ দাতা অস্ত্রদারী সন্ত্রাস জমিলের অনেক অভিযোগ আছে। তবে ভয়ে কেউ মুখ খুলার সাহস পাচ্ছেনা কেউ। ইয়াবা
ব্যবসায়ী ও অস্ত্রদারি সন্ত্রাস জমিল,রোহিঙ্গা ক্যাম্পের একলোক কে এলোপাথাড়ি কুপিয়ে উল্লাস করেছে। জমিলের অস্ত্রের ভয়ে স্থানীয় গণ্যমান্ ব্যক্তিদের বা প্রশাসনকেও অভিযোগ করেন নি, নির্যাতিত ঐ ব্যক্তি। এই ইয়াবা ব্যবসায়ী জমিল ৩০-৪০ সদস্যের গ্যাং তৈরী করে লেদা,আলীখালীতে রাজার হালে চলাচল করছে। জমিল আহমদের ভয়ে পুরো এলাকার মানুষ আতঙ্কে বসবাস করে। সে যতদিন গ্রেফতার না হবে, ততদিন এলাকার লোকজন স্বাধীন ভাবে চলাচল করতে পারবে না বলে স্থানীয় লোকজন সাংবাদিকদের জানান। অভিযোগ রয়েছে জমিল লেদা,শালবাগান,মোচনী রোহিঙ্গা ক্যাম্পের সকল ইয়াবা ব্যবসায়ীদের নিয়ন্ত্রণ করে। ইয়াবা বিক্রি করে কোটিপতি বনে যাওয়া লেদা আলী খালী এলাকার আরেক ইয়াবার গডফাদারের নাম মোঃ ইসমাঈল প্রকাশ মেম্বার। সে আলী খালীর ঠান্ডা মিয়ার পুত্র। লেদা আলী খালী এলাকায় সর্বদা তাকে সক্রিয় দেখা যাচ্ছে। অপরদিকে মাদক ব্যবসার সাথে সক্রিয় দেখা যাচ্ছে লেদা এলাকার হোছন আহমদের পুত্র রবি আলম,অলি আহমেদ পুত্র আব্দুস সমদ, মোহাব্ব্যতের পুত্র শহীদ উল্লাহ আবুল বশারের পুত্র আব্দুর রহমান, মীর কাসেমের পুত্র জাহাঙ্গীর। তারা হ্নীলা ইউনিয়নের লেদা ষ্টেশনের, পূর্ব ও পশ্চিম দিকের স্থায়ী অধিবাসী। তারা মাদক ব্যবসা আড়াল করতে সু কৌশলে বর্তমানে অনান্য ব্যবসা বাণিজ্য এবং এনজিওর চাকুরীর বাহানা দিলে ও পর্দার অন্তরালে চালিয়ে যাচ্ছে মাদকের রমরমা বানিজ্য। ওদের সাথে পাহাড়ে অবস্থানরত বিভিন্ন রোহিঙ্গা শীর্ষ ডাকাতের যোগসাজোশ,ইয়াবা পাচার সহ অহরহ অভিযোগ রয়েছে বলে জানান এলাকাবাসী। এছাড়া হ্নীলা ফুলের ডেইল,পানখালী,রঙ্গিখালীা ইয়াবা ব্যবসায়ী নতুন করে মাথাছাড়া দিয়ে উঠেছে। অপর দিকে উখিয়া উপজেলার
ফালংখলী,থাইংখালী,বালুখালী,কুতুপালং এর ইয়াবা সিন্ডিকেট ও সক্রিয় হয়েছে বলে উখিয়ার কর্মরত সাংবাদিকরা জানান। তাদের মতে থাইংখালীর ইয়াবার ডিপু
খ্যাত রহমতের বিলের মৃত্য আব্দুচছালামের পুত্র আব্দুররহীম,আদুল গফুরের পুত্র জামাল উদ্দিন,বৈদ্য জাফরের পুত্র রহিম,দক্ষিন রহমতের বিলের কালাপুতু, আনোয়ার আলীর পুত্র মন্জুর, ফালংখালী বটতলীর রাসেল, ফালংখালী ২নং ওয়াডের বক্তার মেম্বার,৩নং ওয়ার্ডের খোকন,করিম সহ অনেক ইয়াবা গডফাদার সক্রিয় হয়ে উঠেছে। ইয়াবার বদৌলতে তারা প্রচুর সম্পদ,জায়গা জমি ধন সম্পদের মালিক বনেছে। তাদের বর্মাইয়্যা ইয়াবা গডফাদার নাজমুল হক,মংডুর সোহেল বর্তমানে থাংখালীতে ইয়াবা ব্যবসায়ীদরে সাথে গোপন বৈঠক করেছে বলে ও জানা গেছে। সোহেল ও নাজমুল ১৯ নং ক্যাম্পে বসবাস করলেও আড্ডা ও বসবাস করে বেশির ভাগ থাইংখালীতে। এদিকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নানা তৎপরতা সত্বেও সীমান্তে ইয়াবা পাচার কোন ভাবেই থেমে নেই। প্রতি মাসে সীমান্ত দিয়ে হাজার কোটি টাকা মূল্যের ইয়াবার চালান প্রবেশ করছে বাংলাদেশে। চলে যাচ্ছে দেশের নানা প্রান্তে। সেইসঙ্গে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীও বসে নেই। তাদের হাতে ধরা পড়ছে একের পর এক ইয়াবার চালান। গত জুলাই মাসে কক্সবাজারে বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে ২০ লাখ ৮৫ হাজার ১০৬ পিস ইয়াবা উদ্ধার করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। যার আনুমানিক বাজার মূল্য ৬২ কোটি ৫৫ লাখ ৩১ হাজার ৮০০ টাকা। এসময় ইয়াবা পাচারের অভিযোগে ২৪৭ জনকে আটক করা হয়েছে। আটককৃতদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে ১৫৫টি। পুলিশ,বিজিবি, র্যাব ও মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর এই তথ্য নিশ্চিত করেছে। এখন কেউ প্রকাশ্যে ইয়াবা বিক্রি করছে না, করছে গোপনে। আর বিক্রেতারা বেশিরভাগ নতুন নতুন মুখ। এদের কে চিহ্নি করে মাদক বিরোধী অভিযান পরিচালনা করলে নিঃসন্দেহে আইনশৃংখলা বাহিনীর জালে আটকা পড়বে। অপরদিকে আড়ালে থাকা ইয়াবার মূল ব্যবসায়ীদের আইনের আওতায় আনা জরুরী বলে মন্তব্য করেছেন স্থানিয় স্বচেতন মহল।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে সদ্য নিযুক্ত টেকনাফ মডেল থানা ওসি মোঃ আবুল ফয়সল জানান প্রকৃত মাদক ও সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে ঊর্ধ্বতন মহলের নির্দেশে আমাদের অভিযান অব্যাহত থাকবে। তবে নিরীহ কাউকে হয়রানি করা হবে না। সঠিক তদন্তের মাধ্যমে দোষীদের আইনের আওতায় আনা হবে।
সূত্র:-দৈনিক কক্সবাজার ৭১
Leave a Reply